আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্ধুত্ব যখন অফিসে

মুনি্ন আর তমাল একই দিন জয়েন করেছিল একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে। প্রথম দিনের সেই বন্ধুত্ব আজ ৫ বছর পরও টিকে আছে। অথচ তারা যে একে অপরের সঙ্গে প্রেম করে, ঠিক তা-ও নয়। তমাল তো অনেক আগে থেকেই এনগেজড। আর মুন্নি গত বছর বিয়ে করেছে কলেজ লাইফের প্রেমিককে।

কিন্তু অফিসে থাকার সময়টুকু তারা একে অন্যের প্রতি পুরোপুরি নির্ভরশীল। কাজের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে নিজের ডিপার্টমেন্টের লোক বাদ দিয়ে তারা একে অন্যকে খুঁজতে থাকে। কাজ করতে করতে দেরি হয়ে গেলে তমাল অপেক্ষা করে। মুনি্নকে বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে তারপর বাড়ি ফেরে। একসঙ্গে টিফিন খাওয়া, কাজের ফাঁকে টুকটাক আড্ডা দেওয়া, মজার মজার ই-মেইল ফরোয়ার্ড করা সবই তাদের বন্ধুত্বের অঙ্গ যা দু'জনেই ভীষণ এনজয় করে।

কিন্তু তারা দু'জন শুধু ভালো বন্ধু জানা সত্ত্বেও সহকর্মীদের থেকে অনেক কটু মন্তব্য শুনতে হয়। মুনি্নর ডিপার্টমেন্টাল হেড তো মজা করে তাকে তমালের 'অফিস স্পাউস' বলেন। মুনি্ন সরাসরি কিছু না বললেও মনে মনে খুব বিরক্ত হয়। একসঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করার ফলে পছন্দের সহকর্মীর সঙ্গে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠা স্বাভাবিক। যার সঙ্গে সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন অনেকটা সময় কাটাচ্ছেন, তার সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকাটাই তো সত্যি মুশকিল।

তবে ঠিক সম্পর্কের মতো তার সীমারেখাটাও সমান জরুরি। অফিসের গভীর বন্ধুত্ব নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ-

কি করবেন : * অন্যের মন্তব্য শুনে বন্ধুত্বে অবশ্যই ছেদ টানবেন না কিন্তু অফিসের ডেকোরামে আঘাত লাগে এরকম কিছু করাও শোভনীয় নয়। আপনাদের মধ্যে যে পারস্পরিক নির্ভরতা রয়েছে সেটা নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন। কারণ অফিসে সবাই তা বুঝতে পারবেন না। সে জন্য বেশি একসঙ্গে দেখা করা, ফোনে গল্প করা বা শুধু নিজেরা টিফিন খাওয়া যত কম করতে পারেন, ততই ভালো।

নিজেদের সঙ্গে কিছুটা সময় রেখে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান। বন্ধুদের একটা কমন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন, যাতে একসঙ্গে অনেকে মিলে এনজয় করতে পারেন। তাহলে ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু লাগবে না। * অফিসের কোনো রিসোর্স যেমন স্টেশনারি, ই-মেইল বা টেলিফোন ব্যক্তিগত সম্পর্কের খাতিরে ব্যবহার করবেন না। এগুলো অফিস কর্তৃপক্ষ এবং সহকর্মীরা কখনো ভালো চোখে দেখেন না।

বাড়তি গসিপ এড়ানোর জন্য অফিসের জিনিসপত্র ব্যবহারে একটু সংযত থাকুন। * অফিস কলিগের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব আছে বলেই তাকে সবসময় আঁকড়ে থাকতে হবে, এমনটা ঠিক নয়। তাকেও একটা নিজস্ব স্পেস দিন, নিজের পছন্দমতো বন্ধুবান্ধব বেছে নেওয়ার সুযোগ দিন। নিজেও মন খুলে অন্যদের সঙ্গে মিশুন। দেখবেন বন্ধুত্ব ক্রমেই বাড়বে।

* সাধারণত সব অফিসেই কমবেশি কানাঘুষা করে অবসর সময় কাটাতে সবাই পছন্দ করেন। তাই সব কথায় কান দেবেন না। কিন্তু এই গসিপের জেরে যেন নিজেদের বন্ধুত্ব প্রভাবিত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। অবশ্য নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ঠিক থাকলে সবরকম সমস্যার সমাধান খুব সহজেই হয়।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।