আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিভিল এভিয়েশনের ৫০০ কোটি টাকার জমি দখল করে আশিয়ানের রাস্তা

আদালতের রায়ে অবৈধ ঘোষিত রাজধানীর উত্তরায় আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের আশিয়ান সিটি প্রকল্পের (দক্ষিণখান, আশকোনা ও শিয়ালকাটা) দখলে সিভিল এভিয়েশনের ২৫ বিঘা জমি। বর্তমানে এই জমির বাজারমূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। বিতর্কিত এ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্পের নিজস্ব রাস্তা নির্মাণ করে দিতে সরকারি কোষাগার থেকে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা খরচ করেছে সিভিল এভিয়েশন। এমনকি এ রাস্তা নির্মাণে সিভিল এভিয়েশনের নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের ১০০ পরিবারকেও জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য সিভিল এভিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তা আশিয়ান সিটির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ অবস্থায় ভুক্তভোগী ও সচেতন নাগরিকরা আশিয়ানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নজরুল ইসলাম ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। এর আগেও তিনি প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

জানা গেছে, সিভিল এভিয়েশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিপুল অর্থের এ সম্পত্তি আশিয়ান সিটির হাতে তুলে দিয়েছেন। আবার সে সম্পত্তির ওপর ৩০ ফুট প্রশস্ত একটি রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছে সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগ। উপরন্তু রাস্তার ব্যয় নির্বাহের জন্য ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার অনুমোদন দেন।

এ সব কিছুই ছিল লোক দেখানো। নামমাত্র টেন্ডার করা হলেও তা ছিল একটি যোগসাজশ প্রকল্প। খাতাপত্রে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করা হলেও সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে আশিয়ান কর্তৃপক্ষ। তারা নিজেরাই মাটি ভরাট, রাস্তা নির্মাণ ও কার্পেটিংয়ের কাজ করেছে। দেশে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন বলে খোদ সিভিল এভিয়েশনের সম্পত্তি শাখা থেকে বলা হয়েছে।

সম্পত্তি শাখার একাধিক কর্মকর্তা বলেন, তাদের কোনো অনুমতি ছাড়াই প্রকৌশল শাখা থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে, যা সিভিল এভিয়েশনের ইতিহাসে বিরল। গোপন শর্ত অনুযায়ী প্রধান প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা মিলে এ টাকা ব্যয় দেখিয়ে নিজেরাই আত্দসাৎ করেন বলে জানা যায়। বিষয়টি সিভিল এভিয়েশনের সদর দফতরের সবাই কম-বেশি অবগত রয়েছেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দ্র বিকাশ গোস্বামী বলেন, মূলত আশকোনা ও কাওলাবাসীর চলাচলের সুবিধার জন্যই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশনের কয়েকজন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও অভিযুক্ত সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দ্র বিকাশ গোস্বামী, সিভিল ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোকাব্বর আলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইউনুস আলী ভূঁইয়াসহ জড়িতরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অজানা কারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব। সিভিল এভিয়েশনের জমিতে যদি অবৈধভাবে দখল বা রাস্তা নির্মাণ করা হয়, তাহলে সেই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দ্র বিকাশ গোস্বামীর সুনজরে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী মোকাব্বর আলী নিজের সংস্থার ২৫ বিঘা জমি বিতর্কিত আবাসন কোম্পানি আশিয়ানকে তুলে দেওয়ার ভূমিকা রেখেছেন।

এ ধরনের ঘটনা এ দেশে নজিরবিহীন। শুধু সম্পত্তিই নয়, তার যোগসাজশে সিভিল এভিয়েশনের সংরক্ষিত নিচু জমি ভরাট করা হয়েছে। এ জন্য সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হয়েছে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর আশকোনা হাজী ক্যাম্প-সংলগ্ন রাজউকের অনুমোদনহীন আশিয়ান সিটি প্রকল্পের নিজস্ব কোনো রাস্তা আগে ছিল না। আশিয়ান সিটির আবাসন প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে।

