আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনৈতিক ধর্মঘট

চিকিৎসা একটি মহান পেশা। এ পেশায় যারা নিয়োজিত তারা আর্তমানবতার সেবাকে প্রাধান্য দেবেন এমনটিই আশা করা হয়। আমাদের দেশে সাংবিধানিকভাবে চিকিৎসাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটি সরকার শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে পেশার প্রতি দায়বোধের অভাব রয়েছে। এ দেশে যারা চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের সিংহভাগ সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন। তাদের চিকিৎসক হয়ে ওঠার পেছনে জনগণের ট্যাঙ্রে টাকাই সিংহভাগ ব্যয় হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে তারা জনগণের প্রতি আদৌ কোনো দায়বোধ করেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আমাদের দেশে সরকারি হাসপাতালে কাজ করে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখার কাজে ব্যস্ত থাকেন এমন চিকিৎসকের সংখ্যা কম নয়। সরকারি হাসপাতালে চাকরি করে বেসরকারি ক্লিনিকের মালিক হওয়া তো আরও অনৈতিক। স্বাধীনতার পর গত ৪৩ বছরে এ ব্যাপারে কোনো নীতিমালা না থাকায় একশ্রেণীর চিকিৎসক যা ইচ্ছা তাই করার চেষ্টা করছেন। চিকিৎসা পেশাকে তারা বেছে নিয়েছেন যেভাবেই হোক পকেট ভর্তির পেশা হিসেবে। দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের চিকিৎসক সংগঠন তাদের এই লুটেরা মনোবৃত্তিকে উৎসাহিত করে চলেছে। এই দুই দলের যখন যারা ক্ষমতায় থাকে তাদের লেজুড় চিকিৎসক সংগঠনের নামে চলে যাচ্ছেতাই কাণ্ড। রাজশাহীতে ভুল চিকিৎসায় একজন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর জের হিসেবে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের চিকিৎসকরা যেভাবে ধর্মঘট পালন করেছেন এবং রোগীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন তা কোনো মানবিক পেশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। দুনিয়ার সব দেশেই অবহেলা কিংবা ভুলের জন্য চিকিৎসকদের জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হয়। যে দেশে সাধারণ মানুষের ট্যাঙ্রে টাকায় চিকিৎসক বানানো হয় সে দেশে এ দায় তো বেশি হওয়াই উচিত। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক দোষী না হলে বিচারের মাধ্যমেই মুক্তি পেতেন। সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ধর্মঘটে নামা এবং রোগীদের জীবনকে জিম্মি করা চিকিৎসা পেশার সুনামকেই কলঙ্কিত করেছে। এটি সৎ চিকিৎসকদের জন্যও লজ্জার ও অনুতাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বললেও ভুল হবে না।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.