আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা প্রাইভেট ভার্সিটির প্রাইভেট পোলাপান

জীবনের প্রথম ভূলটা করছিলো আমাগো সরকারেরা! পরীক্ষায় এ+ এর মত ভাইরাস ছড়ানোর মাধ্যমে! আর সেই ভাইরাসে আ্ক্রমনের শিকার আমরা। ২য় ভূলটা করছি আমরা …….সরকারি ভার্সিটির বারান্দায় যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন না করে! তার মানে …..এডমিশন টেষ্ট এ নেগেটিভ রিপোর্ট! আর তাই ২ ঘন্টার প্রতিযোগীতায় হেরে এখন ৪ বছরের প্রতিযোগীতায় নামতে হয়েছে। পড়া লেখাতো চালাতেই হবে!!….কি আর করা! যত বিপদ বাবা মায়ের! অতএব একটা প্রাইভেট ভার্সিটি খুজে বের করলেন! যা কিনা তাদের অযোগ্য সন্তানদের যোগ্য চরনক্ষেত্র।ভর্তি করানোর আগেই ডিকলার করে দিলেন…..জিপিএ ৩.৫ এর কম হলে বেশী দিন পড়াশোনা করাতে পারবে না তারা! আর তাদের ধারনা প্রাইভেট ভার্সিটিতে চেহারা দেখেই নাম্বার দেয়! যদিও আমার চেহারা দেখে নাম্বার দিলে ৪০ এর বেশী পাওয়ার যোগ্য না! অনেক ভালো কলেজের ষ্টুডেন্ট ও আমাদরে ভার্সিটিতে পাশ নাম্বার পেতেই ঘাম ঝরে যায়!কিন্তু তা বাবা মা আর বর্তমান যুগের মানুষদের কাছে অজানা! পড়া লেখার কথা বাদ এখন আসি খেলাধুলার অধ্যায়ে…… কয়েকদিন আগ থেকে শুরু হওয়া আন্ত:ক্রিকেট টুর্নামেন্টে আমাদের সেকশনও অংশ নিয়েছে। আমাদের সেকশনের টিম এ আমার ১ম দিকে জায়গা না হলেও আজকের ম্যাচ এ বেশ কিছু খেলোয়ার এর অপারগতা অথবা অসুস্থতার বদৌলতে আমার চান্স হয়ে যায়! আমাদের সঘষিত ক্যাপ্টেন যদিও আমাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন! যে আমি কি যে খেলবো! এক ফ্রেন্ডের জবান বন্দির দরুন আমাকে নিতে রাজি হয়। আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো!....দোস্ত তুই খেলতে পারিস তো! লজ্জা পাওয়ার কথা!কিন্তু পেলাম না! কারন চান্স পাওয়ার আনন্দে সব ভুলে গিয়েছিলাম! হ্যাঁ দোস্ত চালিয়ে নেয়া যাবে! দোস্ত কি পারস তুই! দোস্ত সবই মোটামুটি পারি! কিন্তু কিপিং এর দ্বায়িত্বটা দিলে মনে হয় ভালো করতাম! (প্রবলভাবে কিছু বলার সাহস পাচ্ছিলাম না! কারনটা হলো…..একই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এর আগের ম্যাচ এ আমাদের সেকশনের এক খেলোয়ার নিজের সম্পর্কে এভাবে বর্ননা তুলে ধরেছিলো!......''দোস্ত যেদিন আমার খেলা উঠবে ধরে নে সে দিনটা শুধু আমার এ’’……কিন্তু মাঠে যা দেখাইছে!! তাতে মনে হইলো! সপ্তাহে ৭ দিনের বাইরেও ১টা দিন আছে! আর ওই দিনটাতেই ও ভালো খেলে!) কিপারের দায়িত্ব চাওয়াতে……ক্যাপ্টেন ..প্রখর দৃষ্টিতে আমার দিকে এমনভাবে তাকালো! যে আমার জীবনের ৩য় ভূলটিও আমি ইতোমধ্যে করে ফেলেছি! মোটে চান্স পায় না! আবার করবে কিপারী!! মুড দেখেই বুঝা হয়ে গেছে ….যে এটা আমার অন্যায় আবদার ছিলো! পরে খোজ নিয়ে দেখলাম আমাদের ক্যাপ্টেনই নাকি কিপিং এর গুরু দ্বায়িত্বটা পালন করছেন! খেলা শুরু হবে….আগের ম্যাচ হারার কারনে….চাপটাও একটু বেশী ছিলো! বলে রাখা ভালো….আমাদের টুর্নামেন্টগুলো আমাদের ভার্সিটির পার্শ্বে থাকা একটা সরকারি ভার্সিটির হলের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়! তার জন্য অবশ্য যথেষ্ঠ পরিমাণ টাকা ও দেয়া হয় তাদের! হঠাত করে আমার এক ফ্রেন্ড দৌড়ে এলো! কি হলো! দোস্ত আহনাফরে( আমাদের এক ভদ্র ফ্রেন্ড) তো এই হলের এক বড় ভাই গায়ে হাত তুলছে!! শুনেতো সবার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো! দৌড়ে গেলাম…….