আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভবিষ্যতের 'ত্যাঁদড়দের' আরাম করে কাঁদার জায়গাও থাকবেনা!

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

একসময় রাজা, সামন্ত ইত্যাদি নামধারী 'দুনিয়াবী' প্রভুরা রাজ্য শাসন করত। তাদের ছিল বিরাট দরবার, অন্দরমহল, রংমহল, হাতীশালা, দুর্গ, সৈন্য, অস্ত্র। মজার ব্যাপার হল তাদের পেইড কবি, স্তাবক, শিল্পী, চিত্রকর, বাদক, গায়ক, সুরকার এসবও ছিল। আর বিচার আচার রাজা নিজেই করতেন। রাজ্যের বাকী সব ছিল প্রজা।

তারা ঘাড় কুর্ণিশ করে রাজাকে নম: নম: বলে মুল্যবান ইহকাল পার করে দিতেন। দু' একটা ত্যাঁদড় যে থাকত না তা না! তবে হাতের কাছে পেলেই রাজারা এসব বেত্তমিজদের 'রাস্ট্রদ্রোহে'র খায়েস মিটিয়ে দিতেন। একটাইতো মুন্ডু সবার! কালের বিবর্তনে গণতান্ত্রিক নামীয় একটা রাস্ট্রব্যবস্থা ইউরোপের দিক থেকে এদিকে আসে। যতদুর জানি পুরনো রাজা সিস্টেমের সাথে এটার প্রধান পার্থক্য হল- বিচার ব্যবস্থায়। ইউরোপের অন্যন্য এসব গণতান্ত্রিক দেশে প্রধানমন্ত্রিরাও সময় সময় দৌড়ের উপর থাকেন।

লেটেস্ট উদাহরন- ইটালী। আরেকটি পার্থক্য- নানান মত ও পথের রাশিরাশি টিভি, বেতার, পত্রিকা, ব্লগের নির্ভীক গালাগালি। সরকার পান থেকে চুন খসালেই মিডিয়া জেঁকে ধরে। আরেকটি পার্থক্য হল- হাঁচাই স্বাধীন, সক্ষম, সাহসী নির্বাচন (ও অন্যান্য) কমিশন। ভোটদানে নিস্পৃহ ইউরোপীয়দের প্রদত্ত মতামত অতি নিঁখুত ও নিস্কলন্কভাবে ট্যাবুলেট ও পাবলিশ করা হয়।

অন্যান্য এসব গণতান্ত্রিক দেশের এমনতর সিস্টেমের সবচেয়ে বড় সুফল হল- আপনি অতি দুর্বল ক্ষমতার নীরব একজন সাধারন নাগরিক হোন বা সরকারের বিরুদ্ধে সদা-সরব বিরোধী হন, সরকার আপনারে বেশী কিছু করতে পারবে না। করলে ঐসমস্ত বটগাছরূপী বিচারবিভাগ, গণমাধ্যম ক্ষেত্রবিশেষে কমিশনসমুহ আগাইয়া আসবে। ফলে আপনি অন্তত: আরামে কাঁদতে পারবেন! পয়লা ১৯৪৭, তারপর ১৯৭২, পরে ১৯৯১ সালে সেধরনের ১টি গণতান্ত্রিক দেশ হৈবে এমন আশা নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করলেও তাতে গুড়ে বালি। বরঞ্চ ধীরে ধীরে তা পূবেকার সামন্তপ্রভুদের রাজ্যশাসনের দিকেই বাঁক নেয়। পেইড কবি, ছড়াকার, ব্লগার, টক-শো বক্তা, চিত্রকর, সাংবাদিক, সম্পাদক, গায়ক, বাদক, তবলচি, সৈন্য, কুলি, মুচি, ভিসি, ডোম, কসাই, বৈদ্যে এখন দেশ সয়লাব।

একজন নির্বাচন কমিশনারতো রীতিমত চেয়ার ছেঁড়ে উঠে দাড়িয়ে প্রমান করেছেন যে তার মেরুদন্ড কত সোজা! এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেত্তমিজ প্রজাদের বিচারের হাঁট বসালেই ল্যাটা পুরাপুরি চুকে যায়। অবস্থার এহেন পরিণতির জন্য অক্ষম আ'ম আমাদেরকে ভুগতে হবে, জানি। তবে এটাও জানিয়ে রাখি- ভবিষ্যতের 'ত্যাঁদড়দের' আরাম করে কাঁদার জায়গাও থাকবেনা!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।