আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি মানসম্মত নিবন্ধ তৈরিতে করণীয়



একটি ভাল নিবন্ধের শুরুতে সূচনা, মাঝে স্পষ্টভাবে মূল বক্তব্য ও শেষে উপসংহারটা সঠিকভাবে উল্লেখিত হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যে কোন উচ্চমানের নিবন্ধ শুরু হয় একটি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের দ্বারা। সেটি নিবন্ধের সূচনা করে। বিশেষ ক্ষেত্রে, অধ্যায়ের সূচনার পরে বিষয়টির মূল সারাংশ থেকে থাকে, যদিও অধ্যায়সহ নির্দিষ্ট ও বিশদ বিবরণ উপযুক্ত। নিবন্ধের কাঠামোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করাটা গুরুত্বপূণ।

নিবন্ধের যথোপযুক্ত ও লাগসই নাম নির্বাচন:নিবন্ধের নাম চূড়ান্তভাবে নির্বাচনের পূর্বে বিবেচনায় নেয়া দরকার আরো এক বা একাধিক বিকল্প রয়েছ কি-না। থাকলে ভাষাগত দিক দিয়ে সব্বোর্ত্তম নামটি-ই গ্রহণ করা সমীচীন হবে। যেমন : সম্ভব হলে ইংরেজী শিরোনাম প্রতিবর্ণকরেণর মাধ্য নিবন্ধের নামগঠন এড়াতে হবে। লেখার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে সুন্দর ও আকর্ষণীয় একটি শিরোনাম নির্বাচন করুন। শিরোনাম যেনো এক লাইনের বেশী না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

উল্লেখ্য যে, শিরোনামের শেষে কখনো দাঁড়ি হয় না। তবে প্রশ্নবোধক বা বিস্ময়সূচক চিহ্ন হতে পারে। নিবন্ধের সূচনাংশ - সংক্ষিপ্ত অথচ অর্থবহ হবে। ভুমিকা খুব দীঘ হবেনা। কীভাবে নিবন্ধটি লেখা হবে , কোন কোন বিষয় মৌলিকভাবে আলোচনা হবে তা ভুমিকায় উল্লেখ করা হবে।

ভুমিকায় শিরোনাম সম্পকে প্রত্যক্ষ আলোচনা থাকবে, অস্পষ্ট বক্তব্য কখনই নয়। ভুমিকাটা নিবন্ধ শেষ করে লেখা যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে ভুমিকা যেন এমন হয় যে, পাঠক বুঝতে পারেন এটি ইন্টারেস্টিং , পড়া উচিৎ। নিবন্ধের কাঠামো - ধারাবাহিক ও পরিপূর্ণ হতে হবে। অনুচ্ছেদের শিরোনাম:একটি নিবন্ধ অনেকগুলো অনুচ্ছেদে বিভক্ত থাকে এবং প্রতিটি অনুচ্ছেদের একটি অর্থবোধক শিরোনাম থাকে।

শিরোনামগুলো বিশেষ্য বা বিশেষ্যগুচ্ছ (বাক্যাংশ) হিসেবে লেখা হবে। শিরোনামে বিশেষ চিহ্ন, যেমন অ্যাম্পারস্যান্ড (&), যোগ চিহ্ন (+), বন্ধনী ({}, []), ইত্যাদি লেখা পরিহার করুন। লেখার আকার-আয়তন অনুযায়ী লেখাকে একাধিক অনুচ্ছেদে ভাগ করুন। কোনো অনুচ্ছেদ যেনো বিশাল বড় না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। অনুচ্ছেদগুলোর মধ্যে অবশ্যই ফাঁক রাখুন।

অনুচ্ছেদের মাঝখানে কোথাও লাইন ভেঙ্গে গেছে কি-না সেদিকে লক্ষ্য করুন। উপানুচ্ছেদ সংযোজন পরিশিষ্ট সংযোজন:প্রতি নিবন্ধের শেষ ভাগে কয়েকটি বিশেষ প্রামাণিক অনুচ্ছেদ থাকবে। এই সকল পরিশিষ্টধর্মী অনুচ্ছেদগুলো : পাদটীকা', তথ্যসূত্র, গ্রন্থপঞ্জি, আরও দেখুন, বহিঃসংযোগ এবং চিত্রমালা (ফটোগ্যালারী)। এরপর থাকবে বিষয়শ্রেণী। পরিভ্রমণে সহায়তাকারী পাদদেশীয় দিকনির্দেশীকা (ফুটার টেমপ্লেটগুলি) নিবন্ধের একেবারে শেষে, পরিশিষ্টগুলোর পরে, কিন্তু বিষয়শ্রেণী আগে রাখতে হবে।

