আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গহীন সমুদ্রে কিংবা জীব বৈচিত্রের কাছাকাছি

সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে..

লুৎফুর রহমান

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম পাশ দিয়ে চলছি আমরা। অল্পের জন্যে পথ পেয়েও পাচ্ছিনা। জাবেদ ভাই আর আমার নির্দেশনা আর ফোন করে অমুক তমুককে জিজ্ঞেস অনুযায়ি গাড়ি চালাচ্ছেন মাকসুদ ভাই। অল্পের জন্যে রোড ফেলে আসায় কালবা রোড হয়ে আবার ফিরতে হলো আমাদের।

আমিরাত রোড হয়ে আবার ছুটে চলা শারজাহ এ্যাকুরিয়ামের দিকে। পুরাণ আল খান এ অবস্থিত শারজাহ এ্যাকুরিয়াম। দুবাই থেকে ২০ মিনিট এর ড্রাইভ করলেই লক্ষ্যস্থলে পৌছানো যায়। আরব আমিরাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেয়া যতোটা কঠিন তারচে' অধিক জটিল এখানকার রোড আর লোকেশন চেনা। অবশেষে আল কাসবার কাছেই ছোট্ট লেককে ঘিরে রাখা শারজাহ এ্যাকুরিয়ামে পৌছলাম।



শারজাহ এ্যাকুরিয়ামটি ২০০৮ সালে স্থাপন করা হয়। শারজাহ মিউনিসিপালিটির অধীনস্থ শারজাহ মিউজিয়াম বিভাগ এর রক্ষণাবেক্ষণ করে। ২০০৮ সালের ৬ জুন শারজাহ সুপ্রিম কাউন্সিলের সদস্য এবং শারজাহ প্রদেশের মাননীয় শাসক ড. শেখ সুলতান বিন মোহাম্মদ আল কাসিমি এর উদ্বোধন করেন। এটি আরব আমিরাতের সর্ব বৃহৎ সামুদ্রিক জীবনের সমাহার। স্থানীয় এবং ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞদের দ্বারা নির্মিত এ্যাকোরিয়ামটিতে সামুদ্রিক জীবনের সাথে পরিচয় এবং ভ্রমণে এডভেঞ্চার তৈরী করার চিন্তা মাথায় রেখে বানানো হয়েছে এমন জানালেন শারজাহ এ্যাকুরিয়ামের একজন অধীকর্তা।

৬৫০০ স্কয়ার মিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে এর অবস্থান। দু তলা ভবন দিয়ে তৈরী এ সমুদ্র জীবনে প্রবেশ পথ উপরে থাকলেও নানা জীব বৈচিত্র দেখতে আপনাতে যেতে হবে নীচের তলায় একবারে সমুদ্রের গহীনে। চারদিকে নিস্তব্দতা আর নানা বর্ণিল মাছ, সাপ, সামুদ্রিক শৈবাল, তিমি মাছ সহ নানা ধরণের সামুদ্রিক প্রাণী দেখলে রোমাঞ্চকর পরিবেশ আপনার মন ও দেহকে উদ্বেলিত করবে। রয়েছে ২০টি জলের বিশাল এ্যাকুরিয়াম। প্রতিটি এ্যাকুরিয়ামে ১.৮ মিলিয়ন লিটার পানি রাখা হয়েছে।

মাঝখানের সরু পথ দিয়ে চার পাশের নানা বৈচিত্রময় প্রাণী আপনার দিকে চেয়ে জানান দেয় আশরাফুল মাখলুকাতের।

আমাদের চারপাশের সমুদ্রপথ পড়শী সামুদ্রিক জীবন বিভিন্ন বাড়িতে যে , রঙিন সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় সমুদ্রতলদেশীয় বিশ্বে নিজেকে ডুবান এক নিমিষে। এমনটি আহবান করে দর্শণার্থীদেরকে এ এ্যাকুরিয়াম। এখানে ২৫০ এর অধিক প্রজাতির প্রাণীর সঙ্গে ঘটে পর্যটকদের পরিচয়। সামুদ্রিক বড় বড় মাছ ঈল , দন্ড এবং রীফ হাঙ্গর থেকে ক্ষুদ্রতম চাষা মাছ এবং শৈবাল থেকে ভয়ংকর আকৃতির সামুদ্রিক সাপও রাখা হয়েছে।

এখানে আছে সমুদ্রের প্রাণী থেকে শিলা পুল, প্রবালদ্বীপ , উপহ্রদ এবং ম্যানগ্রোভ। এর মধ্যে পাওয়া যাবে ছোট সামুদ্রিক জীবনের একটুকরো আবিষ্কার।

এ্যাকুরিয়ামের গহীন দিকে রাখা হয়েছে একটি খোলা পথ। এর চারপাশ কাঁচ নেই আছে খোলা জায়গা। মাছের একটি গন্ধ কেমন পরিবেশ তৈরী করলেও সংশ্লিষ্টদের কথা খোলা রাখা হয়েছে সতেজ অক্সিজেনের কারণে।

এই পথ দিয়ে ডুব সাতারুরা ঢুকে এর পরিচর্যা করে থাকেন। প্রত্যেকটি দিকে রাখা হয়েছে একটি করে বড় মনিটর প্রজেক্টর। এই দিকে কী কী আছে এবং এর সম্পূর্ণ তথ্য আপনাকে দেবে আঙুলের একটি ছাপেই।

আমরা কাউন্টার থেকে ২০ দেরহাম করে টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকলাম। ঢুকতেই রোমাঞ্চ ভরা মন নিয়ে ডুব দিলাম বর্ণিল সামুদ্রিক জীবনে।

কাঁচ দিয়ে তৈরী চারপাশে রয়েছে পর্যাপ্ত অক্রিজেনের ব্যবস্থা। রয়েছে নানা রঙিন আলোক সজ্জাও। উপরের লোকেরা নীচের লোকদের দেখে পানির নীচে হাঁটছে। ঠিক তেমনি প্রতিটি এ্যাকুরিয়ামের ভেতরে রয়েছে শারজাহ পোর্ট, শারজাহ লেক সহ নানা সামুদ্রিক লোকেশনের ছোট্ট একটি ধারণা। প্রত্যেকটি এ্যাকুরিয়ামে লেন্সের কাঁচ দেয়া হয়েছে তাই কাছে গেলে বড় করে দেখার সুবিধা রয়েছে সুনিপুণ ভাবে।



সমস্ত এ্যাকুরিয়ামটি হেঁটে হেঁটে দেখতে আমাদের লেগে যায় ঘণ্টা দেড়েক। প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকলাম আর একেক করে সব দেখে আবার চলে এলাম এক্সিট রোড দিয়ে। এ্যাকুরিয়ামের পাশে রয়েছে কসবা লেক। রয়েছে একটি হোটেলও। বিদেশী পর্যটকদের খেয়াল রেখে যেমন বানানো হয়েছে এমনটি ঠিক তেমনি এদেশের খারিজি (বিদেশী) শ্রমিকদের যেন সস্তায় নিজের ইতিহাসের সাথে পরিচয় ঘটায় তাই প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে হাতের নাগালে।



সম্পাদক: মাসিক মুকুল, ইমেইল:


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.