আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অমরত্বের আশায়

এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে কেউই যেতে চায় না। অথচ মৃত্যু অমোঘ সত্য। এরপরও সৃষ্টির আদি থেকেই মানুষ অমরত্ব লাভের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অমরত্ব পাওয়ার জন্য বিচিত্র সব উপায় আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে। কেউ করেছে অমৃতের সন্ধান, কেউ ধ্যানমগ্ন থেকেছে আবার কেউ চেষ্টা করেছে জাদুবিদ্যার আশ্রয়ে।

আবার বিজ্ঞানীরাও চেষ্টা চালাচ্ছেন অধরা এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে। কিন্তু মৃত্যু সেই অজেয়ই থেকে গেছে। আর সে কারণেই এই আধুনিক সময়ে এসেও অমরত্বের লোভে মানুষের চোখ জ্বল জ্বল করে ওঠে। কিন্তু সত্যি কী অমরত্ব লাভ সম্ভব? কী সম্ভব, নাকি শুধুই রূপকথা?

 

'মানুষ মরণশীল' চিরন্তন সত্য এ বাক্যটির দিন বুঝি ফুরিয়ে এলো। বিজ্ঞান যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে আর মাত্র বছর ত্রিশেকের ভেতর মানুষের জৈবিক আয়ুষ্কাল অসীম পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

কয়েক বছর আগে টাইম ম্যাগাজিনে করা '২০৪৫ দ্য ইয়ার মেন বিকামস ইমরটাল' শীর্ষক প্রতিবেদনটি বিশ্বে দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০৪৫ সম্ভবত সেই বছর, যখন মানুষ অমরত্ব লাভ করবে। এ বিশ্বাসের শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, যদি আপনি মনে করেন মানুষ ও যন্ত্র এই দুই মিলে 'এক' হয়ে যাওয়া সম্ভব। স্বাগত জানানো হবে 'সিঙ্গুলারিটি বিপ্লব'কে।

মানুষ ও যন্ত্র এখন একে অন্যের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পথে।

বর্তমানে ডেডলাইন ২০৪৫ কে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছেন বিশ্বের বিখ্যাত সব বিজ্ঞানী। সত্যিই কী ২০৪৫ সালের পর মানুষ আর মরবে না! মানুষ অমর হতে পারবে? বিজ্ঞানীদের দাবি ওই সময়ের মধ্যে কম্পিউটার হবে অতিমাত্রায় বুদ্ধিমান। শুধু বুদ্ধিমানই নয়, মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান। যখন এটা ঘটবে_ মানবতা, আমাদের দেহ, মন এমনকি আমাদের সভ্যতা পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে যাবে। সে অবস্থা থেকে আর পেছনে ফেরা যাবে না।

কম্পিউটার দ্রুতগতির হচ্ছে বলে মানুষেরও গতি বাড়ছে। এভাবে কম্পিউটারের গতি বাড়তে বাড়তে এমন এক সময় আসবে যখন তার বুদ্ধিমত্তা মানবজাতির সমান হয়ে যাবে। একে বলা যেতে পারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এ সময় কম্পিউটার আমাদের সমকক্ষ হয়ে যাবে। ফলে শুধু পাটীগণিতই দ্রুততম সময়ে করা যাবে না, এর মাধ্যমে পিয়ানোর মিউজিক কম্পোজও করা যাবে।

তা ব্যবহার করে গাড়ি চালানো যাবে। বই লেখা যাবে। নৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। এমন সব হাজারো প্রশ্নের সমাধান দিয়ে দেবে কম্পিউটার। এভাবে কম্পিউটারকে উন্নত করতে করতে এমন এক পর্যায়ে যাবে, যখন সেই কম্পিউটার আমাদের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে।

তখন একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানীর চেয়ে তারই কম্পিউটার বেশি জানবে। এমন কম্পিউটার অবিশ্বাস্যরকম দ্রুত গতিতে কাজ করবে। মুহূর্তেই তা অসংখ্য ডাটা নিয়ে কাজ করবে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, মানুষের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান কম্পিটারের আচরণ নিয়ে পূর্বাভাস করা এখন হয়তো সম্ভব। কিন্তু তাকে এক দিন আমাদের ব্যক্তির মতো করে দেখতে হবে।

