আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্লোবালাইজেশন ইতিহাস ~ আধুনিক যুগ (১৯৪৫ - বর্তমান)

www.facebook.com/mahamudul.hasan.9619 ভ্রমন, লেখালেখি, বিজ্ঞান ওয়েবসাইট দেখা, বই _ম্যাগাজিন পড়া ও ওয়েবসাইট প্রোগ্রামিং করা পছন্দ।
বিশ্বায়নের ইতিহাস গত যা ৫০০ বছর ধরে অতিবাহিত – তা তিনটি পর্যায়ক্রমের মধ্যে ভাগ করতে পারি।



ধাপ ১: প্রারম্ভিক যাত্রাপথ অনুসন্ধান ও উপনিবেশ স্থাপন যুগ - ১৪৯২
ধাপ ২: বহুজাতিক একীকরণ যুগ (১৮৫০-১৯১৪)
ধাপ ৩: বিশ্বায়ন আধুনিক যুগ (১৯৪৫ - বর্তমান)


১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি-শুরু হয় দীর্ঘ অর্থনৈতিক বিস্তৃতির যা বিশ্বায়নের তৃতীয় পর্যায় বা ধাপ ৩।

নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংস্কার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এবং ১৯৪৪ সালে এর যুদ্ধকালীন জোটের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আর্থিক একটি নতুন কাঠামো প্রদান করে।

পুঁজিবাদ এর “স্বর্ণযুগ” অভিহিত করা হয় ১৯৪০ সালের শেষ দিক থেকে ১৯৭০ সালের প্রথম দিকে।

এই নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা যার লক্ষ্য সর্বনাশা অর্থনৈতিক অবস্থা ১৯৩০ এর গ্রেট ডিপ্রেশন এ ফেরত যাওয়া রোধ করা।

নতুন এই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা গভীর রাজনৈতিক প্রভাব ছিল ও থাকে।

এই আন্তর্জাতিক চুক্তি জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার নামে অভিহিত এবং জাতির মধ্যে ১৯৩০ সালের ধ্বংসাত্মক অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার বিরোধিতা করে।

নতুন আন্তর্জাতিক আর্থিক চুক্তি এবং প্রতিষ্ঠান যেমন- ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) ও বিশ্ব ব্যাংক হিসাবে এক নতুন ধরনের বিশ্ব আর্থিক স্থিতিশীলতা হয়।

করারোপ মাত্রা নির্ধারণ সহ রাষ্ট্র তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় যা আজকের ধাঁচে অত্যন্ত উচ্চ ছিল।



রাষ্ট্র শক্তভাবে দেশের সীমানা জুড়ে মূলধনের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ছিল। ফলে বিদেশী ফটকামূলক বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক প্রভাব বিস্তার সীমিত করে।

আজকের থেকে অনেক বেশী ক্ষেত্রে-রাজনীতিবিদরা ব্যাংকিং খাতের উপর উল্লেখযোগ্য মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সক্ষম হয়।

আজ, বিপরীতভাবে অভূতপূর্ব মাত্রায় ব্যাংকিং খাত প্রদর্শন করেছে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করতে জাতি-রাষ্ট্রের ক্ষমতা আছে।

অবশেষে, এই নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কল্যাণকর রাষ্ট্র সম্প্রসারণ সম্ভব হয়েছে এবং আরো সুরক্ষা প্রদান করে যারা আর্থিকভাবে অসুস্থতার পাশাপাশি ও বেকারত্বের সম্মুখীন হতে পারে তাদের নিরাপদ নাগরিক হিসাবে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল না করার।



সরকারী নিয়মকানুন দ্বারা কল্যাণকর রাষ্ট্র সম্প্রসারণ সম্ভব হয়েছে যা সরকার, বড় কর্পোরেশন, এবং আর্থিক খাতের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করে।

এই কৌশলগত ভারসাম্য সরকারগুলো অনুমোদন দেয় যেমন-উন্নত কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে সামাজিক ব্যবস্থা তৈরি করতে।
পুঁজিবাদ এর স্বর্ণযুগের শেষ সময় ১৯৭০ এর দশক থেকে।

ধীর প্রবৃদ্ধি ও একটি বিশ্ব সিরিজ আর্থিক সংকট দ্বারা নিউলিবারেল (Neoliberal) মার্কেট গ্লোবালিজমের সাফল্য অর্জন সফল হয়েছে।

এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কর্পোরেট খাতের উপর অনিয়ন্ত্রণ, সরকারী প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগ বেসরকারিকরণ, ট্যাক্স হ্রাস ব্যবসা ও ব্যক্তির জন্য, শ্রম ইউনিয়ন ক্ষমতার সীমা নির্ধারণ, সামাজিক নীতি প্রণয়নের মধ্যে সরকারের ভূমিকা হ্রাস এবং নতুন এই বৈশ্বিক বিনিয়োগের বাজার চলে অনিয়ন্ত্রিত মূলধন প্রবাহের সাথে।



এই উন্নয়নের সাথে মিলে উদিত হয় শেল কোম্পানীর কৌশল এবং অনিয়ন্ত্রিত অফশোর আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এদের কিছু বৈধ অন্যরা অবৈধ। এরা ধনী ও গরীব থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে এবং বড়আকারের করফাঁকি দেয়।

এই আর্থিক প্রকল্প সমাজ থেকে উন্নত ও অনুন্নত দেশের সামাজিক উন্নয়নের বহু ট্রিলিয়ান ডলার হ্রাস করে যা তাদের প্রয়োজন।

যুদ্ধোত্তর ১৯৪৫ এর পরে বিশ্বায়নের একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মাত্রা তৈরি হয় পৃথক্ রাজনৈতিক শক্তির হাত থেকে তা নিউলিবারেল নীতিগুলি বিকশিত করে।



লীগ অফ নেশনস (যা ১৯৩০ সালে ব্যর্থ হয়) উত্তরসূরি জাতিসংঘের ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকে বিকশিত যে আদর্শবাদী আন্তর্জাতিকতাবাদ তার একটি পুনরাবৃত্তি।

জাতিসংঘের কার্যকর বৈশ্বিক শাসন ও আইনের অধিকাংশ প্রত্যাশা সুস্পষ্ট রূপে অপূর্ণ থাকে -সেই জন্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে-অনেক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বা এনজিও (NGO) উত্থান হয় যুদ্ধোত্তর সময়ের মধ্যে কারণ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতিসংঘের সীমাবদ্ধতা।

এছাড়াও যেখানে অনেক জাতি-রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ মানবিক এবং পরিবেশগত বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন বা চালাতে অক্ষম ও অনিচ্ছুক থাকে সে সব ক্ষেএেও এনজিও সাড়া দেয় ।

এই কারণে এনজিও আমাদের যুগের গ্লোবালাইজেশন এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এনজিও যেমন- হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, এবং গ্রিনপিস



তাদের মিশন স্মরণ করে দেয় এনজিও আদর্শবাদী আন্তর্জাতিকতাবাদের আধুনিক উদাহরণ।

আজকের গ্লোবালাইজেশন সংজ্ঞায়িত করা যায় যে- বৈশ্বিক দায়িত্ব অন্তর্ভুক্ত দরিদ্র ও অসহায় মানুষ এবং সঙ্কটাপন্ন গ্রহে আমরা সবাই পাশাপাশি বসবাস করতে পারি।

:::::::::::::::::সমাপ্ত::::::::::::::::::::::
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।