আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সফরের ফলাফলে সন্তুষ্ট তারানকো

জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বলেছেন, জাতিসংঘের প্রধান অগ্রাধিকার অহেতুক হত্যা ও সহিংসতা বন্ধ করা এবং উত্তেজনা কমিয়ে সংলাপে বসার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানো। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে খোলামনেই বলতে চাই, এ সফরের ফলাফল নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমার উপস্থিতিতে দুই দলের নেতারা দুই দফা আলোচনায় বসেছেন। তাঁরা তৃতীয় দফা আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন। সংলাপের ব্যাপারে আমার বক্তব্য ছিল উত্তেজনা কমানো, সহায়ক রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি ও দুই পক্ষের উদ্বেগের বিষয়গুলো দূর করা।


ছয় দিনের ঢাকা সফর শেষে আজ বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতিসংঘের মহাসচিবের এই দূত রাতেই নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। সংকট সমাধানে আশাবাদ ব্যক্ত করে ঢাকা সফরের ইতি টানেন তারানকো। তাঁর উপস্থিতিতে প্রধান দুই দলের দুদফা বৈঠক ছাড়া সমাধানের কার্যকর কোনো উপায় বের হওয়ার খবর মেলেনি।
তবে রাজনৈতিক সংকট কাটাতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের আলোচনার টেবিলে যে বসাতে পেরেছেন, এটাকে সাফল্য হিসেবে দাবি করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিবের এই দূত।

তিনি মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে সংকট কাটাতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্বটা এখন দুদলের। বাংলাদেশের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে, এমন একটা সমাধানের উপায় এ দেশের রাজনীতিবিদদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে।

একতরফা নির্বাচনের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারানকো বলেন, চলমান পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমেই দুই পক্ষকে বিষয়গুলোর সুরাহা করতে হবে।

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রেখে তাঁর ক্ষমতা কাটছাঁটের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, সেটি এখানে আমি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরতে চাই না।

বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে তাঁরা (দুই পক্ষ) একমত হয়েছেন। ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই অনেক বিষয় তাঁরা আলোচনায় তুলেছেন। ’

নির্বাচনে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ কিংবা তত্ত্বাবধানের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে কি না, এ প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব। তবে তিনি বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কিংবা নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের যুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সংলাপ ভেস্তে গেলে তার ফল কী হবে, এ প্রশ্নের জবাবে তারানকো বলেন, ‘সংলাপ ব্যর্থ হলে এর ফল কী হতে পারে এখানে উপস্থিত সবারই তা জানা আছে।

এ প্রশ্নের উত্তর আমি দেব না। ’

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তৃতা পড়ে শোনান তারানকো। তাতে বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা বাড়ছে এবং বাংলাদেশের কষ্টার্জিত আর্থসামাজিক অগ্রগতিকে চরম ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। যাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি, তাঁদের সবার কাছেই ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের গভীর উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়েছি।

তাঁদের প্রত্যেককেই সংযত হওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার সমুন্নত রাখা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অনুরোধ করেছি। জাতিসংঘ অবাধ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের পক্ষে।

বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে সব পক্ষকে সংলাপে উত্সাহ জোগাতে ৬ ডিসেম্বর ঢাকায় আসেন তারানকো। জাতিসংঘের মহাসচিবের দূত হিসেবে তারানকো গত এক বছরে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ঢাকা সফর করেন। তিনি এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিব, নাগরিক সমাজ, ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিকদের সঙ্গে ২৫টি বৈঠকে অংশ নেন।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.