পরিশিষ্টের কাঠামো:নিচের পরিশিষ্টধর্মী অনুচ্ছেদসমূহ নিবন্ধের শেষভাগে যে ধারাবাহিকতায় যোগ করা উচিত। পাদটীকা:পাদটীকা হচ্ছে একপ্রকার তথ্য, যা কোনো পাতার শেষে থাকে যা নিবন্ধ সম্পর্কে মন্তব্য করে, বা তথ্যসূত্রের উদ্ধৃতি প্রদান করে এবং এটি মূল লেখার একটি অংশ। তথ্যসূত্র:তথ্যসূত্রে একটি তথ্যের সুনির্দ্দিষ্ট এক বা একাধিক উৎস উল্লেখ করা হয়ে থাকে। গ্রন্থপঞ্জি:তবে একটি নিবন্ধ হয়তো সাধারণভাবে সমতূল্য একাধিক গ্রন্থে বা সাময়িকীতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয়েছে। এই সকল গ্রন্থাবলীর নাম তালিকাবদ্ধভাবে গ্রন্থপঞ্জি-তে বর্ণনা করা হয়।

বহিঃসংযোগ:তথ্যসূত্র বা তথ্যপঞ্জী হল প্রকাশিত কাজের সংগৃহীত উৎসের তালিকা। কিন্তু থিসিস বা প্রবন্ধে প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত উভয় প্রকার কাজকেই তথ্যপঞ্জীতে সন্নিবেশিত করা হয়। তথ্যপঞ্জী বিভিন্ন প্রকার হতে পারেঃ ১। মূল গ্রন্থাংশে, প্রতিবেদনে বা পাদটীকায় যেসব উৎসের উল্লেখ রয়েছে তাদের তালিকা। ২।

লেখার সাথে সম্পর্কযুক্ত যেসব পুস্তক, পুস্তিকা, সাময়িকী, প্রতিবেদন, প্রবন্ধ ইত্যাদি পাঠ ও পর্যালোচনা করা হয়েছে, সেসব পুরোপুরি প্রাসঙ্গিক না হলেও তাদের তালিকা। ৩। আরেক ধরনের তথ্যপঞ্জী আছে,এদের বলা হয় টীকাযুক্ত তথ্যপঞ্জী। তথ্যের উৎসের বিষয় ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত টীকা সহ তাদের তালিকা থাকে। তথ্যপঞ্জী লেখার নিয়ম হচ্ছে, ক।

পাদটীকা না দিয়ে প্রতিবেদনের শরীরেই উৎস নির্দেশ করা যেতে পারে। যেমন: [দ্র: হাবিব (২০০৬, ৭১)] এভাবে তৃতীয় বন্ধনীর মধ্যে আটকাতে হবে। এতে বোঝায় মোঃ আহসান হাবিব ২০০৬-এ প্রকাশিত বইয়ের ৭১ পৃষ্ঠায় মিলবে তথ্য বা বিশ্লেষণটি; এবং ওই বই সম্পর্কে সব তথ্য পাওয়া যাবে রচনাপঞ্জীতে। খ। তথ্যপঞ্জীতে গ্রন্থনাম উল্লেখ করা যেতে পারে বাঁকা ( Italic) যেমনঃ Lewin, K.(1946). Field Theory in Social Science, Harper & Row, New York, NY গ।

প্রবন্ধ, গল্প, কবিতার নাম ছাপা উল্লেখ করা একক উদ্বৃতি চিহ্নের ভেতরে। যেমনঃ Lewin, K.(1946),'Action Research and minority problems', Journal of Social Issues, Vol. 2 No. 4 ঘ। গ্রন্থকারের নাম, প্রথমে শেষ নাম বা পারিবারিক নাম তারপর কমা দিয়ে প্রথম বা প্রদত্ত নাম তারপর কমা। যেমনঃ Bessey, M., বাঙালী গ্রন্থকারের বেলায় পুরোনাম লিখে কমা। যেমনঃ ডা: গোলাম মোর্শেদ ঙ।

