আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি কুয়াশাচ্ছন্ন রাত ও একদল বিড়াল..

শহরে আজকে অনেক বিড়ালের আগমন লক্ষ্য করলাম...চারিদিকে তারা ঘোরাফেরা করছে আর ম্যাও ম্যাও করছে...তাদের ডাকে কিসের যেন মাদকতা...সবাই এসেছে বিড়ালের ডাক শুনতে... চারিদিকে তাদের খাওয়ানোর জন্য বিশাল আয়োজন...উৎসব উৎসব ভাব। দেশের রাজা, সৈন্যবাহিনী তাদের আগমনে ততটা বিরক্ত না। যাক বাবা বিড়ালই তো এসেছে বাঘ বা সিংহতো না। আমাদের ক্ষতির কোন সম্ভাবনাই নাই। একটু চিল্লাচিল্লি করবে এই যা। কালকেই চলে যাবে যে যার ডেরায়, বেকার কষ্ট করার কোন দরকার নেই ... যা বাবা সৈন্যবাহিনী তোরা ঘুমা, সারাদিন কত খাটাখাটনি তোদের... দরকার হলে ওদের একটু দুধ পাঠিয়ে দে... ওরা দুধ খেয়ে মনের সুখে ম্যাও ম্যাও করুক... বিড়ালের আস্তানা থেকে আর কিছু দুরেই বসেছে বিশাল মেলা... রঙ্গিন আলো আকাশ স্পর্শ করেছে। এক মানবশিশু রাস্তার পাশে শুয়ে ছিল, সে তার মাকে জিজ্ঞাসা করলো- মা এত আলো, এত রঙ্গ কেন?? মা হতাশ হয়ে পাশ ফিরে শুলো... বাবা এত জেনে কাজ কি? আলো দেখে মজা লাগলে দেখ কিন্তু আমি বাবা একটু খাইতে,পরতে পারলেই খুশি... ছেলে অবাক হয়ে দেখে ইসস... সেই রঙ্গিন আলোর নিচে আরেকদল প্রাণী এসেছে মজা করতে... তারা অবশ্য কয়েকদিন পরপরই মজা করে,তাদের মতে- “ আরে দুনিয়ায় আসছি, মরে যাবো, আর তো জীবন দুইবার আসবে না, তাই প্রতিটা মুহূর্ত মজা না করলে কি হয়???” মজার জন্যেই তো এই দুনিয়া... আলোয় মজা, অন্ধকারেও মজা... এইখানেও তাদের ডাকে আছে মাদকতা, আছে আভিজাত্য, চারিদিকে তাদের গর্বিত,হাস্যজ্জল বিচরণ। কোথা থেকে যেন এক সুর ভেসে এল... সবাই আরও উচ্ছসিত... সবার সে কি আগ্রহ রঙ্গিন আলোর কাছে যাওয়ার, একটু কাছ থেকে দেখার (পোকারা যেমন আলোর কাছে ছুটে যায়)...তাদের শরীরে এখন অনেক আনন্দ, অনেক শক্তি... সারা সপ্তাহ কাজ করে যারা আজ ঘুমাচ্ছে তারা কি দুর্বল... কি মিসটাই না সে করলো!!! এদিকে সেই সুরের মূর্ছনায় বিড়ালদের ডাকাডাকি শোনা যাচ্ছে না... বিড়ালের দলপতি একটু বিরক্ত হয়ে কি যেন ভাবল... তারপর আবার চিল্লানো শুরু করলো... আরে বাবা আমরা তো শান্তিপ্রিয় বিড়াল,কি দরকার হাঙ্গামা করার... ওরা থাকুক ওদের রঙ্গিন দুনিয়ায়... আমরা থাকি এখানে... আমাদেরও তো অনেক জনসংখ্যা... তার মাথায় হটাৎ আসলো আরে- ফিতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করবো?? এটা তো হত্যার চেয়েও জঘন্য অপরাধ... যাক বাবা বিড়াল হয়ে থেকে বাঘ হবার স্পর্ধা দেখাই নাই... যারা বাঘের মত চিল্লায় তারা ফিতনা তৈরিকারী... সমবেত বিড়াল তুমুল স্বরে ম্যাও করে সম্মতি জানালো... এদিকে রাত বাড়ছে... একসময় আরেক সুমধুর ডাক এল শহরের অলি গলি থেকে... কি সুন্দর তার কথা... কি সুন্দর তার বাণী... কিন্তু রঙ্গিন আলোর দল সারারাত অনেক পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, তাদের কানে ঢুকল না সে বাণী...