তার সঙ্গে জ্ঞান-বিজ্ঞান বিষয়ে তথ্য শেয়ার করতে হবে। এ সব নিয়ে অনেক থিউরি আছে। হতে পারে এক দিন আমরা তাদের সঙ্গে সুপার ইন্টেলিজেন্স সাইবর্গ হিসেবে আবিভর্ূত হব। হতে পারে আমাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের বলিরেখার চিকিৎসা দিতে সাহায্য করবে এবং আমাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য জীবন দান করবে। হয়তো আমাদের চেতনা স্ক্যান করে কম্পিউটারের মধ্যে ঢুকিয়ে দেব।

আর এভাবেই ভাচর্্যুয়ালি বা কৃত্রিমভাবে আমরা একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে চিরদিনের জন্য বেঁচে থাকব। কম্পিউটার হয়তো আমাদের মানবিকতায় রূপ নেবে এবং আমাদের বিলুপ্তি ঘটবে। এমন পরিবর্তনকে বলা হয় সিঙ্গুলারিটি। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, যখন আমরা সিঙ্গুলারিটির কথা বলছি তখন বিষয়টি সায়েন্স ফিকশনের মতো মনে হতে পারে। তবে এটা সায়েন্স ফিকশনের একটি পূর্বাভাস ছাড়া কিছু নয়।

এটা একটি হালকা বিষয় নয়। এটা আগামীর পৃথিবীর জীবনধারার একটি মারাত্দক গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব। বুদ্ধিবৃত্তিক অনেক তত্ত্ব আছে সায়েন্স ফিকশনে। তাতে বলা হয় অতিমাত্রায় বুদ্ধিকে একত্রিত করে একটি সাইবর্গ তৈরি করা যায়। কিন্তু সিঙ্গুলারিটি এমন একটি তত্ত্ব, যা সযত্ন বিবর্তনকে নির্দেশ করে।

মানুষ আজকাল এই তত্ত্বটি বোঝার জন্য অনেক অর্থ খরচ করছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা প্রতিষ্ঠা করেছে সিঙ্গুলারিটি ইউনিভার্সিটি। এর বয়স এখন তিন বছর। সেখানে গ্রাজুয়েট ও নির্বাহীদের ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি কোর্স পড়ানো হয়। এর স্পন্সর হলো গুগল।

এর প্রধান নির্বাহী ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ গত বছর এ নিয়ে কথা বলেছেন। এখন মানুষ দলে দলে এ বিষয়ে জানতে চায়। কিন্তু তারা যা জানতে চান সিঙ্গুলারিটি তার চেয়েও অনেক বেশি।

এ ধারণাটিকে যদি প্রতিষ্ঠিত করা যায় তাহলে তা হবে মানবজাতির ভাষা আবিষ্কারের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিঙ্গুলারিটি শব্দটি এসেছে জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে।

এটা সময় ও স্থানকে নির্দেশ করে। যেমন একটি ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বরের ভেতরের অবস্থাকে সিঙ্গুলারিটির সঙ্গে তুলনা করা চলে। সেখানে সাধারণ পদার্থবিদ্যার কোনো নিয়ম-কানুন খাটে না। বুদ্ধিবৃত্তিক অনেক তত্ত্ব আছে সায়েন্স ফিকশনে। তাতে বলা হয়, অতিমাত্রায় বুদ্ধিকে একত্রিত করে একটি সাইবর্গ তৈরি করা যায়।

কিন্তু সিঙ্গুলারিটি এমন একটি তত্ত্ব, যা সযত্ন বিবর্তনকে নির্দেশ করে।

মানুষ আজকাল এই তত্ত্বটি বোঝার জন্য অনেক অর্থ খরচ করছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা প্রতিষ্ঠা করেছে সিঙ্গুলারিটি ইউনিভার্সিটি। এর বয়স এখন তিন বছর। সেখানে গ্রাজুয়েট ও নির্বাহীদের ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি কোর্স পড়ানো হয়।

এর স্পন্সর হলো গুগল। এর প্রধান নির্বাহী ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ গত বছর এ নিয়ে কথা বলেছেন। এখন মানুষ দলে দলে এ বিষয়ে জানতে চায়। কিন্তু তারা যা জানতে চান সিঙ্গুলারিটি তার চেয়েও অনেক বেশি। এই ধারণাটিকে যদি প্রতিষ্ঠিত করা যায় তাহলে তা হবে মানবজাতির ভাষা আবিষ্কারের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সিঙ্গুলারিটি শব্দটি এসেছে জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে। এটা সময় ও স্থানকে নির্দেশ করে। যেমন একটি ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বরের ভেতরের অবস্থাকে সিঙ্গুলারিটির সঙ্গে তুলনা করা চলে। সেখানে সাধারণ পদার্থবিদ্যার কোনো নিয়ম-কানুন খাটে না।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।