কাজের শিরোনাম লিখে তার নিচে দাগ দেয়া,তারপর কমা। যেমনঃ উচ্চশিক্ষিত দম্পতিদের মধ্যে সিদ্ধান্তগ্রহণের প্রাধান্য যাচাই,চ। প্রকাশের স্থান এরপর কোলন। যেমনঃ ঢাকাঃ ছ। প্রকাশনা সংস্থার নাম, এরপর কমা।

যেমনঃ জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশণ,জ। প্রকাশের সন এরপর দাঁড়ি বা কমা, প্রয়োজনে মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা, তারপর দাঁড়ি। যেমনঃ ২০০৯, ৬৪। লেখার শুরুর আগে করণীয় হচ্ছে,১.পরিকল্পনা গ্রহণ করা ২. কেন লেখা লিখছেন তা ভেবে নেয়া ৩.কোন ধরনের লেখা লিখবেন তা ঠিক করা ৪. বেশি বেশি পড়া ও প্রয়োজনীয় নোট নেয়া ৫. সংগৃহীত তথ্য সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখা ৬.শব্দ সংখ্যার প্রতি খেয়াল রাখা ৭. শুরুতেই কাউকে আক্রমণ করে না লেখা ৮. বিশেষ বিশেষ শব্দ বা পরিভাষার সংজ্ঞা/ ব্যাখ্যা দেয়া ৯. প্রয়োজনীয় ডায়াগ্রাম ব্যবহার করা ১০. সমস্যার পযালোচনাসহ সমাধান উল্লেখ করা ১১.ভাল লেখক ও ভাল লেখা থেকে সহযোগিতা করা ১২. নিজের লেখা বারবার পড়া এবং নিজেই সমালোচনা করা। লেখার পরে করণীয় হচ্ছে, ১. সম্পাদনা করা ২. সংশোধন করা ৩. সংযোজন করা ৪. বিয়োজন করা ৫.প্রুফ রিডিং।

লেখা প্রকাশ করার আগে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নিজে একবার পড়ুন, এমনকি কপিপেস্ট হলেও। সম্ভব হলে প্রিভিউ দেখুন। ফরম্যাট বা বানান ভুল থাকলে সংশোধন করুন। লেখা প্রকাশ হওয়ার পর আবার এক নজর দেখুন – সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি-না। নিবন্ধে নোট ব্যবহার:মূল টেক্সটে উল্লিখিত কোনো বক্তব্য আরো সুস্পষ্ট করার জন্য নোট ব্যবহার হয়।

এনাট ব্যবহারের সময় নম্বর দেয়া উচিৎ। নিবন্ধে ২টি পদ্ধতিতে নোট ব্যবহার করা হয়। ১.ফুটনোটস (Footnotes)-প্রতি পৃষ্টার নীচে ব্যবহার হয়। ২.এন্ডনোটস (End notes)- বইয়ের শেষে/অধ্যায়ের শেষে/নিবন্ধের শেষে ব্যবহার হয়। ফুটনোটে বা ইন্ডনোটে শব্দ সংক্ষেপে লিখতে হয়।

নোট ব্যবহৃত হয় ৫টি কারণে-১.টেক্সটে উল্লেখিত কারো অভিমত হুবহু উদ্ধৃত্ত করার জন্য। ২.ক্রস রেফারেন্স তথা একই বইয়ের বা নিবন্ধের অন্যস্থানে আলোচিত কোনো বিষয়ের রেফারেন্স দেওয়া প্রয়োজন হলে। ৩.মূল টেক্সটে সংক্ষেপে বলা হয়েছে কিন্তু আরো খোলামেলা আলোচনার জন্য ৪. মূল টেক্সটে উল্লেখিত কোনো বক্তব্যের প্রমাণ উপস্থাপন করার জন্য। ৫.মূল টেক্সটে উল্লেখের দরকার নেই এমন অতিরিক্ত যেকোন তথ্য উপস্থাপন করার জন্য। নিবন্ধের ভাষা ও কিছু নিয়ম:বাংলা লেখাতে যথাসম্ভব ইংরেজী শব্দ পরিহার করার চেষ্টা করুন।

হাতের কাছে একটি অভিধান রাখলে খুব ভালো হয়। তবে স্বাভাবিকভাবেই বহুল প্রচলিত ইংরেজী শব্দগুলো এড়ানো সম্ভব হয় না। লেখা হতে হবে সঠিক। বাক্য বিন্যাসটা অত্যন্ত সতকতার সাথে সচেতনভাবে করতে হবে। বাক্য হবে সংক্ষিপ্ত,সহজ।

