আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাযহাব অনুসরণ করা ফরয? (দলীল ভিত্তিক ধারাবাহিক --- ৪র্থ পর্ব)

জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক

শরীয়ত অনুযায়ী মাযহাব পালন করা ফরয কিনা তা এক লাইনে লেখা সম্ভব নয়। দলীল সহ বিস্তারিত লিখা হলে সহজে ‍বুঝা যাবে। তাই অনেকগুলো পর্ব হবে। সবগুলো পর্ব পড়ে মন্তব্য করবেন আশা করি। ৩য় পর্বের পর.................... তৃতীয়ত: উলিল আমরগণের ইতায়াতের কথা বলা হয়েছে।

এটাই মূলতঃ পরবর্তীকালের উম্মতের জন্য নির্ধারিত বিধান। এ প্রসঙ্গে কুরআন শরীফের উল্লিখিত আয়াত শরীফসহ আরো বহু আয়াত শরীফ ইরশাদ হয়েছে। যেমন কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা ঈমান আন যেরূপ হযরত ছাহাবায়ে কিরামগণ ঈমান এনেছেন। ” (সূরা বাক্বারা-১৩) “ঈমান ও আমলের সর্বপ্রথম স্থান অধিকারী মুহাজির ও আনসার ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের প্রতি আল্লাহ্ পাক সন্তুষ্ট এবং উনারাও আল্লাহ্ পাক-এর প্রতি সন্তুষ্ট। এবং যারা উনাদেরকে অর্থাৎ ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে উত্তমভাবে ইত্তিবা বা অনুসরণ করবে আল্লাহ পাক উনাদের প্রতিও সন্তুষ্ট এবং উনারও আল্লাহ পাক-এর প্রতি সন্তুষ্ট।

আল্লাহ পাক এমন জান্নাত নির্ধারণ করে রেখেছেন যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে। এটা আল্লাহ্ পাক উনার পক্ষ হতে উনাদের প্রতি মহান প্রতিদান। ” (সূরা তওবা-১০০) “যে ব্যক্তি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ করে, তার কাছে সঠিক পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং মু’মিনগণের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐদিকেই ফেরাব যে দিক সে রুজু হয় এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো। আর জাহান্নাম নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। ” (সূরা নিসা-১১৫) এখানে “মু’মিনগণের পথ” বলতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের পথ অতঃপর তাবিয়ীন, তাবি তাবিয়ীন ও মুজতাহিদ ইমাম ও আওলিয়ায়ে কিরামগণের পথকে বুঝানো হয়েছে।

মহান আল্লাহ্ পাক সূরা ফাতিহার মধ্যে সঠিক পথের দিক নির্দেশনা দান করে সে পথে চলার জন্য দু’য়া শিক্ষা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, “আয় বারে ইলাহী! আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করুন। উনাদের পথ যাদেরকে আপনি নিয়ামত দান করেছেন। ” (সূরা ফাতিহা-৫,৬) কাদেরকে নিয়ামত দেয়া হয়েছে সে প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ্ পাক নিয়ামত দান করেছেন,- নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও ছলিহগণকে এবং উনারাই উত্তম বন্ধু বা সঙ্গী। ” (সূরা নিসা-৬৯) আল্লাহ্ পাক সূরা ফাতিহার মধ্যে নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও ছালিহগণের পথ তলব করতে বলেছেন।

অর্থাৎ এখানে দেখা যাচ্ছে, পথ হচ্ছে দু’টি। প্রথমত: নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথ। দ্বিতীয়ত: ছিদ্দীক, শহীদ ও ছালিহগণের পথ তথা উলিল আমরগণের পথ। উল্লেখ্য, উলিল আমরগণের মধ্যে প্রথমস্তরের উলিল আমর হচ্ছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ। উনারা প্রত্যেকেই উম্মাহর জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয় ও পথপ্রদর্শক ছিলেন।

আল্লাহ্ পাক আরো ইরশাদ করেন, “যদি তোমরা না জান তাহলে আহলে যিকিরগণের নিকট জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও। ” (সূরা আম্বিয়া-৭) অত্র আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, “আমরা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণই আহলে যিকিরের অন্তর্ভূক্ত। ” (তাফসীরে কুরতুবী) অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক নিজেই উম্মাহর জন্য কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ বুঝতে ও আমল করতে উলিল আমরগণের অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং মুজতাহিদ ইমাম ও আওলিয়া কিরামগণের ইতায়াত ও পায়রবি করাকে ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত করেছেন। বিশেষ করে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যামানা অতীত হওয়ার পর উম্মাহর জন্য মাযহাব চতুষ্ঠয়ের ইমামগণের অনুসরণ ব্যতীত কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ মুতাবিক আমল করা সম্ভব নয়। কারণ, এই চার ইমাম ব্যতীত আর কেউই শরীয়তের যাবতীয় মাসয়ালা-মাসায়িল লিপিবদ্ধ করেননি।

কাজেই, শরীয়তের প্রতি আমল করতে গেলে এই চার ইমামের একজনকে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এটা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভূক্ত। যদি কোন মাযহাব মান্য করা না হয় তাহলে শরীয়ত থেকে খারিজ হয়ে যাবে। ৩য় পর্ব। ২য় পর্ব।

১ম পর্ব। ---------------------------------------(ইনশাআল্লাহ চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.