আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি আগামিকাল



খুব বেশিদিন আগের কথা না, এইতো বছর পাঁচেক হবে হয়তো, বরিশাল বেড়াতে গিয়েছিলাম। একদিন এক বন্ধুর সাথে রিকসায় উঠলাম আর রিকসার চালক ছিলো একটি ছোট্ট ছেলে। দশ কি এগারো বছর বয়স হবে ছেলেটির।

ইচ্ছে করেই উঠেছিলাম ওর রিকশায়। খুব কষ্ট করে টানছিলো রিকসা কিন্তু সবসময়ই মুখে হাসি।

জিজ্ঞেস করলাম,

-কিরে তুইতো প্যাডেল নাগাল পাস্ না তো রিকসা নিয়ে বেরিয়েছিস্ কেন? তখন ছেলেটি জবাব দেয় তার বাবা খুব অসুস্থ, রিকশা নিয়ে বের হতে পারছে না। আর এই রিকশাটা ধারের টাকায় কেনা, পাওনাদারদের টাকা দিতে না পারলে রিকসা নিয়ে যাবে।

মনটা খুব খারাপ হলো। বললাম,

-দেখি রিকশা বামে রাখ আর তুই পিছে বস্, আমি চালাচ্ছি রিকশা। চালানো শুরু করলাম, নাহ! খুব কষ্টের কাজ।

প্যাডেল করলেও সামনে যেতে চায় না। একবারতো প্রায় পাশের খাদে পড়তে পড়তে বেঁচে গেলাম।

যাইহোক ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলাম তোর বাসা কোনদিকে, তোরবাসায় যাবো। একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিল কিনা কে জানে। বললাম

-ভয়ের কিছু নাই।

তোর বাবাকে একটু বকা দিবো আর তোকে স্কুলে ভর্তি করে দিবো।

শেষে ওকে স্কুলে ভর্তি করা হয়নি কিন্তু ওর বাবাকে বকা ঠিকই দিয়েছিলাম। পকেটে আর একাউন্টে যতগুলো টাকা ছিলো হাতে দিয়ে বললাম

-কালকে আবার আসবো, যদি দেখি ছেলে স্কুলে না গিয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়েছে তাইলে কিন্তু খবর আছে।

সেই আগামীকাল গত পাঁচ বছরেও আসেনি, কিন্তু মনে মনে একটু তৃপ্তি পেয়েছিলাম। আমার একটু চেষ্টায় যদি একটি ছেলে পড়াশোনায় ফিরে আসে তাতো আর কম নয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.