আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনাহূত তিলক

মুজিবর সাহেবের মেজাজ ভয়ঙ্কর রকমের খারাপ। তিনি অফিসের চেয়ারে ঝিম ধরে বসে আছেন আর খেয়াল করছেন ডেস্কে কাজের চাপ বেছে বেছে আজকেই বেশি, একারণে তাঁর মেজাজ আরো খারাপ হচ্ছে। অকারণে ধমকাচ্ছেন সবাইকে। পিওন চা রেখে গেছে অনেকক্ষণ, মুজিবর সাহেব খেয়াল করলেন না। পিওনকে ডেকে দিলেন কড়া ধমক।

ব্যাংকের বিজনেস ফ্লোরে উচ্চস্বরে কথা বলা নিষিদ্ধ, সবাই কেমন ফিস ফিস করে কথা বলে। প্রাইভেট ব্যাংক গুলোর এই এক প্র্যাকটিস দাঁড়িয়েছে এখন। কাজের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে এটি নাকি জরুরী, কর্পোরেট কালচার। মুজিবর সাহেব কাজ করেন ডিপোজিট ডিপার্টমেন্টে। ম্যানেজার সাহেব ওনাকে ডেকে পাঠালেন।


'কি ব্যাপার মুজিবর সাহেব? শরীর ঠিক আছে?'
'জ্বি স্যার'।
'অকারণে চেঁচামেচি করছেন কেন?'
মুজিবর সাহেব জবাব দিলেন না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন। জবাব দেবার কোন মানে হয়না। ম্যানেজার সাহেব কাগজের উপর এঁকে এঁকে আরো কিছু কর্পোরেট কালচার বুঝালেন।

‘আপনি কি বুঝতে পারছেন আমি কি বুঝাতে চাইছি?’
মুজিবর সাহেব মনে মনে একটা বাজে কথা বললেন। কাকে বললেন নিজেই বুঝতে পারলেন না। মুখে বললেন- 'জ্বি স্যার, বুঝতে পেরেছি'। তাঁর মেজাজ আরো খারাপ হতে থাকলো। ডেস্কে এসে এই কয়েক মিনিটে জমে থাকা বেশ কয়েকটি চেক ক্যান্‌সেল করলেন ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস করে।

প্রায় সাথে সাথেই পেমেন্ট অফিসারের কাছ থেকে একটা চেক ফেরত আসলো। 'স্যার স্টেইল চেক। ' চেকে ডেট লেখা ১৩-০১-২০১৩। এক বছর আগের ডেট। জানুয়ারি মাসে এটা একটা কমন ভুল, পূর্ববর্তী সাল লিখে ফেলে অসাবধানতায়।

ব্যাংকাররা সতর্ক থাকে সাধারণত, মুজিবর সাহেব অসতর্ক হলেন। তাঁর মুখে এক গাদা থুতু জমা হয়েছে। বুক জ্বালা করছে। এসিডিটি প্রবলেম। রাতে ঘুম নাহওয়ায় প্রায়ই এমন হচ্ছে।

মুজিবর সাহেব চেক বেয়ারার কে ডেকে কষে ধমক দিতে গিয়েও সামলে নিলেন নিজেকে। দ্বিতীয়বার চেম্বারে ঢোকার কোনো মানে হয়না।
মুজিবর সাহেবের মেজাজের কারণ পারিবারিক। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে উনি বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন। উনি জানতে পেরেছেন চারুকলার এক ছাত্রের সাথে মেয়ের সম্পর্ক আছে, পিকলু না কি নাম জানি।

এই ছবি আঁকা-আঁকি মুজিবর সাহেবের একদমই পছন্দ নয়। বিদ’আত, বেশরিয়া কাজ। সে পিকলুর আঁকা হোক, আর পিকাসো'র। তাছাড়া বিবাহ বহির্ভূত এই ধরণের সম্পর্ক মুজিবর সাহেব সহজভাবে নিলেন না। শুনার পর থেকেই মুজিবর সাহেব অস্থির হয়ে পাত্র খুঁজেছেন এবং বিয়েও উনি ঠিক করে ফেললেন একমাসের মাথায়।

ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। ব্যাংকে চাকরি করে। এটা অবশ্যি মুজিবর সাহেবের পছন্দ হয়নি। ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ব্যাংকে চাকরি করবে কেন? প্রোডাকশন রিলেটেড ইন্ডাস্ট্রিতে যাবে। খোঁজ নিতে গিয়ে জেনেছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকেই আজকাল এই পেশায় আসছে।

মেধার অপচয় কিনা মুজিবর সাহেব ঠিক ধরতে পারলেন না। মাথাও ঘামালেন না। পাকা কথা দিয়ে ফেললেন পাত্রপক্ষকে। মেয়ে তার মায়ের মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছিল, ঠিক প্রতিবাদ নয়, প্রতিবাদ মুজিবর সাহেবের বাড়িতে এলাউড না। বলা যেতে পারে আবেদন।


