আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাতজাগা নারী-পুরুষ একা থাকে!

এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব নারী-পুরুষ রাত জেগে থাকেন, তাঁদের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কে থাকার সম্ভাবনা কম, তাঁরা ঝুঁকি গ্রহণে বেশি অভ্যস্ত এবং তাঁদের একা থাকার সম্ভাবনাই বেশি। ঘুম আর জাগরণের ধরন থেকে মানুষকে দুভাগে ভাগ করা যায়। যাঁরা রাত জাগেন এবং সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন, তাঁরা প্যাঁচা স্বভাবের বা ‘রাতের পাখি’। আর যাঁরা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠেন, তাঁরা ‘সকালের পাখি’। সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ এই রাতের পাখিদের রোমান্স ও ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতার কথা জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক মানব উন্নয়ন বিভাগের অধ্যাপক দারিও মায়েস্ত্রিপিয়েরি এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাতের পাখি দলের নারী ও পুরুষের একা থাকা এবং স্বল্পস্থায়ী রোমান্সে থাকার সম্ভাবনা সকালের পাখি দলের তুলনায় বেশি। ’ তিনি বলেন, নারীদের তুলনায় পুরুষ রাতের পাখিদের যৌন-সঙ্গীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। আর এ জাতের নারী বা পুরুষেরা বেশি বেশি ঝুঁকি গ্রহণে অভ্যস্ত।

রাত জেগে থাকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক এবং ঝুঁকি গ্রহণের এই প্রবণতার যোগাযোগের শিকড় মানুষের বিবর্তনের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করছেন মনোবিজ্ঞানীরা।

অধ্যাপক মায়েস্ত্রিপিয়েরি বলেন, ‘বিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিত থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে রাতের পাখি দলের নারী-পুরুষেরা এমনভাবে বিবর্তিত হয়েছে, যেখানে তাঁরা স্বল্পস্থায়ী সম্পর্কে অভ্যস্ত। অর্থাত্ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একগামী সম্পর্কের বাইরে যৌনতায় লিপ্ত। ’

এটা হতে পারে যে, বিবর্তনের শুরুর দিকে সন্ধ্যাকালেই বেশি সক্রিয় থেকে সামাজিক এবং যৌন কর্মকাণ্ডের সুযোগ পেতেন তাঁরা। কেননা এ সময়টাতেই প্রাপ্তবয়স্করা বাচ্চা-কাচ্চা লালন-পালন এবং অন্যান্য কাজ থেকে অবসর পেতেন। আর ঝুঁকি গ্রহণের বিষয়টিও বিবর্তনের এই পর্যায় থেকেই এসে থাকতে পারে।

এই গবেষণার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন ১১০ জন পুরুষ এবং ৯১ জন নারী। স্বেচ্ছাসেবকেরা ঘুমের অভ্যাস এবং যৌন সম্পর্কের তথ্য-উপাত্তের পাশাপাশি নিজেদের লালা এবং কর্টিসোল ও টেস্টোস্টেরোন হরমোনের নমুনাও সরবরাহ করেছেন পরীক্ষার জন্য।

সাধারণত পুরুষদের শরীরে কর্টিসোল এবং টেস্টোস্টেরোন হরমোনের মাত্রা নারীদের তুলনায় বেশি থাকে। কিন্তু রাতের পাখি জাতের নারীদের শরীরে পুরুষদের কাছাকাছি মাত্রায় কর্টিসোল হরমোন দেখা যায়। গবেষকেরা বলছেন, শরীরে কর্টিসোল হরমোনের মাত্রা সম্ভবত বেশি ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতার নেপথ্যে একটি জৈবিক কারণ হিসেবে ভূমিকা রেখে থাকতে পারে।

অধ্যাপক মায়েস্ত্রিপিয়েরি জানান, কারা রাতের পাখির স্বভাব পাবেন আর কারা সকালের পাখি হবেন, সে বিষয়টি অনেকাংশে জৈবিক ও জিনগত (বংশগতির বাহক) উত্তরাধিকারের ওপর নির্ভরশীল হলেও পরিবেশগত প্রভাব থেকেও তা ঘটতে পারে। রাতের পালায় চাকরি-বাকরি করা বা বাচ্চা-কাচ্চার দেখাশোনায় রাত জেগে থাকা থেকেও এ অভ্যাস হয়ে যেতে পারে।

গবেষণার ফলাফলে আরও বলা হয়েছে, নারী-পুরুষের ঘুমের অভ্যাসের এই বিষয়টি সাধারণত বয়ঃসন্ধির পর স্পষ্ট হয়। আর নারীর ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ঘুমের এমন অভ্যাসও কমে যেতে থাকে কিংবা দুর্বল হয়ে যায়। গবেষণাপত্রটি ‘ইভোলিউশনারি সাইকোলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

   

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.