( সে সপ্ন দেখছে নতুন পৃথিবীর, যেখানে নারী পুরুষে নেই ব্যাবধান যেমন ছিল না কাল রাতে), একজন এসে তাকে ডাকার চেষ্টা করলো... কিন্তু তার কানের পর্দায় তা সঠিক কম্পাঙ্ক তৈরি করতে পারলো না...মস্তিস্কে ঢোকা তো দূরের কথা... তার দুনিয়া সারা বছর কুয়াশায় ঢেকে থাকে... সূর্যের আলো ঢুকেনা তার ঘরে... আর বিড়ালের দলের কিছু সদস্য জেগে আছে, তারা সেই ডাক শুনলও সাড়াও দিলো... তারা তৃপ্ত... তাদের এই শহরে কাজ শেষ... তারা ফিরে যাবে... আবার তারা যাবে আরেক জায়গায় কিন্তু তাদের বিড়ালত্ব যাবে না... তারা ডেকেই যাবে ম্যাও... ম্যাও... ম্যাও............... (খবর- আজকে বনানীতে জাকের পার্টির বিশাল ওরস মাহফিল, অনেক লোক এসেছে অনেক বাস নিয়ে... পাশেই আজকে আবার বলিউডের প্রখ্যাত গায়িকা “শিলা কি জাওয়ানির” সুনিধি চৌহানের কনসার্ট আর্মি স্টেডিয়ামে... ) শিক্ষা- আমাদের এখন জাগার সময়... বিড়াল না আমাদের দরকার একদল সিংহ... যাদের এক হুঙ্কারে জালিমের মসনদ নড়ে উঠবে... অবশ্য তারা নিজেদের মাঝে হবে কোমল ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী... যাদের লক্ষ্য হবে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি... তারা হতাস হবে না... তারা তাদের ধৈর্য আর ত্যাগে পাবে স্বর্গীয় শান্তি.. . মুহাম্মাদ(সা)আল্লাহর রসূল৷ আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে আপোষহীন কিন্তু নিজেরা পরস্পর দয়া পরবশ৷ তোমরা যখনই দেখবে তখন তাদেরকে চেহারায় সিজদার চিহ্ন বর্তমান যা দিয়ে তাদেরকে আলাদা চিনে নেয়া যায়৷ তাদের পরিচয় রয়েছে তাওরাতে আর ইনযীলে তাদের উপমা পেশ করা হয়েছে এই বলে যে-একটি শস্যক্ষেত যাতে বীজ থেকে বেরিয়ে আসে ছোট্ট কিশলয় পরে তা শক্তি যোগালো তারপর তা শক্ত ও মজবুত হয়ে স্বীয় কাণ্ডে ভর করে দাঁড়ালো৷ যা কৃষককে খুশী করে কিন্তু কাফের তার পরিপুষ্টি লাভ দেখে মনোকষ্ট পায়৷ এ শ্রেণীর লোক যারা ঈমান আনয়ন করছে এবং সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও বড় পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ... (সূরা ফাতহ-২৯) লোকেরা কি মনে করে রেখেছে, “আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না? অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি, আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক (সূরা আন কাবুত-২-৩) তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকো যতক্ষণ না ফিতনা নির্মূল হয়ে যায় এবং দীন একমাত্র আল্লাহর জন্য নিদিষ্ট হয়ে যায়,তারপর যদি তারা বিরত হয় তাহলে জেনে রাখো যালেমদের ছাড়া আর করোর ওপর হস্তক্ষেপ করা বৈধ নয়... (সূরা বাকারা-১৯৩)

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.