'মেয়ে মাত্র থার্ড ইয়ারে উঠলো, এখনি বিয়ে দিয়ে পড়াশুনার ক্ষতি করে লাভ কি?' মুজিবর সাহেবের স্ত্রী আফসানা বেগম রাতে স্বামীর হাতে পান তুলে দিতে গিয়ে অনুযোগের সুরে জানায়।
'আমি কি মেয়ের বইপত্র ফেলে দিচ্ছি? টিউশন ফি দেয়া বন্ধ করে দেব বলেছি? নাকি আইডি কার্ড তালা মেরে রাখছি? ভালো-শিক্ষিত ছেলে, বংশ ভালো,তাছাড়া আমার কথা হয়েছে ওরাও চায় পড়াশুনা শেষ করুক। অসুবিধারতো কিছু দেখছিনা। '
'নতুন পরিবেশ, নতুন মানুষ, শ্বশুর শাশুড়ি এগুলোর মাঝে মেয়ে পড়তে পারবে? সংসারের কাজ কে করবে?'
'ভ্যাজর ভ্যাজর করবানা। ইচ্ছা যদি থাকে যে কোন পরিবেশেই পড়ালেখা করা যাবে, না থাকলে বেহেস্তে গেলেও যাবেনা।

' মুজিবর সাহেব চরম বিরক্তি নিয়ে স্ত্রীকে ধমক দেন।
মুজিবর সাহেবের হাতে টাকা ছিলোনা, ডিপিএস, প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে নেয়ার পরও ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকার আলাদা একটি লোন করলেন মুজিবর সাহেব। ফিরোজ সাহেব এই বিষয়ে বেশ আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, বলা যায় নিজেই উদ্যোগী হয়ে লোনটা করিয়ে দিয়েছেন। ফিরোজ সাহেব লোকটা ভালোই, নামায কালাম পড়েননা এই যা। নামাযের কথা বললেই বলেন 'জীবনে এতো বেশি আকাম করেছি, নামায দিয়া কাভার করা যাবেনা মুজিবর সাহেব।

একটা গল্প শোনেন- ব্রিটিশ আমলে যখন নীল চাষ হতো তখন একটি এলাকায় গভর্নর সফরে যাবেন সংবাদে ঐ এলাকার প্রশাসক এলাকার সব নীল চাষিকে ডেকে হুকুম দিলো অমুক তারিখ গভর্নর আসবেন, তোমরা যদি প্রচুর পরিমাণ নীল গাছ কেটে গভর্নরকে সন্তুষ্ট করতে না পার তাহলে তোমাদের আঙুল কেটে নেয়া হবে, আর যদি খুশি করতে পারো তবে মজুরি বাড়িয়ে দেয়া হবে। প্রশাসকের হুকুম তার উপরে আঙুল হারাবার ভয়, বাড়তি মজুরির লোভ সব মিলিয়ে চাষিরা লেগে গেলো কঠোর পরিশ্রমে। কেউ কাটলো ১০০ কেজি, কেউ ৮০ কেজি, কেউবা ৭০.... আবার কেউ চুপটি মেরে ফাঁকি মারলো। যথারীতি গভর্নর আসলো, দেখলো এবং বলল- ওভার অল পরিমাণ সন্তোষজনক। আমি প্রতিদিনই এই পরিমাণ নীল গাছ চাই।

আজ যে যেই পরিমাণ কেটেছো প্রতিদিন সেই পরিমাণ কাটা চাই, পরিমাণ কমলে আঙুল কাটা! যেই চাষি ফাঁকি মেরেছে সে তো হেসে কুটি কুটি। সে বেঁচে গেলো। চিন্তা করছি আখেরাতে যদি এই কোটি কোটি গুনাহ্‌গার দেখে আল্লাহ্‌ বলে বসে তোমরা পৃথিবীতে যে যেভাবে ছিলে, এখানেও সেভাবে থাকো, এতো লোকের বিচার করা সম্ভব না; আপনি কিন্তু ফেঁসে যাবেন মুজিবর সাহেব। হা হা হা। '
মুজিবর সাহেব মনে মনে বলেন আস্তাগাফিরুল্লাহ্‌।

'আখিরাত নিয়ে এইধরনের রসিকতা করা ঠিক না ফিরোজ সাহেব'।
‘আচ্ছা যান, রসিকতা বাদ। মুজিবর সাহেব, টাকা নিয়া এতো চিন্তা করছেন কেন? এনি পারপাস লোন নিয়ে নেন একটা। হাতে টাকা আসলে মাস ছয়েক পরে শোধ করে দিবেন, সমস্যা কি?'
'কি লোন বললেন?' মুজিবর সাহেব বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করেন।
'আরে এনি পারপাস, এনি পারপাস।