এতদিন সেখানে আশিয়ানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যাপক আনাগোনা থাকলেও বর্তমানে সেখানে তাদের একজন কর্মচারীকেও খুঁজে পাওয়া গেল না। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রকল্প না হলেও আশিয়ানের এমডি নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্লট বরাদ্দের নামে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার ওই প্রকল্পের জন্য সিভিল এভিয়েশনের সিভিল ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোকাব্বর আলী বিপুল অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে সিভিল এভিয়েশনের জায়গায় জলাশয় ভরাট করে পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার ভুয়া প্রাক্কলন করে আশিয়ান সিটির জন্য যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করেছেন। সিভিল এভিয়েশনের সম্পত্তি শাখার একাধিক কর্মকর্তা জানান, ৩০ ফুট প্রশস্ত ও দুই কিলোমিটার লম্বা এই রাস্তাটি সিভিল এভিয়েশনের ২৫ বিঘারও বেশি জমি দখল করে তৈরি হলেও এটি আশিয়ান সিটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

আর উচ্ছেদকৃত পরিবারগুলো কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে বাড়িঘর তুলে বসবাস করে আসছিল। কিন্তু উচ্ছেদের পর থেকে তারা অমানবিক জীবন কাটাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাস্তা নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিভিল ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোকাব্বর আলী বলেন, এ রাস্তাটি করা হয়েছে মূলত কাওলার সিভিল এভিয়েশনের কোয়ার্টারে অবস্থানরতদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই ওই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, তাদের চলাচলের জন্য আশকোনার ভেতর দিয়ে পুরনো একটি রাস্তা রয়েছে।

তা ছাড়া কাওলা, কসাইবাড়ি ও গাওয়াইর রাস্তা দিয়ে তারা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন। এরপর কেন সিভিল এভিয়েশনের শত শত কোটি টাকার সম্পত্তির ওপর আরেকটি অপ্রয়োজনীয় রাস্তা করা হলো সেটা কারও বোধগম্য নয়। এ রাস্তা দিয়ে তো সারা দিন ১০০ মানুষও যাতায়াত করে না। কাওলার স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, রাস্তাটি কোনো এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত নয়। মূলত আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সুবিধার জন্যই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে।

আশিয়ান সিটি প্রকল্প বাতিল হয়ে যাওয়ায় রাস্তাটিও পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।

বিষয়টি নিয়ে দুদক তদন্ত শুরু করলে বার বার তাদের সিভিল এভিয়েশন থেকে অসহযোগিতা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুদক সূত্র জানায়, সরকারি টাকায় কীভাবে আশিয়ান সিটির রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে তা বার বার জানতে চাওয়া হলেও সিভিল এভিয়েশন থেকে তার কোনো জবাব দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি লিখিত চিঠি দেওয়া হলেও কোনো তথ্য-উপাত্ত দুদককে দেওয়া হচ্ছে না। দুদকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ জন্য তারা বিষয়টি জানিয়ে অচিরেই ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেবেন।

এদিকে সিভিল এভিয়েশনের সম্পত্তি শাখা সূত্র জানায়, তাদের অনুমতি বা মতামত না নিয়েই রাস্তাটি নির্মাণ করিয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বাধীন প্রকৌশল বিভাগ। এ ব্যাপারে তদন্তও হয়েছে। তদন্ত করেন সম্পত্তি শাখার উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সিভিল এভিয়েশনের জমির ওপর নতুন রাস্তা করা হলেও তাতে সম্পত্তি শাখার কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এমনকি ড্যাপের কোনো মতামত নেওয়ারও প্রয়োজনবোধ করেনি তারা।

এ রাস্তায় সিভিল এভিয়েশনের কোনো স্বার্থ রক্ষা হয়নি। কারণ, যেখানে রাস্তা নির্মাণ হয়েছে, সেখানে তাদের কোনো দফতর, কোয়ার্টার বা অন্য কোনো স্থাপনা নেই। সেখানে অদূরভবিষ্যতে কোনো স্থাপনা নির্মাণের সম্ভাবনাও নেই। এক পর্যায়ে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মুহ. আ. হামিদ জমাদ্দার বিষয়টি তদন্ত করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে তার পর্যবেক্ষণ হলো- 'মন্ত্রণালয়ে প্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিও পত্রে বিদ্যমান রাস্তাটি মাটি ভরাটকরণসহ পাকাকরণের কথা বলা হলেও সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটি জলাশয় ভরাট করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে করা হয়েছে।