গিয়ে দেখলাম ফ্রেন্ডটা চলে গেছে মন খারাপ করে….ঘটনার নায়ক, ভিলেন এর অনুপস্থিতিতে ওইখানকার গার্ডকে একটু ঝাড়ার চেষ্টা করলাম…..কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই নায়কের বেশ এ ভিলেনের পার্টধারী বড় ভাইয়ের আগমন! কি হইছেরে! জ্বি ভাই…আমাদের ফ্রেন্ডকে কে যেন মারছে!! আপনাদের হলের! ওর দোষ কি ছিলো! হ্যাঁ আমি এ মারছি!! তো কি হইছে! জ্বি ভাইয়া!! আপনি এ মারছেন…..কিন্তু ওর অপরাদটা কি! ও বেয়াদপি করছে! ফ্রেনডটাকে ডেকে আনা হইলো!.... কি করছোসরে দোস্ত! জানি না! শুধু থাপ্পর খাইছি এইটা জানি!! উনার ভাবে বুঝা যাইতেছে উনি আরো কয়েকটা থাপ্পর এর আয়োজন করে রাখছেন! সুযোগ পেলেই প্রয়োগ করে বসবেন! পরে বুঝলাম উনার সাথে কথা বলে লাভ নেই! আমাদের ভার্সিটির বড় ভাইদের বলা লাগবে! গিয়ে সব বলার পর উনাদের কথা শুনে খুবই অবাক হলাম! উনাদের ভাষ্য মতে উনাদের মাঠে খেলতেছি! কিছু করার নাই! আমাদের ভার্সিটির এক ডিপার্টমেন্টের ষ্টুডেন্ট এর সম পরিমান ষ্টুডেন্ট ও তাদের পুরা ভার্সিটিতে নেই! তারপর ও কি এমন পাওয়ার! যে আমাদের মাথা নিচু করে এই অন্যায় মনে নিতে হবে! সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা না খেলে চলে যাবো! কিন্তু কিছুক্ষন পর ভাইয়াদের অনুরোধ আর ….ওই ভিলেন বড় ভাইটার সম্পর্কে শুনে নিজেদের অসহায় মেনে খেলতে বাধ্য হলাম! উনি নাকি ওই ভার্সিটির ভি.পি! আর সরকারি দলের কোন একটা নেতার পদে আছেন! সরকারি দলের নেতা আর ওদের মাঠ হওয়ায়……..এতো ম্যান পাওয়ার থাকা স্বত্বেও অসহায় হয়ে ফিরে যেতে হলো! সরকারি মাল হওয়ায়…..সরকারি আচরন.…মেনে নিলেও এটা মানতে পারলাম না!...যে ১টা ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েই কি তারা আমাদের চেয়ে বেশী ব্রিলিয়ান্ট হয়ে গেলো!! যে সরকার আমাদের উপর থেকে পুরো দায় দ্বায়িত্বই উঠিয়ে নিয়েছেন! ওদের আর আমাদের মধ্যে মুলত একটাই পার্থক্য হতে পারে আর তা হলো…ওরা এডমিশন টেষ্ট এর আগে সিরিয়াস ছিলো! আর আমরা পরে………এছাড়া আমি জোর গলায় বলতে পারি যে, আমরা তাদের তুলনায় কোন অংশে কম না(রাজনীতি, মারামারি বাদে)!! তাই সরকারের কাছে আমাদের পক্ষ থেকে ১টা আবদার থাকবে ….যে, প্রাইভেট ভার্সিটি গুলো ও কিন্তু দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ অবদান রাখছে! তাই ভালো কিছু প্রাইভেট ভার্সিটিতে আপনাদের অনুদান ও পৃষ্ঠপোষকতা খুবই দরকার! শুধু সরকারি ভার্সিটির নামে কিছু নেতা না বানিয়ে অন্য দিকেও একটু নজর দিন! এই নেতারা দেশের ভাবমূর্তি কতটুকু উজ্জল করতে পারবে কে জানে! কিন্তু একজন ভালো ষ্টুডেন্ট বাইরে এবং দেশে সমান অবদান রাখতে সক্ষম দেশের জন্য। ওহ্!! খেলার রেজাল্ট টা তো বলা হয় নাই! আমরা ২ উইকেটে হেরে যাই! কিন্তু খেলা যথেষ্ঠ উত্তেজনার হয়েছিলো! শেষ ওভারের ১ বল হাতে রেখেই আমাদের বিপক্ষ দল জয় তুলে নেয়! (সরকারি ভার্সিটিকে নিচু করছি না! আমাদের অবস্থা তুলে ধরলাম মাত্র)  


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.