কঠিন ও অস্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করে লেখাকে দূবোধ্য করে তোলা ঠিক নয়। লেখকের নিজের কোন বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা ছাড়া অস্পষ্টভাবে পাঠকের জন্যে লেখাটা অবিবেচনা প্রসূত ও অযৌক্তিক। পাঠকের প্রতি খেয়াল রেখেই শব্দ চয়নে ও বাক্যবিন্যাসে সতক থাকতে হবে। ভুল বানান অনাকাংখিত, বিরক্তির উদ্রেক করে-তাই শুদ্ধ বানানে লিখতে হবে। দাড়ি, কমা ঠিকমত হওয়া দরকার;যতি চিহ্নে ভুল হাস্যরসের উদ্রেক করে।

অহেতুক পুনরাবৃত্তি বা বাহুল্যতা যাতে লেখাটাকে হালকা করে না ফেলে সে ব্যাপারে সতক থাকতে হবে। এমনভাবে শব্দ চয়ন করতে হবে যাতে যথাযথ অর্থ প্রকাশ পায়। মনে রাখতে হবে সবোর্ত্তম শব্দ সর্ববৃহৎ শব্দ নয়। ইংরেজী, বাংলা বা যে কোন ভাষায়ই লেখা হোক না কেন তা অবশ্যই যথোপযুক্ত মান বা স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী হবে। ভাষা হবে সহজ, সঠিক ও পাঠকের মনে প্রভাব সৃষ্টিকারী।

যে সকল পদ বা রাশি ব্যবহার করা হবে তা অবশ্যই সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হতে হবে এবং লেখায় এই সংজ্ঞার সঙ্গতি রক্ষা করতে হবে। প্রকাশভঙ্গি হবে পান্ডিত্যপূর্ণ, নৈর্বক্তিক, সংক্ষিপ্ত ও সুষ্পষ্ট। কোন আঞ্চলিক ভাষা, কথোপকথন বা আবেগ উচ্ছ্বাস লেখার অন্তভূর্ক্তকরণে সচেতন থাকতে হবে। কোন ব্যক্তি সর্বনাম যেমন আমি,তুমি,তোমরা,আমরা,আমাকে,আমার আমাদের, তোমার, তোমাদের, আমাদিগকে ইত্যাদি একমাত্র উদ্ধৃতি ব্যতীত কোথাও ব্যবহার করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে। তৃতীয় পুরুষ এ লিখলে ‘লেখক’,‘নিবন্ধকার’ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে।

যুক্তিযুক্তভাবে ধারণার বিকাশ ঘটাতে হবে এবং পদ্ধতিগতভাবে তা উপস্থাপন করতে হবে। কোন জ্ঞানগম্ভীর ধারণাকেও সহজ ভাষায় এবং ছোট বাক্যে প্রকাশ করতে হবে। সাধারণ অতীত কাল ব্যবহার করে লিখতে হবে। বর্তমান কালের বা ভবিষ্যৎকালের কোন প্রসঙ্গ টানলে সেখানে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল ব্যবহার করা যাবে। সমগ্র লেখায় একই রকম বানানরীতি,সংক্ষিপ্তকরণনীতি,ইংরেজি ভাষায় লিখিত নিবন্ধের ক্ষেত্রে বড় হাতের অক্ষরের ব্যবহার এবং বাংলার ক্ষেত্রে শব্দের নিচে দাগ দেয়া, যতি চিহ্ন (Punctuation),শব্দের মিল ও বিভক্তি ব্যবহার করতে হবে।

এ জন্য যে কোন আদর্শ বা প্রমিত অভিধান অনুসরণ করা যেতে পারে। যে সকল ক্ষেত্রে একাধিক বানান প্রচলিত আছে সে সকল ক্ষেত্রে যে কোন একটি ব্যবহার করতে হবে, দু’টোকে একই লেখায় ব্যবহার করা যাবে না। কোন কিছু সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্য করা যাবে না,কোন কিছু বাড়িয়ে বলা যাবে না,বক্তব্য সততার সাথে যুক্তিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করতে হবে। যে কোন উদ্ধৃতি সঠিকভাবে উদ্ধৃত করতে হবে। লেখার কাঠামো,বিষয়বস্তু, সংগঠন ও উপস্থাপন প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

