আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাতীয় জাদুঘরে অগ্নিকাণ্ড

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে রোববার সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা আধা ঘণ্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনে অগ্নিনির্বাপক বাহিনী।
আগুন নেভানোর পরপর কাউকে ঢুকতে দেয়া না হলেও বিকালে সংবাদ সম্মেলনের পর ক্ষতিগ্রস্ত গ্যালারিটি সাংবাদিকদের দেখানো হয়।
চতুর্থ তলার গ্যালারির ইরানি নিদর্শনের অংশের ফলস সিলিং (নকল ছাদ) অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দেখা যায়। গ্যালারির আর কোনো অংশে আগুনের কোনো চিহ্ণ দেখা যায়নি।    
সংস্কৃতি সচিব রনজিত কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, কোনো নিদর্শনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

অগ্নিকাণ্ডের কারণে রোববার বন্ধ থাকলেও সোমবার থেকে প্রদর্শনী যথানিয়মে চলবে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটিকে নিছকই দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। মনে করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে এই আগুনের সূত্রপাত।
তবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে নয় সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।

সকাল ৯টার দিকে চারতলা জাদুঘর ভবনের চতুর্থ তলার ৪৪ নম্বর গ্যালারিতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।



খবর পেয়ে এসে আধা ঘণ্টার মধ্যে আগুন নেভানো হয় বলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন্স) মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান।
৪৪ নম্বর গ্যালারিতে বিশ্বসভ্যতার অংশ হিসেবে চীন, কোরিয়া, ইরান ও সুইজারল্যান্ডের নিদর্শন রয়েছে।  
সংস্কৃতি সচিব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এর মধ্যে ইরানি অংশেই আগুন লাগে।
তিনি জানান, জাদুঘরে প্রাত্যহিক প্রদর্শনী শুরু হওয়ার আগে নিয়মানুসারে একটি কমিটি গ্যালারিগুলোর দরজা খোলে। বন্ধ অবস্থায় প্রত্যেক গ্যালারির বৈদ্যুতিক সংযোগ গ্যালারির বাহিরে থেকে বন্ধ করা থাকে।


“কমিটি দরজা খোলার আগে বাহিরে থেকে সুইচে চাপ দিলে গ্যালারিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু হয়। আজকের ক্ষেত্রে কমিটি দরজা খোলার জন্য সুইচে চাপ দেয়ার পরই সম্ভবত শট সার্কিট হয়ে আগুন লেগে যায়। ”
আগুন দেখে জাদুঘরের কর্মীরা দ্রুত ফায়ার অ্যাস্টিংগুইসার দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টার পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপক বাহিনীতে খবর পাঠায়।
জাদুঘরের মহাপরিচালক কামরুন নাহার খানম বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে, বাহিরে থেকে বৈদ্যুতিক সুইচ চাপার সাথে সাথেই গ্যালারির একটি অংশে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। ”
বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর কর্মকর্তা মাহবুবেরও ধারণা।


রনজিত বিশ্বাস জানান, আগুন লাগার আধা ঘণ্টার মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ৪৩ এবং ৪৪ নম্বর গ্যালারির প্রত্ননিদর্শনগুলো কাচের বাক্সের ভেতরে থাকায় সেগুলোর কোনোটিরই ক্ষতি হয়নি।

বিশ্বসভ্যতা গ্যালারির বেশির ভাগ প্রত্ননিদর্শনই রেপ্লিকা (নকল) জানিয়ে তিনি বলেন, “আগুন নিভে যাওয়ার তালিকা অনুসারে মিলিয়ে দেখেছি। আমাদের কোনো আর্টিফ্যাক্টই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। প্রত্যেকটিই অক্ষত আছে।



“গ্যালারিটি পরিষ্কার করে আগের অবস্থায় নেয়া হয়েছে। আশা করা যায়, আগামীকাল থেকে জাদুঘর আবার দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া যাবে,” বলেন সংস্কৃতি সচিব।
অগ্নিকাণ্ড কোনো ষড়যন্ত্রের ষড়যন্ত্রের অংশ মনে করেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটি একটি দুর্ঘটনা ছিল।
“এরপরও ড. শিখানুর মুন্সিকে প্রধান করে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে দেখবে, কেন এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটল।

কারো অবহেলা ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। ”
ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে রনজিত বিশ্বাস বলেন, জাদুঘরের কর্মীদের জন্য প্রতিবছর অগ্নিনির্বাপন মহড়া হয়। এবছর এ মহড়াটি হয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারি।
“এছাড়াও পিডিবি ও পিডব্লিউডিকে জানানো হয়েছে, তারা যেন জাদুঘর ভবনটির অগ্নিনির্বাপন  ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখে, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। ”
শাহবাগে ২ লাখ বর্গফুট জায়গা নিয়ে ১৯৮৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করা এই জাদুঘরে বাংলার প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে ভারতীয় সভ্যতার অনেক দুর্লভ নিদর্শন রয়েছে।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.