আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফের তৃণমূলে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

নির্বাচনমুখী আন্দোলনকে নতুন করে চাঙ্গা করতে ফের তৃণমূলে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে তার টানা সফরসূচি শুরু হবে। দেশের বৃহত্তর জেলাগুলোতে জনসভা করবেন তিনি। সংগঠন গোছানো, মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি সরকারবিরোধী আন্দোলনে নতুনমাত্রা যোগ করতেই বেগম জিয়া এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর আগে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা আন্দোলনকালে সারা দেশে নিহত নেতা-কর্মীদের সান্ত্বনা দিতে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলো সফর করবেন। একইভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, অগি্নসংযোগসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোও পরিদর্শন করবেন তারা। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সহিংসতা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তে চারটি কমিটি করেছেন বেগম জিয়া। বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও প্রকৃত ঘটনা তদন্তে তৃণমূলে যাবেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজনৈতিক আন্দোলনের গতিপ্রবাহ বিভিন্ন সময় পরিবর্তিত হয়। এরই অংশ হিসেবে আমরা তৃণমূলে সফর করার চিন্তাভাবনা করছি। সংগঠনকে গতিশীল করা, সর্বস্তরের জনগণের কাছে ভোটারবিহীন নির্বাচনের অনিয়ম তুলে ধরার পাশাপাশি জনসম্পৃক্ত আন্দোলনই আমাদের লক্ষ্য। জানা গেছে, নির্বাচনের পূর্বাপর আন্দোলনের নানা দিক নিয়ে চূলচেরা বিশ্লেষণ করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। পেছনের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে দেশ ও জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই কারণে আপাতত রাজপথের জনসম্পৃক্ত অহিংস আন্দোলন হিসেবে দেশব্যাপী জনসভা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার বাধ্য না করলে সহিংস কর্মসূচিতে যাবে না দলটি। আর কৌশলগত কারণে আপাতত জামায়াতকে ছাড়াই কর্মসূচি দেবে বিএনপি। নানামুখী চাপের কারণে জামায়াতও হরতাল-অবরোধ থেকে বেরিয়ে এসে পৃথকভাবে রাজপথে সভা-সমাবেশ কর্মসূচি দেবে। বিএনপির সঙ্গে এ নিয়ে তাদের কৌশলগত বোঝাপড়া হয়েছে। বুধবার রাতে পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জেলা সফরে যাওয়ার কথা বেগম জিয়াই জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় সামনের দিনগুলোতে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দেওয়া হবে। সরকার বাধ্য না করলে বিএনপি কোনো সহিংস কর্মসূচিতে যাবে না। একই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, এ সরকার এক বছরের বেশি টিকবে না। তারা দেশে-বিদেশে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আন্দোলনে বিরোধীদলীয় নেতার পদ না থাকায় তার কোনো সমস্যা হবে না জানিয়ে পেশাজীবী নেতাদের উদ্দেশে বলেন, '৮৬-র আন্দোলনেও তিনি বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন না। তারপরও জনগণকে সম্পৃক্ত করে একটি সফল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সূত্র জানায়, সারা দেশে বৃহত্তর ১৯টি জেলা বেগম জিয়া সফর করবেন। সাতক্ষীরা, যশোরসহ উল্লেখযোগ্য জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করবেন তিনি। সফরসূচির প্রথম পর্যায়ে ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, ঠাকুরগাঁও, নাটোরকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আবারও সরকার গঠন করায় মাঠের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা চলে এসেছে। একইভাবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি হঠাৎ করে স্থগিত করায় তৃণমূলের গতি কমে গেছে। সাংগঠনিকভাবেও বিভিন্ন স্থানে দ্বন্দ্ব চলছে। পাশাপাশি দেশবাসীর কাছে ভোটারবিহীন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের নানা অনিয়মও বেগম জিয়া তুলে ধরবেন। এসব বিবেচনায় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে নতুনভাবে চাঙ্গা করতেই বিএনপি চেয়ারপারসনের নেতৃত্বে এ সফর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবেই। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্দোলনের কৌশলও গ্রহণ করতে হবে। হরতাল-অবরোধে বিএনপিকে রাজপথেই দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ। দেখামাত্রই গুলি করেছে। পুলিশের গুলিতে ইতোমধ্যে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। সব কিছু বিবেচনায় রেখেই আগামীতে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দেওয়া হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.