আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রেম এক দিন এসেছিল নীরবে...

ফিক করে হেসে দিয়েছিলাম

মৌসুমী

 

ওমর সানির প্রথম ছবি 'চাঁদের আলো' দেখেই তাকে ভালো লেগে যায়। ওর ম্যানলি ভাবটা আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। পরে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বুকের ভেতর ভালোবাসার ধুঁক ধুঁকানিটা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু আকারে ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করলেও সরাসরি বলার সাহস পাইনি। যদিও ওর হাব-ভাব দেখে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম সেও আমাকে চায়।

আমার অনুমানই সত্যি হলো। বসন্তের এক সুন্দর সকালে ও আমাকে প্রপোজ করল। মনে হলো এই দিনটির জন্য যেন শত বছর প্রতীক্ষার প্রহর গুনেছি। ওর ভালোবাসার প্রথম কথা ছিল সেই চিরাচরিত ভঙ্গিতে বলা 'আমি তোমাকে ভালোবাসি'। ওই মুহূর্তে ভীষণ নার্ভাস সানিকে দেখে ফিক করে হেসে দিয়েছিলাম।

পরে বেচারার জন্য মায়া হয়েছিল। তারপর আমরা হাতে হাত রেখে বসন্তের সকাল থেকে হেমন্তের উজ্বল বিকালের পথে হেঁটে চললাম।

 

সাহস করে বলেই দিলাম

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

 

তিশার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার মুহূর্ত থেকেই আমি এক প্রেমকাতর যুবক। কিন্তু মনের কথা বুক পর্যন্ত এসে ঠেকে যায়। প্রেমের কথা বলার জন্য হন্যে হয়ে সুযোগ খুঁজি।

একথা-সেকথা বলে ওকে নিয়ে সময় নষ্ট করি। আসল কথা আর বলা হয় না। মনের ভেতর দুঃখের বসতভিটা ক্রমেই চওড়া হয়। এক সময় দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়। অতঃপর মেরুদণ্ডকে সোজা করে তার সামনে দাঁড়ালাম।

কালীগঞ্জের এক শুটিং স্পটে এক নিঃশ্বাসে সাহস করে তাকে বলেই দিলাম 'আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই'। আমার কথা শুনে ও হতভম্ব। কিন্তু বিমুখ করেনি। তারপর হাতে হাত রাখলাম।

 

মনের না বলা কথা

অপু বিশ্বাস

 

স্কুলজীবনে আমি প্রথম প্রেমে পড়েছিলাম।

তখন নবম-দশম শ্রেণীর ছাত্রী। একটি ছেলেকে অল্প অল্প ভালো লাগতে শুরু করেছিল। কিন্তু বলব বলব করেও বলতে পারছিলাম না। কারণ, ভয়। যদি বাড়ির কেউ জানতে পারে! জানাজানি হয়ে গেলে, আমার গলা কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার একটা প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

আমি বলতে না পারলেও ছেলেটি ঠিকই বলেছিল। এক দিন কাঁপা কাঁপা হাতে একটি গোলাপ ফুল নিয়ে এসে ছেলেটি বলেছিল, 'তোমাকে খুব ভালো লাগে। আমি তোমাকে ভালোবাসি। '

কথাটি শুনে আমি ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছিলাম সেদিন। শুনে চুপ করে চলে এলাম।

কিছুই বলা হয়নি। আরেক দিন ছেলেটির সঙ্গে দেখা। দাঁড়িয়ে আছে উত্তরের আশায়। আমার খুব ইচ্ছা করছিল তার ডাকে সাড়া দিতে। কিন্তু পারছিলাম না।

কারণ সেই ভয়, পরিবারের ভয়। তাই তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত পাল্টালাম। কখনোই প্রেমের ডাকে সাড়া দেব না। উল্টো ছেলেটিকেই খুব বকা দিয়ে চলে এলাম। আর নিজের মনের কথা মনেই চেপে রাখলাম।

 

প্রথম প্রেমেই ছ্যাঁকা

শাকিব খান

 

সিনেমায় মাত্র নাম লিখিয়েছি। স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমি খুব ভাগ্যবান, ক্যারিয়ার শুরুই হয়েছে নায়ক হিসেবে। তাই সবাই আমাকে 'নতুন নায়ক' বলে ডাকে। এটা শুধু এফডিসিতেই নয়, আমার বন্ধু-বান্ধব, আত্দীয়-স্বজনরাও বলে_ নতুন নায়ক।

