আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবাধে আমদানি হচ্ছে নিম্নমানের কাগজ

অবাধে আমদানির সুযোগে দেশে নিম্নমানের কাগজ ঢুকছে দেদার। পরিস্থিতি সামলাতে বিএসটিআই থেকে এই কাগজের পরীক্ষা এবং গুণগত মানের ছাড়পত্র নেওয়ার সুপারিশ করে চিঠি লিখেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে কাগজ আমদানির ক্ষেত্রে পরীক্ষার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করার জন্য আমদানিনীতি আদেশে (২০১২-২০১৫) অন্তর্ভুক্তেরও সুপারিশ করা হয়েছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের ওই সুপারিশের পর গতকাল সচিবালয়ে আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়ের (আইআইটি) সভাপতিত্বে বৈঠকে অনেক আমদানিকারকই 'অবাধ সুবিধা' বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। তবে নিম্নমানের কাগজ ঠেকাতে বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতারা আমদানি করা কাগজের পরীক্ষার বিষয়টি নীতিতে সংযুক্তের দাবি জানিয়েছেন। পরে সিদ্ধান্ত হয়, কাগজ আমদানির ক্ষেত্রে স্বীকৃত ল্যাবরেটরি থেকে বাংলাদেশ মানের ছাড়পত্র নিতে হবে। এ ছাড়া রপ্তানিকারক দেশের যেসব কোম্পানি বিএসটিআইয়ের ছাড়পত্র পেয়েছে, তারা পরীক্ষা ছাড়াই কাগজ পাঠাতে পারবে। যাদের এ দুটোর কোনোটাই নেই, তাদের কনসাইনমেন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে কাগজ আমদানি করতে হবে। মনোজ কুমার রায় বলেন, 'আমরা কাগজ আমদানিতে নতুন করে কোনো বাধা আরোপ করতে চাই না। তবে দেশে যাতে নিম্নমানের কাগজ না ঢোকে, সে বিষয়গুলো বিবেচনা করে উলি্লখিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে দেশীয় শিল্প এবং আমদানিকারক, উভয়ের স্বার্থই রক্ষা হবে।' বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন জানায়, বেশি মুনাফার আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এলসিতে পরিমাণ, কোয়ালিটি, জিএসএম নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কাগজ আনছে। এমনকি ৩৯৯ জিএসএমের (গ্রামস পার স্কয়ার মিটার) নিচে কোটেড পেপার আমদানি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও গার্মেন্ট শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের নামে আমদানি করা হচ্ছে। পরে বিক্রি করা হচ্ছে খোলাবাজারে। এতে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে নিম্নমানের কাগজ নিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। জানা গেছে, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজজাত পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষা করে বিএসটিআই থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাজারজাত করতে হয়। কিন্তু আমদানি করা কাগজের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক নয়। এ সুযোগে অবাধে নিম্নমানের কাগজ আসছে দেশে। ফলে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি দেশীয় কাগজ শিল্পও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিষয়টি নজরে এলে গত জানুয়ারিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় শিল্প মন্ত্রণালয় (বিএসটিআই ও বিএসইসি শাখা)। চিঠিতে বলা হয়, আমদানিনীতি আদেশে উল্লেখ না থাকায় পরীক্ষা ও গুণগত মানের ছাড়পত্র ছাড়াই আমদানি করা কাগজ ছেড়ে দিচ্ছে কাস্টমস বিভাগ। পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়া পণ্য বাজারে প্রবেশের ফলে একদিকে ভোক্তা সাধারণ কাঙ্ক্ষিত মানের পণ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে দেশীয় কাগজ শিল্প অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমদানি করা নিউজপ্রিন্ট ও রাইটিং অ্যান্ড প্রিন্টিং পেপারস পণ্য দুটি কাস্টমস থেকে ছাড়করণের সময় বিএসটিআইয়ের পরীক্ষা ও গুণগত মানের ছাড়পত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে পণ্য দুটির পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য আমদানিনীতি আদেশে সংযুক্ত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এনবিআরকে জানিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়। প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০টি কাগজ ও কাগজ জাতীয় পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো বছরে ১২ লাখ মেট্রিক টন কাগজ ও কাগজ জাতীয় পণ্য উৎপাদনে সক্ষম। এরই মধ্যে দেশে উৎপাদিত কাগজ প্রায় ২৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.