মুশকিল আহসান বলতে পারেন। ' ফিরোজ সাহেব হাসতে হাসতে বলেন। 'কনসেপচুয়ালি নারী পাচারের জন্যও এই লোন এপ্লিকেবল! হা হা হা!'
'অ!'
মুজিবর সাহেব 'এনি পারপাস' নিলেন। দিন চারেক ছুটি নিয়ে সব কিছু গুছিয়ে আনলেন। ছেলের বাড়ি থেকেও ঘুরে আসলেন একবার।

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে। বেশ যৌথ একটি পরিবার। এলাকায় ভালো ব্যবসা বাণিজ্য আছে। ছেলের এক চাচা ঢাকায় কি সব আমদানি রপ্তানি করে শুনলেন। বেশ ধর্মপ্রাণ পরিবার।

বাড়ির পাশেই একটা মসজিদ করেছেন। ভালোই। সিকদার বাড়ি বললে সবাই চেনে। মুজিবর সাহেব বেশ সন্তুষ্ট আথিতেয়তায়, আচার ব্যবহারে। মসজিদে যোহরের নামাযও আদায় করলেন হবু বেয়াইয়ের সাথে।


বিয়ের দিন সকাল থেকেই মুজিবর সাহেবের দম নেয়ার ফুসরত নেই। জুমা বার হওয়ায় ঠিক সময়ে মসজিদে যাবার তাড়াতো আছেই। এদিকে কমিউনিটি সেন্টারগুলোও যাচ্ছেতাই। একজন বসে না থাকলে খাবার পাচারের তালে থাকে সব। দুই নম্বরিতে দেশটা ভরে গেলো।

মুজিবর সাহেব হতাশ বোধ করেন মনে মনে। ঘরেও শান্তি নেই। মেয়ে গোঁ ধরে বসে আছে। মুজিবর সাহেবের কড়া শাসনে প্রতিবাদ করার কোন সুযোগ নেই। হুকুম তামিল করাই একমাত্র পথ।

মেয়ে সেকারণেই বিয়ে করছে এটা মুজিবর সাহেব বোঝেন। কিছু করার নেই, মেয়ের ভবিষ্যৎ উনি ‘পিকাসো’র হাতে ছেড়ে দিয়ে বে’দাত কাজকে অনুমোদন করতে পারেন না। আর বিবাহ পূর্ব এই ধরণের সম্পর্কের কথা শুনার পর থেকেই মেয়ের প্রতি এক ধরণের বিরক্তি অনুভব করেন মুজিবর সাহেব।
বাদ মাগরিব কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠান। কনে পক্ষের সবাই এসে পড়লেও রাত নয়টা পর্যন্ত বর পক্ষের অনুপস্থিতি মুজিবর সাহেবকে বিচলিত করে।

উনি ইতি মধ্যে মাগরিবের নামাজ ক্বাযা করেছেন। ছেলের বাবাকে একবার ফোন দিয়েছিলেন এরমধ্যে, উনি ফোন ধরেন নি। মুজিবর সাহেব অসস্তি নিয়ে আবার ফোন দেন। ফোন বেজে যায়। ‘লা ইলাহা ইন্না আন্তা্‌ সুবাহানাকা ইন্নি কুংন্তু মিনাজ্বজ্বলিমিন’ মুজিবর সাহেব অজানা আশঙ্কায় দোয়া ইউনুস পড়েন মনে মনে।

আবার ফোন দেন।
‘বেয়াই সাহেব, সব ঠিক আছেতো ইনশাল্লাহ্‌? কতোটুকু এসেছেন?’ মুজিবর সাহেব উৎকণ্ঠিত হয়ে জিজ্ঞেস করেন।
‘কিছুই ঠিক নেই ভাই। আমরা এখন চট্টগ্রাম মেডিক্যালে’।
মুজিবর সাহেবের বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠে, শরীর কাঁপতে থাকে।

পুরোপুরি শোনেনও না অন্য-প্রান্তে কি বলছেন। উনি দ্রুত বসে পড়েন কমিউনিটি সেন্টারের ফ্লোরে। যতোটুকু বুঝতে পারেন সেটা হচ্ছে সাঙ্গু ব্রিজের কাছাকাছি এসে বিপরীত দিক থেকে প্রচণ্ড বেগে ছুটে আসা একটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে বর-যাত্রীবাহী দ্বিতীয় বাসটি খালে পড়ে যায়। বরকে বহনকারী কারটি পিছনে ছিলো, কোন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু খাঁদে পড়ে যাওয়া বাসে এলাকার অন্যদের সাথে ছেলের এক চাচা ছিলেন, যিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

