আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাবিপ্রবিতে ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকারিদের বিষয়ে একটু সচেতন হওয়া জরুরী হয়ে পরেছে।

জীবন আসলে চিল্লাপাল্লা ছাড়া কিছুই না। সেটাই করতে চাই, মনের সুখে, ইচ্ছা মতন। আপডেটঃ এর মধ্যে কাহিনী শুরু হয়ে গেছে, এই লিঙ্কে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। আচ্ছা? চাকু কি ভালো জিনিস নাকি খারাপ জিনিস? অনেক গুলো উত্তর আসবে। একদল বলবে অবশ্যই ভালো জিনিস।

চাকু ছাড়া আমরা আপেল কেটে খাব কীভাবে? কেও আবার বলবে চাকু না থাকলে তরকারী কাটা হবে কীভাবে? তরকারী না কাটলে রান্না করবো কীভাবে? আবার আর এক দল বলবে চাকু আবার ভালো জিনিস কীভাবে হতে পারে? আপনার মতো ফাউল তো আর দেখি নাই? এই প্রশ্ন আপনি কীভাবে করলেন? সাহস তো আপনার কম না! চাকু দিয়ে কত খুন খারাবী হয়, মানুষ এই চাকু দিয়ে মানুষের পায়ের রগ কেটে দেয়। ঈশ! কি অমানবিক!! আহারে!!! আর আপনি এই চাকু নিয়ে সন্দেও করেন? প্রশ্ন করেন এটি ভালো নাকি মন্দ। আরেক দল আছে, উনারা এই প্রশ্নের বিপরীতে উল্টা আরেকটা প্রশ্ন করে বসবেন। আপনি চাকুটা কি কাজে ব্যবহার করবেন? এই ৩য় দলটা যত ভারী হবে আমার ভুল গুলো তত কমে আসবে। এই প্রশ্নটা আমার মাথায় উদয় হয়েছে বন্ধু শারুখ রিগানের একটা মেসেজ থেকে।

সেখান থেকে জানলাম গত শুক্রবার নাকি ওদের স্থানীও মসজিদে জুম্মার নামাজের খুদবার সময় ওদের ইমাম সাহেব সাস্টের গোলচত্তরে নির্মিতব্ব্য ভাস্কর্য সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি এর নির্মাণের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ার পর মোনাজাতে সবাইকে নিয়ে দুয়া করলেন যেন এই নির্মাণ কাজ না হয়। উনার মতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় (সম্ভবত নামের কারণে) একটি পবিত্র বিশ্ববিদ্যালয়। তাই অপবিত্র করতে মূর্তি নির্মাণ করা যাবে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভাস্কর্যটা কেন বানানো হচ্ছে।

তার উপরে ডিপেন্ড করে সেটা কি ভালো হচ্ছে নাকি খারাপ হচ্ছে। ভাস্কর্য বানানো হচ্ছে সেটা শুনেই যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন সে সেটা খারাপ হচ্ছে সেটা মানসিক সিকনেস ছারা আর কিছু না। জিনিসটা না আমার মাথায় ঢুকেনই। ভাস্কর্য নির্মাণ নিষিদ্ধ হবে কেন এই জিনিসটা একটি বারের জন্যও মাথায় ঢুকাতে পারলাম না। শাবিপ্রবি এর গোল চত্তরে প্রস্তাবিত মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, যা হবে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ভাস্কর্য।

স্থপতিঃ সুলতানুল ইসলাম কোনও এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেব হচ্ছেন সে এলাকার সবচেয়ে বেশি এক্সেপ্টেড নেতা। সবচেয়ে বেশি পার্সেন্টেজ মানুষ তার কথা শুনে, বিশ্বাস করে এবং মানে। তাই তার দায়িত্বটাও অনেক বেশি। কেননা গ্রট পাওয়ার কামস উইথ গ্রেট রেস্পন্সিবিলিটি। তার মুখ দিয়ে যখন একটা কথা বের হবে যেটায় যেন কোনও গলদ না থাকে।

