আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মা

জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাবের আহ্বান ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা। জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি, জাতীয় সংগীত গাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করা, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতন ঘটিয়ে গিনেজ বুকে রেকর্ড গড়ার দাবি, বিরোধী দলকে সংসদ থেকে পদত্যাগ করার আহ্বান না করলে চামড়া তুলে নেওয়ার হুমকির বিষয়ে গতকাল সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ, জাসদ এমপি মাইনুদ্দিন খান বাদল, তরিকত ফেডারেশনের এমপি মওলানা নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডার দাঁড়িয়ে এ দাবি জানানো হয়। সংসদের বৈঠকের শুরুতে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন জাসদের মঈনুদ্দিন খান বাদল। টানা আড়াই ঘণ্টার বেশি পয়েন্ট অব অর্ডারের ওপর আলোচনা চলে। আমির হোসেন আমু বলেন, খালেদা জিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে যে রাজনীতি করছেন, তা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে আন্তর্জাতিক বিশ্ব ও দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতি। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী রাজনীতি।

তার এই রাজনীতি আইনগতভাবে প্রতিহত করা উচিত। তার বক্তব্য সংবিধানবিরোধী। তা বিচার ব্যবস্থার অধীনে আনার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে পারেননি। বিচারের রায় বাস্তবায়ন ঠেকাতে পারেননি। তার গাত্রদাহের শেষ নেই। সরকার যখন জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে বিশ্বে নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে- সেটা তাদের গাত্রদাহ সৃষ্টি করেছে। তাই তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। তিনি বলেন, তাদের আন্দোলন আওয়ামী লীগ কিংবা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নয়, তাদের আন্দোলন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। জিয়ার আমলে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটেছিল। আর খালেদা জিয়ার সময় জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল। এদেশকে পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছেন। এখন যে বিতর্ক সেটা পতাকার বিরুদ্ধে, দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ সংবিধান লঙ্ঘন করলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার করা যায়। ইতিহাস বিকৃতির নামে তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। এটাকে ছেড়ে দেওয়া যায় না।

তোফায়েল আহমদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া নানান টেনশনে পরাজয়ের রক্তক্ষরণে পাগলের মতো আবোল-তাবোল বলতে শুরু করেছেন। বারবার পরাজিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া শক্ড। তিনি ৯৬ সালে পরাজিত হয়েছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল করতে গিয়ে পরাজিত হয়েছেন। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যা চেষ্টা করেছেন সেখানেও ব্যর্থ হয়েছেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন দেশের ৭ম প্রেসিডেন্ট। একজন স্বৈরশাসক। জাতির জনকের হত্যার সঙ্গে তার নাম এসেছে। তিনি এ জাতির সব চেয়ে বড় ক্ষতি করে গেছেন। শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে গেছেন। তিনি বলেন, যেসব কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন এসব কথাবার্তা বন্ধ করেন। এসব কথাবার্তা ভালো না। দেশের গণঅভ্যুত্থান তো দূরের কথা। কোন আন্দোলন করেও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবেন না। তিনি বলেন, প্রত্যেক সফল নেতা নিজের দেশ ও জাতিকে বড় করতে চান। ২৬ মার্চ লাখো কণ্ঠে প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়েছে। দেশের কোটি কোটি মানুষ জাতীয় সংগীত গেয়েছে। এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে কটাক্ষ করে তিনি আবারও প্রমাণ করেছেন তিনি পাকিস্তানকেই ভালোবাসেন।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, তাদের মাথার তার ছিঁড়ে গেছে। বিএনপির এখনকার রাজনীতি মা পুত্রধন ও নেতা-কর্মীরা তার ছেঁড়া রাজনীতি করছেন।

মাইনুদ্দিন খান বাদল বলেন, খালেদা জিয়া যা বলেছেন, তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার দাবি জানান তিনি। নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, খালেদা জিয়া তার বক্তব্যের মাধ্যমে সংবিধানের ৭ ক খ ও ২ অনুচ্ছেদের ক খ ধারা সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘন ও দেশদ্রোহিতার মামলা করার অনুমতি চেয়ে তিনি সংসদে এ বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানান।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.