আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন হাবিব চাচা ও তার কন্যারা



//গভীর রাত ঘড়ির কাটা ২টার আশে-পাশে। তাহাজ্জুদ সালাতে হাবিব চাচা দাড়িয়ে আছেন। বাইরে থেকে ডাক শুনতে পেয়ে চাচী ঘুম থেকে জাগলেন। বাইরে থেকে ডাক শোনা গেল হাবিব চাচা ও হাবিব চাচা দরজাটা একটু খোলেন প্লিজ। চাচী কহিলেন বাবারা তোমরা কারা এতো রাতে? জ্বী আমি উত্তর পাড়ার গনেশ, আমার সাথে জামাল, বিল্লাল,সাত্তার আর হাতাকাটা সাইফুল আছে আর ঐ যে পুকুর থেকে ফেরার পথে আপনার মেয়েকে ভেজা কাপড়ে দেখতে পেয়ে রাস্তায় শিষ বাজানো সেই মনির আছে।



চাচী কহিলেন তা ঘটনা কী বলো ! আর বইলেননা চাচী আপনার সুন্দরী মেয়েদের দেখতে এসেছি। ঘুম আসছিলনা। বিশ্বাস করেন আমরা ওদেরকে একবার একটু দেখে চলে যাব। ইতিমধ্যে চাচার সুন্দরী কন্যারা ঘুম থেকে জেগে গেল ! আর ভাবলো কি ব্যাপার ডিজিটাল সরকার কি ফেসবুক বন্ধ করে দিল নাকি ! কাজিনের গায়ে হলুদের দিন হলদে শাড়ি পরা ছবি, বিয়ের দিন সাজু-গুজু করে কপালে টিপ পরা ছবি, এগুলো কি তাহলে দেখা যাচ্ছেনা ফেসবুকে?

ওহ বুজেছি ! ফেসবুকেতো আমার ঘুমানো অবস্থায় ছবি আপলোড করা হয়নি ! বোধ হয় আমি ঘুমালে কেমন দেখায় সেটা দেখতে এসেছে ভায়ারা ! চাচীজান দরজা খুলে দিলেন, চাচাজানের তাহাজ্জুদ শেষ হয়েছে, এখন আল্লাহর কাছে জান্নাতের দরখাস্ত করে ঘুমাবেন !

ঘরের ভিতরে ঢুকে সুন্দরী কন্যাদের চহ্মু ভরে দেখলো স্মার্ট, টগবগে ভায়ারা। পরে মন চাইলে আবার দেখবে তাই যাবার সময় বিভিন্ন এঙ্গেলে ডজন খানিক ছবি তুলে নিয়ে গেল ওরা ! গনেশ আর সাত্তারের কন্ঠে শোনা গেল ওহ! আপুরা বেশ সুন্দরতো তোমরা!

আর মনির বিড়-বিড় করে বল্লো চাচাজানের জিনিস কয়েকটা এক্কেবারে.…! এই শুনে চাচা আর চাচীজানের বুক গর্বে ভরে গেল ! ঘুমানোর আগে চাচা- চাচীকে কহিলেন ওগো দুনিয়া আর কয়দিন আমি আগামী মাসে একটা মাহফিলে যাব তিন দিন ওয়াজ শুনতে!//

উপরের এই ঘটনাটা সম্পূর্ন কাল্পনিক ! তবে বাস্তবের সাথে মিলে যায় ! কিভাবে? বলছি শুনুন !

আপনার বোনের ছবি থাকে ফেসবুকে, আপনার ভাতিজি-মেয়ের ছবি থাকে ফেসবুকে আপনি কি অন্ধ? আল্লাহ কি আপনার বোধ শক্তি দেননি? যুবকের হ্মুধার্ত চোখে আপনার মেয়েরা ধরা দেয় আপনি তবু বোবা হয়ে বসে বসে তসবীহ জপেন! মেয়েরে পাংখা লাগিয়ে রেখেছেন লজ্জা করেনা ?

দেশের আনাচে কানাচের যুবকেরা আপনার মেয়ের ফিগারের মাপ নিয়ে ফেসবুকে কয় নাইস লাগছে, হট! ছেলেরা মন চাইলে পিসি, ল্যাপ্টপে আপনার মেয়েদের ছবি দেখে, সেখানে রাত লাগেনা দিন লাগেনা!

প্লিজ ভয় করুন আল্লাহকে।

ফিরে আসুন ঐ দ্বীমুখী অন্তর থেকে। পরিবারের দায়িত্ব্শীল হয়েছেন তাই পদহ্মেপ নিন। কন্যাদেরকে রোদের তাপ থেকে বাচাতে চান অথচ জাহান্নামের আগুন থেকে বাচাতে উদ্যোগী হন না। যুবকের চোখে মেয়েকে বরাদ্দ রাখেন, ধিক আপনাকে হে পিতা!

হে পিতা আপনি দায়িত্ব্শীল আপনার পরিবারের প্রতি ! দেখুন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কী জানিয়ে গেছেন !

“তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর সবাই তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে। ইমাম একজন দায়িত্বশীল; তিনি তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন।

পুরুষ দায়িত্বশীল তার পরিবারের; সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। মহিলা দায়িত্বশীল তার স্বামীর গৃহের (তার সম্পদ ও সন্তানের); সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। ভৃত্যও একজন দায়িত্বশীল, সে জিজ্ঞাসিত হবে তার মুনিবের সম্পদ সম্পর্কে। (এককথায়) তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে। ।


[বুখারী-১/৩০৪, ৪৩১, ২/৮৪৮,৯০১; মুসলিম-৩/১৪৫৯ ]

কুরানে আল্লাহ যা বলেছেনঃ বাংলায় দেয়া হলোঃ

“হে লোকজন যারা ঈমান এনেছো, তোমরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবার ও সন্তান-সন্তুতিকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো মানুষ এবং পাথর হবে যার জ্বালানী ৷ সেখানে রুঢ় স্বভাব ও কঠোর হৃদয় ফেরেশতারা নিয়োজিত থাকবে যারা কখনো আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না এবং তাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তাই পালন করে ৷”
[তাহরিম, আয়াত-৬]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.