ক্যারিয়ারের শুরুতে ব্যস্ততা খুব বেশি নয়। তাই মাঝে মধ্যেই আমার এক আত্দীয়ের বাসায় যেতাম। এক দিন সেই বাসায় একটি মেয়েকে দেখলাম। ভালোই লাগল। যত দেখি ভালো লাগা তত বেড়ে যায়।

বেশি কাছে এলে বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে ওঠে। কীভাবে যেন মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেলাম। কিন্তু পরিচয় নেই। একাকী সময়ে তার চেহারা আমার মনের মধ্যে খেলা করে। কি করব বুঝতে পারছিলাম না।

যা থাকে কপালে, এক দিন সাহস করে মেয়েটির সঙ্গে পরিচিত হতে গেলাম। পরিচিত হলাম। বেশ ভালোই লাগল। প্রেম যেন আরও বেড়ে গেল। কিন্তু মনের কথাটি তখন খুলে বলা হয়নি।

সাহস প্রয়োজন। সাহস পাচ্ছিলাম না। এক দিন সিদ্ধান্ত নিলাম, যে করেই হোক_ মনের কথাটি খুলে বলতে হবে। গেলাম বলতে। সামনে গিয়ে বলব বলব করেও বলতে পারছিলাম না।

আমি যখন দ্বিধাগ্রস্ত মেয়েটি তখন বলে ফেলল। তবে সেটা প্রেমের নয়, বিয়ের। মেয়েটির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। কথাটি শুনে বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম। মনের প্রেম মনে পুষে রেখে মস্ত একটা ছ্যাঁকা খেয়ে বসলাম।

প্রথম প্রেমেই ছ্যাঁকা।

 

ও আমাকে 'ময়না' বলে ডাকত

মাহিয়া মাহী

 

হ্যাঁ, প্রেম এসেছিল। নীরবেও বলা যায়, আবার সরবেও বলা যায়। ছেলেটি ছিল আমাদের প্রতিবেশী। দেখতে কালো হলেও খুব মিষ্টি।

রোজ বিকালে আমি খেলতে যেতাম মাঠে। ছেলেটিও থাকত। মাঠের অন্য ছেলেরা ছিল তার ঈর্ষার কারণ। কাউকে আমার কাছে ঘেঁষতে দিত না। আমি টের পেতাম, কি হচ্ছে।

সে যে আমাকে পছন্দ করে, ভালোবাসে তা বুঝতাম। এক দিন শুনি, সে আমার একটি নামও দিয়েছে_ ময়না। ও আমাকে ডাকত ময়না বলে, আমি ডাকতাম মোনা।

এটা আমার স্কুলবেলার খবর। আমার এক বান্ধবী এক দিন একটি চিঠি নিয়ে আসে।

মোনা পাঠিয়েছে। এ নিয়ে এক নাটকীয় ঘটনা ঘটে গেল। আমার মায়ের ভয়ে বান্ধবী পাশের বাসার ছাদ ডিঙিয়ে আমাদের ছাদে এসে চিঠিটি দেয়। আমি প্রচণ্ড ভয় পাই। তাই চিঠিটি স্পর্শই করিনি।

পরদিন স্কুলে গিয়ে বান্ধবী আর আমি মিলে চিঠি খুলি। অবাক হই খুব। মোনা নিজের হাত কেটে চিঠি লিখেছে। সঙ্গে কাটা হাতের একটি ছবিও পাঠিয়েছে। খুব কষ্ট পাই।

তাই ভাবি, আমিও হাত কেটে রক্ত দিয়ে মনের কথা লিখে উত্তর দিব।

উত্তর লেখার জন্য হাত কাটতে গিয়ে আর পারছিলাম না। প্রচণ্ড ভয় পেলাম। ভয়ে কিছুতেই হাতে ব্লেড ছোঁয়াতে পারলাম না। অনেক চেষ্টা করেও পারলাম না।