যত্নের সাথে টাইপ করতে হবে এবং সতর্কতার সাথে প্রুফ দেখতে হবে যাতে কোন ভুল না থাকে। টাইটেল লেখার নিয়ম:টাইটেল মূলত এমন হওয়া উচিৎ যাতে করে পাঠক টাইটেল দেখামাত্রই ধারণা করে ফেলতে পারেন লেখাটি কি নিয়ে এবং ভেতরে কেমন তথ্য থাকতে পারে। সবসময় চেষ্টা করবেন যত কম শব্দে টাইটেল শেষ করা যায় তত কম শব্দে শেষ করার জন্যে। টাইটেল অযথা দীর্ঘায়িত না করে অল্প শব্দে লেখা উচিৎ। আকর্ষণীয় টাইটেল বানানোর জন্যে টাইটেলের পূর্বে বিশেষ কিছু শব্দ জুড়ে দেয়া যেতে পারে।

উদাহরণ–“…এর সেরা দশ উপায়”,“সহজেই…”,“যেভাবে…”ইত্যাদি ইত্যাদি। লেখার জন্যে আকর্ষণীয় শব্দ কি হতে পারে তা বুঝতে সক্ষম হতে হবে। সম্পূর্ণ লেখা হয়ে গেলে এরপর টাইটেল নির্বাচন করলে ভালো টাইটেল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যতটুকু পারা যায় সহজ-সাবলীল ভাষা ব্যবহার করা উচিৎ, দাঁতভাঙ্গা শব্দ ব্যবহার করে টাইটেল ভারী করার কোনই দরকার নেই। একই টাইটেলে বা কাছাকাছি টাইটেলে কোন লেখা ইতোপূর্বেই লেখা হয়েছে কিনা তা সার্চ ইঞ্জিন থেকে দেখে নিতে পারেন, যদি হয়ে থাকে তাহলে যতটুকু পারা যায় ঐ টাইটেল থেকে ভিন্ন কিছু লেখার চেষ্টা করুন।

টাইটেলে কখনো পোস্টের বিস্তারিত লেখার দরকার নেই। ছোট্ট করে মূলভাবটা লিখে দিলেই হয়ে যাবে। টাইটেল লেখার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখা উচিৎ যাতে তা পাঠকের পড়ার উপযুক্ত থাকে। সাম্প্রতিক কোন বিষয়ে লেখার ক্ষেত্রে টাইটেল একটু ভিন্নভাবে নির্বাচন করা উচিৎ যাতে করে কারো সাথে মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা এড়ানো যায়। টাইটেল এ সাংকেতিক চিহ্নসমূহ ব্যবহার না করাই শ্রেয় তবুও নিতান্তই প্রয়োজনে দেখতে খারাপ যাতে না লাগে এমন চিহ্ন দেয়া যেতে পারে।

উদ্ধৃতি লেখার নিয়ম: প্রবন্ধের আয়তন মোটামুটিভাবে ৩০০০ শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা বাঞ্চনীয়। উদ্ধৃতি হলে যেভাবে লিখবেন:গ্রন্থকারের/প্রবন্ধাকারের/সম্পাদকের/সঙ্কলকের পদবী, নাম:গ্রন্থের/প্রবন্ধের/পত্রিকার নাম(), সংস্করণ তথ্য,প্রকাশনা তথ্য, প্রকাশনা সংস্থা ও প্রকাশকাল, পৃষ্ঠাঙ্ক,ওয়েব সাইট হলে ঠিকানা, দেখার তারিখ। বণিতব্য বিষয়টির বিশেষ তাৎপয প্রদানে আপনার প্রদত্ত ব্যাখ্যাটি লিখুন। সঙ্গে তথ্য দিতে হলে তৃতীয় বন্ধনীর মধ্যে সেটা দিন উদ্ধৃতির নিয়মেই। উদ্ধৃতি সরাসরি বয়ানের ভিতরে অথাৎ লাইনের মধ্যে দিলে উদ্ধৃতি চিহ্ন (‘‘ ’’) বসান।

