আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উচ্চশিক্ষার অন্যতম গন্তব্য ব্রিটেন

বিগত বছরগুলোয় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কবল থেকে বাদ যায়নি ব্রিটেনও। তা সত্ত্বেও ব্রিটেনের উচ্চশিক্ষার মানে কোনো অবনতি ঘটেনি। বরং দেশটির উচ্চশিক্ষার মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাম্প্রতিক বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে এমনটিই উঠে এসেছে। কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংস অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ ৬টি ইউনিভার্সিটির মধ্যে ৪টিই ব্রিটেনের।

ব্রিটেনের উচ্চশিক্ষার মান যে ওয়ার্ল্ড ক্লাস লেভেলের প্রমাণ বিশ্বের নেতৃস্থানীয় রিসার্চ নেশন হিসেবে দেশটির পরিচিতি। ইন্টারন্যাশনাল কমপেরাটিভ পারফরমেন্স অব দ্য ইউকে রিসার্চ বেসের মতে, ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পরিচালিত রিসার্চগুলোর ৫৪ শতাংশ হয় ওয়ার্ল্ড লিডিং পর্যায়ের বা আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন। তাই ব্রিটিশ শিক্ষা মানেই হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন এবং সৃজনশীল হওয়ার ক্ষেত্রে সামগ্রিক উৎসাহ উদ্দীপনা যোগানো। এ লক্ষ্য পূরণে শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের সেরাটা অর্জন করতে পারে সেই ব্যাপারে তাদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান। আর উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার ব্যাপারে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো দেশটির সরকার ও শিক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর বেঁধে দেওয়া মান মেনে চলে।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির অনুমতি দেওয়ার সময়ও তারা এর প্রতিফলন ঘটায়।

ব্রিটেনে উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করে ইউকে বর্ডার এজেন্সি [ইউকেবিএ]। অর্থাৎ কেউ ব্রিটেনে অভিবাসন বা পড়াশোনার সুযোগ পাবে কিনা তা নির্ভর করে ইউকেবিএ এর উপর। তবে উচ্চশিক্ষা বা অভিবাসন- এ দুই ক্ষেত্রেই ইউকেবিএ'র আরোপিত শর্তাবলী পূরণ করতে পারলে ভিসা পাওয়া তেমন কোনো কঠিন বিষয় নয়। তাইতো প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ব্রিটেনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে আসে।

এসব শিক্ষার্থী ব্রিটেনে পড়াশোনা করে সন্তুষ্টও। দেশটির পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের উপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের ৯৭ শতাংশ দেশটির শিক্ষাদানের মান নিয়ে ইতিবাচক মত দিয়েছে।

ব্রিটেনে ছাত্র ভিসার ক্ষেত্রে ৪টি ক্যাটাগরি রয়েছে। অর্থাৎ কোনো শিক্ষার্থী ব্রিটেনে স্বল্প মেয়াদে [৬ মাস] বা দীর্ঘ মেয়াদে পড়াশোনা করতে পারে। স্বল্প মেয়াদি কোনো কোর্স বা ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ কোর্স করার ক্ষেত্রে দুই ধরনের ভিসা দেওয়া হয়।

একটি হচ্ছে চাইল্ড ভিজিটর ভিসা আরেকটি স্টুডেন্ট ভিজিটর ভিসা। কারও বয়স যদি ১৮ বা তার বেশি হয় এবং সে যদি ৬ মাসের কোনো কোর্সে অংশ নিতে চায় তবে তাকে স্টুডেন্ট ভিজিটর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। তবে কেউ যদি শুধু ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ কোর্সে অংশ নিতে চায় তবে তাকে এঙ্টেন্ডেড স্টুডেন্ট ভিজিটর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এ ভিসা নিয়ে ১১ মাস পর্যন্ত দেশটিতে বৈধভাবে অবস্থান করা যাবে। অপরদিকে দীর্ঘ মেয়াদি কোর্সে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও দুই ধরনের ভিসা দেওয়া হয়।

তবে এক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান সেটিকে অবশ্যই ইউকেবিএ'র ট্রাস্টেড স্পন্সর লিস্টে থাকতে হবে। টায়ার ফোর [চাইল্ড] স্টুডেন্ট ভিসা ও টায়ার ফোর [জেনারেল] স্টুডেন্ট ভিসা- দীর্ঘ মেয়াদে এ দুই ভিসা দেওয়া হয়। কেউ যদি ব্রিটেনে কোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চায় তাহলে তাকে টায়ার ফোর [জেনারেল] স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে যারা ব্রিটেনে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা করতে যাচ্ছে তারা টায়ার ফোর [জেনারেল] স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে দেশটিতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অনেকেই ব্রিটেনে স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতে চায়।

অর্থাৎ কাজ করে পড়াশোনার খরচসহ অন্যান্য খরচাদি মেটাতে চায়। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, স্টুডেন্ট ভিজিটর ভিসা বা চাইল্ড ভিজিটর ভিসায় গিয়ে ব্রিটেনে কারও কাজ করার সুযোগ নেই। তবে যারা দীর্ঘ মেয়াদি কোর্সে অর্থাৎ টায়ার ফোর [জেনারেল] স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে যায় তাদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টা ও ছুটির সময়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইউকেবিএ- এর ওয়েবসাইট www.ukba.homeoffice.gov.uk ভিজিট করতে পারেন।

বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে আবেদনপত্র পূরণসহ প্রাথমিক ব্যাপারগুলো অনলাইনে সম্পন্ন করতে হয়।

তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে ইন্টারনেট এখন হাতের নাগালে। তাই অনেক শিক্ষার্থী নিজ উদ্যোগে পছন্দমতো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের আবেদন বা অ্যাপ্লাই লিংকে গিয়ে আবেদনের প্রাথমিক দিকগুলো সেরে নেয়। তবে আবেদন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধাপ ও জটিলতা থাকায় অনেকেই বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাংলাদেশি পার্টনারের [কনসালটেন্সি ফার্ম] সহায়তা নিয়ে থাকেন। ফার্মগুলো এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান বাছাই করে দেওয়াসহ আবেদনের প্রাথমিক কাজগুলো করে দেন। আবেদনের পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাস [Confirmation of Acceptance for Studies]  লেটার পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় বিষয়ে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়ে থাকেন যা ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে।

ব্রিটেনে পড়াশোনার ব্যাপারে আবেদনের বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে সহায়তা প্রদান করে ঢাকার কুড়িলে অবস্থিত সেগা গ্লোবাল কনসালটেন্ট। এটি দেশের স্টুডেন্ট কনসালটেন্সি ফার্মগুলোর মধ্যে অন্যতম। ব্রিটেনসহ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার ব্যাপারে জানতে ০১৭১৩০২৪০২৪ ডায়াল করতে পারেন। ভিজিট করতে পারেন segabd.com.  সেগা শুধু ব্রিটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পার্টনারশিপ নিয়ে কাজ করছে না। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও প্রতিষ্ঠানটির পার্টনারশিপ রয়েছে।

ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহ জামাল বলেন, 'ব্রিটেনে যারা পড়াশোনা করতে চাচ্ছে তাদের উচিত চোখ কান খোলা রেখে আগানো। তা না হলে শেষ মুহূর্তে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের সময় শিক্ষার্থীদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। তা না হলে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আবেদনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীকে ভিসা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদেরও আবেদনের বিভিন্ন প্রক্রিয়াসহ কাগজপত্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

তাহলেই বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন পূরণ হবে। আর বিশ্বস্ত ও নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সেবা দিয়েই শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.