মারা যায় এক শিশুসহ আরো তিনজন। অনেকেই মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে আরো দুইজনের অবস্থা আশঙ্কায়। মুজিবর সাহেব সূরা বাকারার ১৫৬ নাম্বার আয়াত পড়তে থাকেন বারে বারে। ছুটে যান চট্টগ্রাম মেডিক্যালে।

চারিদিকে শুধু কান্না আর হাহাকার, হতবিহবল পরিবেশ। যে শিশুটি মারা গিয়েছে তার মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। মেডিক্যালের ওয়ার্ড জুড়ে কেবলি দুঃসহ গোঙানির শব্দ।
বিধ্বস্ত পরিবেশ থেকে রাত বারোটা নাগাদ মুজিবর সাহেব পাত্র এবং তার কিছু নিকট আত্মীয় স্বজনসহ বিমর্ষ মন নিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে আসেন। এ যেনো নিষ্ঠুর নিয়তি।

কাজী উপস্থিত ছিলেন। বিয়ে পড়ানো হয়। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতাও সারা হয় দায়সারা ভাবে। কোনরূপ আমেজ ছাড়া। ছেলের বাবা বিয়ে স্থগিত করে পরবর্তীতে কোন একসময় আয়োজন করার জন্য বলেছিলেন, কিন্তু কনেপক্ষের উপর্যুপরি অনুরোধে কোনক্রমে আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন।

কিন্তু জানিয়ে দিলেন আজ তাঁরা মেয়ে তুলে নিয়ে যাবেন না। ‘ভাই সাহেব পরিস্থিতিতো হাসপাতালে নিজেই দেখেছেন। এই অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে বাড়ি যাওয়াটা ঠিক হবেনা। অন্তত চেহলামটা যাক। নানান জন নানান কথা বলবে।

বুঝতেইতো পারছেন। ‘
‘জ্বি, ঠিক আছে, ঠিক আছে’। মৃদু অস্বস্তি নিয়ে মুজিবর সাহেব সম্মতি দেন। বুঝে উঠতে পারেন না ঠিক কি করবেন। কন্যা বিদায়ের চিরাচরিত আবেগঘন পরিবেশের বদলে কমিউনিটি সেন্টার জুড়ে বিরজকরে এক নিষ্ঠুর নিরবতা।

এ যেনো এক উৎকণ্ঠার সহবাস অন্তকালের। নিয়ন আলোময় রাস্তা বড্ড অদ্ভুতুড়ে আঁধারী মনে হয়।
মেয়ের চাচা শ্বশুরের চেহলাম অনুষ্ঠানে মুজিবর সাহেব তার স্ত্রীসহ উপস্থিত থেকেছেন এবং চরম অস্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পূর্বেকার আথিতেয়তা উনি আশা করেননি কিন্তু পাশকাটানোটা খোঁচা দেয় বড়। মেয়েকে তুলে নেয়ার বিষয়ে কেউ কোন আলাপ তুললেন না।

মুজিবর সাহেব ভেবেছিলেন শোকাবহ পরিবেশে বিষয়টি আলাপ না করে বাসায় ফিরে কথা বলবেন ফোনে। কিন্তু আফসানা বেগমের মুখে শুনলেন মেয়ের চাচী শাশুড়ি তাঁর সঙ্গে কথাও বলেন নি। মৃদু ফিসফিসানিতে জানতে পেরেছেন মেয়েকে অপয়া হিসেবে চিহ্নিত করে পরিবারের অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না, আশুভ ছায়া দেখতে পাচ্ছেন নতুন বউয়ের আগমনে। যে কেবলই কেড়ে নেবে।
মুজিবর সাহেব অসহায় বোধ করেন।

যে ঘটনায় তাঁর মেয়ের কোন হাত ছিলোনা সেটিকে ইস্যু করে মেয়ের ভাগ্যে অনাহূত তিলকের ছাপ উনি মেনে নিতে পরেননা। তাঁর মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। এর মাঝে আবার তাঁর স্ত্রী খোঁচা দিচ্ছেন ‘সারাজীবনে আমার একটা কথা আপনি পাত্তা দিয়েছেন? বলেছিলাম মেয়েটা পড়াশুনা শেষ করুক। ‘ নিজেকে অপরাধী লাগে মুজিবর সাহেবের। অফুরান বিষণ্ণতা নিয়ে সারারাত বিছানায় ছটফট করেন, অফিসে কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না।

সময় হয়তো সবকিছুকে সহজ করে দিবে। মেয়েও হয়তো স্বামীর বাড়ি যাবে একসময়, কিন্তু আমৃত্যু বয়ে বেড়াবে অপয়ার অপবাদ। একরাশ হতাশা আর অপরাধ-বোধ মুজিবর সাহেবকে ঘিরে রাখে সারাবেলা, সারাক্ষণ।
-----------------------------------------------------------------
- দেব প্রসাদ দেবু

সোর্স: http://www.sachalayatan.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।