উদ্ধৃতি বাঁকা অক্ষরে লিখলে (ইটালিক) বা পৃথক লাইনে ডানদিকে বেশি জায়গা রেখে লিখলে উদ্ধৃতি চিহ্ন বসানোর প্রয়োজন নেই। গ্রন্থপঞ্জিটি সাজাবেন অবশ্যই বণক্রমানুসারে। এক্ষেত্রে লেখকের বা সংকলকের বা সম্পাদকের নামের পদবির আদ্যাক্ষর অনুযায়ী সাজাবেন। পুরো ব্যাপারটি হবে উদ্ধৃতির মতোই। সাধারণ কিছু পরামশ:লেখা মানে ভাবনার সাথে কলমের যোগসূত্র করে দেয়ার ব্যাকুলতা,আত্মার অনুভূতি প্রকাশের চাঞ্চল্য।

আনন্দময় মূহূর্তকে তার চরম উৎকর্ষে অক্ষরের আকরে বন্দী করে ফেলা,কল্পিত ঘটনাবলীকে জীবন্ত করে দেয়া। সুদীর্ঘ সাধনা,তীব্র সহনশীলতা আর কঠোর অধ্যবসায় ছাড়া সেটা সম্ভব হয় না। লেখক হতে হলে করণীয় হল লেখালেখিটা একবার শুরু করা আর সেটাকে চালিয়ে যাওয়া। লিখতে শুরু না করে লিখব, লিখব চিন্তা করে বা বলে বলে সময় কাটানো অনেক সহজ। লিখার উদ্দ্যেশ নিয়ে লেখার খাতা বা ল্যাপটপ সামনে নিয়েও লিখা না শুরু করার হাজারটা কারন আছে, যেমন এক কাপ চা খেয়ে লিখি, ব্লগে একটু ঢু মেরে দেখি কি চলছে তারপর মন ফ্রেস করে লিখব, ফেইসবুকে একটু দেখি কোন নোটিফিকেশন আসল কিনা, ভাল একটু মুভি ডাউনলোড করা আছে ওটার কিছুটা অংশ দেখে নেই অন্তত, খেলার খবরটা অন্তত দেখে নেই ইত্যাদি ইত্যাদি।

এসব কোনটাই খারাপ কিছু না, কিন্তু তাতে করে অন্তত লেখাটা হবে না। প্রতিদিন অন্তত পাচশ শব্দও লিখতে চেষ্টা করতে হবে। সেগুলো হতে পারে অখাদ্য কুখাদ্য। লিখলেই যে সব নোবেল প্রাইজ উইনিং বা অস্কার উইনিং লেখা আসবে সে চিন্তা বাদ দিতে হবে। লিখতে হবে অবিরত।

রাবিশ লিখতে লিখতে একসময় লেখার হাত ভাল হয়ে যাবে। তৈরি হবে নিজস্ব সতন্ত্রতা। এসময়ে পড়তেও হবে অনেকের লেখা। লিখার সময় হয়ত তাদের ছাপ আসবে, কিন্তু তাতে কোন চিন্তা নেই, লিখতে লিখতে একসময় নিজস্বতা আসবেই। মোটকথা প্রতিদিন নিয়ম করে লিখতে হবে।

এবং সেটা যেমন মানেরই হোক। উপসংহার:ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও এককালের পত্রিকাকর্মী স্যার উইনস্টন চার্চিল বলেছিলেন: রাজনীতি বা রাজনীতিবিদ নিয়ে আমি আর কিছুই করছি না। এই যুদ্ধ শেষ হলে আমি সম্পূর্ণভাবে লেখা আর আঁকায় মনোনিবেশ করতে চাই। অতএব চার্চিলের মতো সফল রাষ্ট্রনায়কের জীবনের গন্তব্য হলো লেখক হওয়া। সকলেই লেখেন না, কেউ কেউ শুধু বলেই যান, আর অন্যে তা লেখে হয়ে যায় লেখক।

কারও মুখের কথাই লেখা হয়ে যায় যদি তাতে প্রাণ থাকে। “নেপোলিয়নের প্রতিটি কথা এবং তার লেখার প্রতিটি লাইন পড়ার মতো, কারণ তাতে আছে ফ্রান্সের প্রাণ। ” বলেছিলেন অ্যামেরিকান প্রবন্ধকার র্যাল্ফ ওয়ালডো ইমারসন। এমন ব্যক্তিদেরকে মনে নিয়েই হয়তো বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেছিলেন,“হয় পড়ার মতো কিছু লেখো, নয়তো লেখার মতো কিছু করো। ”


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.