তাই রক্ত দিয়ে উত্তর লেখা আর হলো না।

এভাবেই চলছে আমাদের নীরব প্রেম। মায়াময় দিনগুলো এখনো মনের কোণে জমে আছে। কিন্তু ব্যর্থতায় ছেয়ে গেল প্রেম আমার। এক দিন হঠাৎ করেই শুনি, মোনার বিয়ে হয়ে গেছে।

সেকি হৃদয় ভাঙা ঢেউ আছড়ে পড়ল_ বোঝাতে পারব না। কষ্টমাখা দিনগুলো কাটছিল। সময় বয়ে গেল ঢের। আমিও চলচ্চিত্রে পা রাখলাম। এখনো কাজের ফাঁকে, কিংবা একাকী নির্জনে মোনার কথা মনে পড়ে।

আসলে প্রথম প্রেমের স্মৃতি মুছে যায় না কখনোই।

তোমাকে আমার ভালো লেগেছে

তাহসান

 

মিথিলাকে ভালোবাসার প্রস্তাব দিতে গিয়ে সাত সতের ভাবার সময় পাইনি। কি এক অস্থিরতায় মনটা ছটফট করছিল। তাই বিদ্যুৎ গতিতে বলেই দিলাম 'তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। ' ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্নই ছিল বলা যায়।

সেও সময় নষ্ট না করে 'হ্যাঁ সূচক' সম্মতিতে মাথা নাড়ে। তার সঙ্গে প্রথম দেখা আমারই বাসায়। অটোগ্রাফ নিতে এসেছিল। প্রথম দেখাতেই মনের ভেতর ভালোবাসাগুলো কেমন যেন লতিয়ে ওঠে। তারপর সুযোগ পেয়ে মনের কথা বললাম এবং ভালোবাসার রাজ্য জয় করে নিলাম।

এখন সে আমার জীবনের রানী।

 

বারবি পুতুল ও আই লাভ ইউ

মেহজাবিন

 

আমি একটু টমবয় টাইপের। ছোটবেলায় আরও বেশি মাত্রায় টমবয় ছিলাম। তাই স্বাভাবিকভাবে মেয়েদের থেকে ছেলেদের সঙ্গেই আমার সখ্য বেশি ছিল। খেলাধুলা আর হৈহুল্লোড়ে মেতে থাকতাম।

আর এই প্রেক্ষাপটটা ওমানে। কারণ আমার ছোটবেলা কেটেছে ওখানেই। আমার এক সহপাঠী বন্ধু আমাকে প্রথম প্রেমের প্রস্তাব দেয়। একেবারে সিনেমাটিকভাবে। আমি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট চেয়ারে বসতাম।

এক দিন এসে দেখি আমার চেয়ারে ভালোবাসার সিম্বল অাঁকা। বুঝিনি কে করেছে। ওটা মুছে বসে পড়ি। আরেক দিন সহপাঠী বন্ধু একটি বারবি পুতুলের গায়ে 'আই লাভ ইউ' লিখে রেখেছিল। তখনো ওই নিদর্শনের মানে যে প্রেম তা বুঝতে পারিনি।

এখন বুঝি। মজা পাই।

 

প্রথম প্রেমিককে দেখিনি

শখ

আমার প্রথম প্রেম খুবই অদ্ভুত। প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছি, কিন্তু প্রেমিককে দেখিনি। এটা আমার সাত কিংবা আট বছর বয়সের ঘটনা।

প্রথম প্রথম বাসার টিএন্ডটি ফোনে কল আসত। নিয়মিতই আসত। কিন্তু ফোন ধরলে কেউ কোনো কথা বলত না। পুরোপুরি চুপ। ভারী বিরক্ত লাগত।

এক দিন স্কুলে যাওয়ার পথে একটি ছোট ছেলে আমার হাতে একটি ভাঁজ করা কাগজ দিয়ে গেল। আমি তো অবাক। ধুপ করে কাগজটি ব্যাগের মধ্যে লুকিয়ে রাখলাম। ঘরে ফিরে কাগজে কী লেখা রয়েছে সেটা পড়ার জন্য ব্যাকুল হলাম। তাকিয়ে দেখি পত্রদাতা চিঠিতে লিখেছে_ 'কেমন আছ?' আর কিছু লেখা নেই।

এটাই আমার জীবনের প্রথম প্রেমপত্র। কিন্তু নায়ক কে! জানতে পারিনি কোনোদিন।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.