আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংবিধানের ধর্মীয়করণ:

চারপাশে আত্মমুগ্ধ আদিমতাবোধ, আর গ্রন্থিবদ্ধ চিন্তা; সেখান থেকে মুক্তির পথ খুঁজি...

পচাত্তর পরবর্তী সময় থেকে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মীয় মৌলবাদের প্রভাব পড়ে। সংবিধান এবং ধর্মীয় রাজনীতি উগ্রভাবে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। সংবিধানে সংযোজিত হয় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানের রাহিম’। সে সময় থেকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার দর্শন থেকে ছিটকে পড়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতি। ক্ষমতাসীন সৈরশাসকের পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

ধর্মের নামে সা¤প্রদায়িক বিভক্তি সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে জিম্মি করে ফেলে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সময়ে ধর্মীয়করণের কুফল আমরা ভোগ করছি মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠির উত্থানে। সংবিধানে বিসমিল্লাহ রাখায় কি অন্যায় হয়েছে? প্রশ্ন দেখা দেয় কারো কারো মনে। প্রশ্নটি অতি অবশ্যই মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গির। প্রত্যেক ধর্মপরায়ণ মানুষ তাঁর নিজ ধর্মের মূল বিষয়গুলো বিশ্বাস করবেন এবং মেনে চলবেন এতে কোন দোষ নেই; যদি না তা তিনি অন্যের ক্ষতির কারণ হন।

মৌলবাদীরা স¤প্রদায় ভেদে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের অনুরূপ প্রতিদ্বন্দ্বি। তারা নিজেরা যা করে ন্যয্য বলে দাবী করে আর একই কাজ বা একই ধরনের কাজের জন্য অন্য স¤প্রদায়কে খারাপ বলে দোষী সাব্যস্ত করে থাকে। তারা যখন নিজ দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করে তখন তাকে ন্যায্য করার জন্য নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধূয়া তোলে, অপর দিকে অন্য দেশে যেখানে নিজ স¤প্রদায়ের লোক সংখ্যালঘু; সেখানকার মৌলবাদী সংখ্যা গুরুদের প্রতি নিন্দা জানায়। বিষয়টি একটি সহজ কথায় ব্যাখ্যা করা যায়। যেমন বাংলাদেশী মুসলিম মৌলবাদীর সাথে যদি ভারতীয় হিন্দু মৌলবাদীদের সাদৃশ্য তুলে ধরা যায় তবে বিষয়টা কিছুটা পরিষ্কার হবে।

ধরা যাক ভারতীয় হিন্দু মৌলবাদী গোষ্ঠী রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সংবিধানে সংযোজন করলো যে, রাষ্ট্রের সব কিছু শুরু হবে ‘ওঁ নমঃ শিবায়’ কথাটি বলার মধ্যদিয়ে। অর্থাৎ শিবকে নমষ্কার জানিয়ে সকল রাষ্ট্রিয় কাজ শুরু করতে হবে। তাহলে কি হবে? ব্যপার তো এই যে সংখ্যা গরিষ্ঠ হিন্দুদের দেশে শিব পূজা করে রাষ্ট্রিয় কার্যাদি শুরু করা তো তাদের ন্যায্য, যদি বাংলাদেশে বিসমিল্লাহ ন্যায্য হয়। এই ক্ষেত্রে একজন ভরতীয় মুসলিমের ধর্মীয় অধিকার খর্ব হচ্ছে কতটুকু? পুরোপুরি নয় কি? দেখা যায় যে এক্ষেত্রে একজন মুসলিম, ১. রাষ্ট্রীয়ভবে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হবেন, ২. অন্যধর্মের চাপিয়ে দেয়া বিধিনিষেধে নির্যাতিত হবেন, ৩. নিজ ধর্ম পালনে বাধাগ্রস্থ্য হবেন, এবং ৪. হিন্দু দেবতা শিবকে নমষ্কার করার মাধ্যমে ইসলামী ধর্মমত অনুসারে ‘শিরক’ করবেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.