কোনও যুক্তি দিয়েই যেন তার কথাকে ভুল প্রমাণিত না করা যায়। কোনও বিতর্ক যেন তার কথা নিয়ে না হয়, কোনও যুক্তি যেন তার বিরুদ্ধে না দেয়া যায়। বড়দের কথায় আরও একটু বড় দায়িত্বশীলতা আশা করি। দুঃখ লাগে যখন এইসব ক্ষমতাবান লোকেরা যখন আমাদের মতো আমপুলাপাইন্দের মতো কথা বলেন। হুম, মূর্তি পূজা অবশ্যই কোনও ঠিক কাজ নয়।

মূর্তি পূজার পক্ষে কোনও যুক্তি অন্তত আমার মাথায় কখনো আসে নি। কিন্তু একটি ভাস্কর্য বানানো আর মূর্তি পূজা করাকে যদি এক কাতারে ফেলে দেয়া হয় তাহলে কি সেটা খুব আনাড়ি কাজ হয়ে গেল না? আমি এই ভাস্কর্যটাকে একটা স্থাপনা বলবো। আরে ভাই আপনি যে ঘরটায় বাস করেন সেটাও তো একটা স্থাপনা। এখন সেই ঘরটাকে যদি আমি বলি যে সেটা হারাম? কি? মেজাজ গরম হয়ে গেছে? ঘর আর ভাস্কর্য এক হল কীভাবে? আপনার একটা ঘর যেমন আপনার জীবনটাকে সুন্দর করে তুলার কাজ করে ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ভাস্কর্য একটা অর্নামেন্টাল জিনিস। সে জায়গাটার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

আর সেটা যদি আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের কোনও উপাধানের ভাস্কর্য হয় তাহলে সেটা আমাদের জন্য একটা রিমাইন্ডারের কাজ করতে পারে। সেখানে গেলে বা চোখের সামনে স্থাপনাটা পরলে আমাদের অহংকারের অধ্যায় গুলো মনে এসে যেতে পারে। এর তো কোনও সাইড এফেক্ট দেখি না। আর আপনার কি কখনো মনে হয়েছে যে একটা ভাস্কর্য বানালে সেখানে গিয়ে কেও মূর্তি পূজা করা শুরু করবে? উত্তর “হা” হলে আপনার দিকে তাকিয়ে হাসা ছাড়া আর কিছু করার দেখছি না। একটা আশার কথা হচ্ছে মানুষ এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

ভালো মন্দ বিচার করতে শিখেছে। একটা ক্ষুদ্র শ্রেণী ছারা বাকিরা আর এখন “কান নিয়েছে চিলে”তে বিশ্বাসী না। এইসব অবিবেচক অন্ধদের কথায় এতো ভয় পাওয়ার কিছু দেখি না। তাই এখনি মাঠে নেমে পরার খুব একটা যুক্তি নেই। এই অবস্থায় খুব মাথামাতি করা মানে এদের লাই দেয়া, বিষয়টাকে আমলে নেয়া।

তবে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে আমাদের, এই কুসংস্কারের মেঘটা যেন বেশি ঘনীভূত না হয়ে যায়। আমি আশা করছি না এই কয়েক লাইন লেখায় কারও মানসিকতা পরিবর্তন হয়ে যাবে। যারা ভাস্কর্য বানানর বিরুধি ছিলেন তারা পক্ষে চলে আসবেন। কারণ আপনাদের মনটা কুসংস্কারে ভর্তি হয়ে গেছে, আমার বা আমাদের কথা পৌঁছানর মতো খালি জায়গা আপনাদের মনে নেই। তবে এইটুকু আশা রাখতে পারি যে ঐ দলটা আর ভারী হবে না।

এতটুকুই যথেষ্ট। ফেসবুক নোট লিংক। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.