আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বীরের দাম শোল আনা / বাংলার সব মানুষের জানা

****** ইতিহাস ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার বিরত্ত গাঁথা । বাংলার হৃদয়ে । “”””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””” প্রজা বিদ্রোহ আনিক মানিক দুই ভাই কিংবদন্তী । ব্রিটিশ শাসন আমলে জমিদারদের অত্যাচার নীড়ীপন এর কাহিনী আমরা জানি । তেমনি ভাটি বাংলার প্রতাবশালি মুসলিম বনেদি জমিদার তুতা মিয়াঁ ।

পরগনা সেলবরষ । তার জমিদারি উত্তরের হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিন কংস নদের তির ঘেঁসে নেত্রকোনার কিয়দংশ এবং পূর্ব দক্ষিন সুনামগঞ্জ পর্যন্ত বিশ্রিত ছিল । হাতি শালে হাতি ঘোড়া শালে ঘোড়া আর ছিল জমিদারদের পাইক পেয়াদা হিংশ্র লাটিয়াল বাহিনী । একটু অবাধ্যতার কারনে অনেক প্রজার বাড়ি ঘর ক্ষেত খামার মান সম্মান সব ধুলুয় মিশিয়ে দেওয়া হত । পাশেই সিঙরা গ্রামের নওশের আলীর দুই পুত্র আনিক মানিক বাবার স্বাধীন আদর্শে বেড়ে উটে ।

কথিত রয় মা সন্ধ্যা রানী পুত্রদের দৈনিক ১০ কেজি দুধ খাওয়াইতেন । ছিল বলিষ্ঠ সুটাম দেহের অধিকারি । আশ পাশের ৪০ গ্রামের মধ্য এমন কোন মানুষের সন্ধান ছিলনা যে তাদের সাথে লড়াই করার সাহস রাখে । বাবার মৃত্যুর পর নিজেদের জমি নিজেরাই নিড়ায় , তদারকি ,ক্ষেত রোপন , এমনকি পানি সেচের কাজও তারা করে । এবং বছরে হাজার মন ধান গোলায় ভরে ।

এক কথায় জমিদারি হালে সুখেই তাদের দিন অতিবাহিত হয় । বাধ সাধে জমিদার , খাজনা জমা দেওয়ার জন্য দুভাই কে খাস মহলে ডেকে পাটায় । সন্ধ্যা রানি জমিদার কে খাজনা দিতে অস্বীকার করে । এতে তুতা মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে দুভাই কে ধরে নিয়ে যাবার জন্য হাজার খানেক লাটিয়াল বাহিনি প্রেরন করে । দুভাই খালিজানা নদীর পাড়ে ছাও গাছের কোন দিয়ে পানি সেচায় ব্যস্ত ছিল ।

লাটিয়াল বাহিনী তাদের ঘেরাও করলে । , আনিক মানিক দুভাই বাইস মনি কোনের খুঁড়া হাতে লয়ে অনায়াসে মাথার উপর লাটির মত গুড়ায় । তা দেখে অনেক লাটিয়াল পিছু হটে । পাশেই ছিল একটা দুনালা বৃহৎ তমাল গাছ , সেটার দুডালের মাঝ বরাবর বসিয়ে দেয় কুড়ার বারি । ১২ হাত লম্বা হাছ ছিড়ে দু টুকরা হয়ে গিয়েছিল ।

সাথে সাথে ৫০০ লাটিয়াল অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল । পাঁশের গ্রাম সৈয়দ পুর তাদের মামার বাড়ী গিয়েছিল বেড়াতে , মামি ডাকল তাদের তোমার মামা গেল হাটে মাটে রেখে গেছে দুটি ঘোড়া যদি বাড়ি নিয়ে আস অনেক ক্ষেতে দেব । কিছুক্ষন পর গ্রামের মানুষ দেখে ঘোড়া বাতাসে ভেসে ভেসে আকাশ দিয়ে ছুটে আসছে । ব্যাপার দেখে অনেকেই দৌড়ে পালাল । ঘোড়া এক্কেবারে মাথায় করে বাড়ি নিয়ে আসে ।

খাওয়ার লোভে ঘোড়ার আগেই যেন ত্বরা করে বাড়ী ফিরতে পারে এজন্য এ ব্যবস্থা । কথিত রয় চার মন কাচা চাল তারা চাবায়ে খেয়ে ফেলত । জমিদারের হাতি মোড়লের শস্য ক্ষেত নষ্ট করলে , জালু মোড়ল সয়ং তুতা মিয়াঁর নিকট লোক পাটায় , যেন হাতি বেধে রাখে । কিন্তু কে শুনে কার কথা বার বার হাতি বাড়িঘর ও ফসলের ক্ষতি করে । একদিন মোড়ল বিরক্ত হয়ে ভাগ্নে আনিক মানিক কে খবর দেয় ।

তারা রাতে হাতির উপরে উটে কুড়াল দিয়ে খুবিয়ে হাতি কে মেরে ফেলে । সয়ং তুতা মিয়া হাকিমের সরনাপন্ন হয় । এদিকে বালদু নামের এক লোককে মটকার ভিতরে মোড়লরা লুকিয়ে ফেলে এবং রটিয়ে দেয় জমিদারের হাতি মানুষ খেয়ে মরে গেছে । ক্যাইছ উলটু গড়ায় । জমিদার খাড়ি খাড়ি টাকা দিয়ে নিজেদের সম্মান বাচাতে ব্যাস্ত ।

লাল পাগড়ী অয়ালা হাকিমের শাস্ত্রীরা মাঠ থেকে মোড়লের কাজের লোক গেদা মিয়া কে ধরে নিয়ে যায় । সে সময় সুনামগঞ্জের হাছন রাজার এখানে ঘোড়া দৌড়ের আয়োজনে , হাকিমের ঘোড়া অংশ নেয় , এবং গেদু মিয়া ঘোড়াকে তেজস্বী বা টু ট কা করার কায়দা জানত । সয়ং হাকিমের সাথে কথ্যা কয়ে হাকিমের ঘোড়াকে জিতিয়ে নিয়ে আসে । সয়ং হাকিম খুশি হয়ে গেদুকে ছেড়ে দেয় এবং মামলা ডিসমিস হয়ে যায় । মোড়লরা ডাক ডুল পিটিয়ে মিষ্টি মুখ কড়ায় এলাকাবাসীকে ।

আনিক মানিক কে খুশি করতে মুড়লের সাত বাজারের মিষ্টি কিনতে হয়েছিল ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।