আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্পটা এমনই, অসম্পূর্ণ, গুনে গুনে বছর তের আগের ঠিক!

দ্বিধা-দ্বন্দের সমীকরণ !
একটা গল্প আছে আমার, আছে না পাওয়ার এক দীর্ঘশ্বাসও! সে গল্পটা, কৈশোরের ওই গল্পটাই কেবল আমি বলিনি কাউকে, বলিনি কখনোই, মুখ থেকে বেরও হয়নি অস্ফুটে! সে গল্পটা, আমার একমাত্র অপ্রকাশিত গল্পটাই আজ বলছি...

মেঘের মত অভিন্ন হৃদয়ের কিছু স্কুলবন্ধু ছিলো আমার, আর ছিলো প্রজাপতির মত রঙিন এক স্বপ্ন, ছিলো সে খুব কাছেই যেন বাস্তবতার! শরতের শাদা মেঘ প্রিয় ছিলো তার আর ছিলো শাদা কাশফুল। সে তাকে বাঁধ ভাঙা আবেগ নিয়ে একবার, আমি একবার ভালোবাসি বলেছিলাম, বলেছিলাম স্কুল ফেরত সোনাঝরা কৈশোর বিকেলে এক। অথচ, ভালোবাসি শব্দটার প্রকৃত মর্মার্থই জানিনে তখনো! বুঝেছি গুনে গুনে ঠিক তিন দিন পর এর!

আমার মতই আমাকে সে ভালোবাসি বলেনি, বলেনি সেই কৈশোরবেলার উঠোনে কখনোই! তবে, লুকোচুরি খেলার ছলে জড়িয়ে ধরেছিলো আমায়, জড়িয়ে ধরতো ছোঁয়াছুঁয়ি খেলার ফাঁকেও! সে স্পর্শে যে শিহরণ ছিলো, বইয়ে দিতো যে ভালোলাগা-, আমি শপথ করে বলতে পারি, বলতে পারি জীবনের সব স্বপ্নের কথা হিসেবে রেখেও তা আর পাইনি কখনো। গল্পটা এমনই, অসম্পূর্ণ, গুনে গুনে বছর তের আগের ঠিক!

কেটে গেছে তারপর তের বছর! আর কেটে যেতে যেতেও, যেতে যেতেও কেটে, এভাবেই পদ্মা মেঘনায় বয়ে গেছে জল আর জল! বয়ে গেলে এভাবে এরপর গতকাল, গতকাল ছোটবেলার সে বন্ধুদের, সে স্মৃতিময় দিনগুলোর একজন, এফবিতে রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলো, জিজ্ঞেস করলো ‘চিনতে পেরেছিস’? আমিতো অবাক, ভাবতে পারা যায় তের বছর পর তাও এভাবে! ইনবক্সে নাম্বার চাইলাম, চাইতেই দিলো। খানিক আলাপচারিতার পরই জানতে চাইলাম ওর কথা, সেই প্রজাপতির কথা। বললো, সেই যে চলে গেলি তুই, চলে এলি একেবারে এরপর ও এসেছিলো, এসেছিলো এড্রেস চাইতে তোর! জানালো আরও, জানালো আমরা চলে আসার পরের বছর ওরাও চলে গেছে!

এরপর থেকে, এরপর পুরোটা রাত আর সারাটা দিন জুড়ে আজ কেবল মনে পড়ছে ওকে, মনে পড়ছে সেই ঝগড়া, সেই অভিমান, শেষ অভিমান আমাদের! মনে পড়ছে বাবার সেই ট্রান্সফার, চলে আসা সেই, চলে আসা না বলেই! গতকাল এরপর থেকে, সে ব্যাপারটার পর থেকে আমার পুরোটা দিন আর রাত জুড়ে কেবলই চোখে ভেসে ভেসে উঠছে তার বিষণ্ণ মুখ, ভেসে ভেসে উঠছে অশ্রুসিক্ত দু’চোখ তার।

২৫ ডিসেম্বর ২০১৩
বিকেল, উত্তরা।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।