আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বরগুনায় কেন্দ্র দখলের উৎসব

নজিরবিহীন কারচুপি ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার বরগুনার চারটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হয়েছে।
বরগুনা সদরে ৩৩টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনতাই, জাল ভোট প্রদান এবং গত রোববার গভীর রাতে আমতলী উপজেলায় বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে তাতে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করার ঘটনা ঘটেছে।
বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে বামনা উপজেলার ২২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২১টি দখলে নিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সভর্তি করা হয়েছে। দুপুর ১২টার মধ্যে পাথরঘাটা উপজেলার মোট ৫১টি কেন্দ্র দখলে নিয়ে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করার এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীদের সমর্থক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে।


কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে বেলা আড়াইটার মধ্যে বামনা, পাথরঘাটা ও আমতলী উপজেলার বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সংবাদ সমেঞ্চলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে সদরের সোনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে কোনো ভোটার পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মীদের কেন্দ্রটি দখল করে জাল ভোট দিতে দেখা গেছে। এখানে ৭০-৭৫ জন ভোটার অভিযোগ করেন, তাঁরা কেন্দ্রে এসে দেখেন তাঁদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে।
বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মো. হালিম অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকেরা সকাল থেকে ৩৩টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মারেন।

বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী রেজবুল কবির এই নির্বাচনকে তামাশার নির্বাচন আখ্যা দিয়ে বলেন, ভোট ডাকাতিতে আওয়ামী লীগ এরশাদকেও হার মানিয়েছে।
বামনা উপজেলার ২২ কেন্দ্রের ২১টি বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে দখলে নেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকেরা।
বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মানযুরুর রব অভিযোগ করেন, বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে একটি ছাড়া সব কেন্দ্র আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা দখল করে।
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীরা আমতলীর বেশির ভাগ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে সিল মেরে বাক্সভর্তি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী সামসুদ্দিন আহমেদ।
গতকাল সকালে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করার পর সাতটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।


আমতলীর উত্তর-পূর্ব কলাগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন জানান, ব্যালট পেপার ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে তিনি রোববার রাতে ওই বিদ্যালয়ে অবস্থান করছিলেন।
ভোর চারটার দিকে পাঁচ-সাতজন যুবক এসে তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন এবং ব্যালট পেপার ও সিল চান। তিনি দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা তাঁকে হুমকি দিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেন। পরে বিষয়টি তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানান।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহামঞ্চদ আলী বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে আমাদের চেষ্টার কোনো ক্রটি ছিল না।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.