ওই রাস্তাটি টেকসই করতে হলে সিভিল এভিয়েশন প্রান্তে দেয়াল নির্মাণ, দেয়াল রক্ষা করতে হলে পাইলিং করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রায় ৫০-৬০ ফুট করে জলাশয় ভরাট করা প্রয়োজন। এর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে। সিভিল এভিয়েশনের স্টাফ কোয়ার্টার ও স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদানের জন্য রাস্তাটি করা হয়েছে। মূলত ওই রাস্তাটি নির্মাণে বহিরাগতরাই বেশি সুবিধা পাবেন।

জনসাধারণের জন্য রাস্তা নির্মাণে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, সিটি করপোরেশন বা এলজিইডিকে অনুরোধ জানানো যেত। রাস্তাটি হাজী ক্যাম্পের সঙ্গে লিংক করার ক্ষেত্রে হাজী ক্যাম্পের দেওয়াল যদি ভাঙা না যায়, তাহলে রাস্তাটি অর্থহীন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ডিও পত্র পাওয়ার পর রাস্তা নির্মাণ করা সিভিল এভিয়েশনের জন্য এটি করা ঠিক হবে কি-না, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে রাস্তা নির্মাণের নির্দেশনা নেওয়া প্রয়োজন ছিল। এ তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পরিকল্পনা শাখা-১ এর সিনিয়র সহকারী প্রধান জাহান আরা স্বাক্ষরিত পত্রে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানকে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে জবাব দিতে অনুরোধ জানালেও, ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, উল্টো প্রচলিত বিধি-বিধান উপেক্ষা করে সেই প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকাব্বর আলীকে ১৫০ কোটি টাকার সিভিল এভিয়েশনের সদর দফতর নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব নিয়েই তিনি সিএএবির কাওলা আবাসিক এলাকায় দুই কোটি টাকার বালু দিয়ে জলাশয় ভরাট ও ৪২টি আবাসিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

এখানেও তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার সমিতির একাধিক সদস্য জানান, সমিতির সদস্য নোয়াখালীর বাহার মিয়াসহ অনেকের কাছ থেকে তিনি পাঁচ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন ভবন নির্মাণের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য। এ ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান বরাবর ঠিকাদার সমিতির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হলে এবারও তদন্ত শেষে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বহাল তবিয়তে থেকেই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন সিভিল এভিয়েশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকাব্বর আলী।

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে রাজধানীর উত্তরায় আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের আশিয়ান সিটি প্রকল্পটি (দক্ষিণখান, আশকোনা ও শিয়ালকাটা) অবৈধ ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত।

এ প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদফতরের দেওয়া ছাড়পত্র বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি বছর ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে এ রায় দেন। রায়ের পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী ইকবাল কবির সাংবাদিকদের বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে আদালত রুল মঞ্জুর করে আশিয়ান সিটি প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা করেছেন। ফলে এ প্রকল্পের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। আর জলাশয় ভরাট করে পরিবেশের ক্ষতি করায় আশিয়ান সিটিকে করা ৫০ লাখ টাকা জরিমানা বহাল থাকবে।

এ প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশ, নিজেরা করি এবং পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর রিট করে। এতে বলা হয়, আশিয়ান সিটি ৪৩ দশমিক ১১ একর জমির জন্য অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু ২৩০ দশমিক ৪৬ একর জমিতে কাজ করছে। যে জমি ভরাট করছে, তা প্লাবনভূমি। প্রাথমিক শুনানির পর গত বছরের ২ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আশিয়ান সিটি আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাট, বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্লট বিক্রি বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে রাজউকসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেন।

পরিবেশ অধিদফতরের দেওয়া আশিয়ান সিটির অবস্থানগত ছাড়পত্র, এর নবায়ন, রাজউকের অনুমোদন এবং পরিবেশ অধিদফতরের ৫০ লাখ টাকা জরিমানা কমিয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আদেশ স্থগিত করা হয়। রুলে ওই প্রকল্পকে পরিবেশ অধিদফতরের দেওয়া অবস্থানগত ছাড়পত্র ও এর নবায়ন, মন্ত্রণালয় থেকে জরিমানা কমানো এবং রাজউকের দেওয়া অনুমোদন কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। জলাশয় ভরাটের অভিযোগে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আশিয়ান সিটিকে করা অধিদফতরের ৫০ লাখ টাকা জরিমানা কমিয়ে পাঁচ লাখ টাকা নির্ধারণ করে।

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.