আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আটকে পরা বৃষ্টির রাত

আজকাল ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের সময়ে ফেসবুক ছাড়া ভাবাই যায়না কাউকে। তাই হয়তো মেয়েটা ফেসবুকটা বন্ধ করে দিলো, যদিও আপাত দৃষ্টিতে তাই মনে হয়। একদিন স্কাইপি তে একটা রিকোয়েস্ট, কেউ একজন অ্যাড করেছে,কি মনে করে ও তাই করলো। আজাইরা একটা ভাবনা,কোন দরকার ছিলোনা,যাক,অ্যাড করে ফেলেছে তো কথা বেশি না বললেই হলো, তারপর একদিন ডিলিট করে দিলেই হবে।
নাহ্ , তা আর হলো কোথায়? কথা হলো, দেখা গেল ওর চেয়ে ছোট ছেলেটা।

ভালোই হলো, মেয়ে বলে কথা! তার উপর অজানা ছেলে,কিরকম কে জানে!

মাঝে মাঝে কথা হতে থাকলো আর খেয়াল করলো ছেলেটা ভালো, সহজ, সল্পভাষী। এরকম কম কথা বলা ছেলেরা আবার অচেনা মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলে কে জানে! বলছেই তো। ছেলেটা বলছে,
-তোমার কি ভালো লাগে?
-কোন বিষয়ে?
-রং।
-কালো,সাদা
দেখা গেলো ছেলেটার ও কালো সাদা পছন্দ।
মেয়েটার শিম ভালো লাগেনা,ছেলেটাও শিম পছন্দ করেনা।

মেয়েটা ভাইবোনের মাঝে সবার বড়,ছেলেটাও। অন্ধকার ভালো লাগে দুজনের,মোমবাতি আর বৃষ্টি ও। এতোগুলো মিলে ছেলেটা অবাক। মেয়েটা ভাবে এই কয়টা মিল তো তার বয়েসের অনেকের সাথেই হতে পারে। এই আর এমন কি! তবে এই কম কথা বলা ছেলেটার খুশিতে নিজেও খুশি হয়।

ভাবে এই বা কম কি!

নিজেদের মাঝে বেশ কয়েকটা মাস কথা বন্ধ থাকে,কোন খোঁজ নেই কারোর, মেয়েটা অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়ায় এই ব্যপারটা হয়।
দুজনের কারোরই মনে পড়েনি। মনে পড়বেই বা কি করে,আজকাল মানুষ তো তার আশপাশ নিয়েই ব্যস্ত, কোথাকার কোন ছেলে আর কোথাকার কোন মেয়ে কেনই বা দরকার এত টেক্সট চালাচালির?

তারপর অনেকদিন পর,আবার একটা টেক্সট আসলো মেয়েটার ফোনে, কি খবর?তুমি কেমন আছো? রিপ্লাই করলো মে
অনেকদিন পর ছেলেটা ওকে দেখতে চাইলো, তাও আবার অনুমতি নিয়ে! বলেছিলো ছবি দিবে,দিলো ও। ছেলেটাও দিলো। কিন্তু ওর ভালো লাগেনি, চোখ ঢাকা ছবিতে মানুষকে দেখা যায়না।

কথা হওয়ার পর বলে দিলো এই কথাটাও। তারপর আর মানুষটাকে ঢেকে রেখে না।
দুপুরের পর মেয়েটা গিয়ে জলের পাশে বসে, টেক্সট দেয়া নেয়া হয়-
-কি করো?
-বসে আছি।
-কোথায়?
-জলের পাশে।
-পুকুর পাড়ে?
- হ্যাঁ।

তুমি কি করো?
-শুয়ে আছি।
-ও,ঘুমাবে?
-নাহ, একটু ঘুমাবো!
-ও, ওই তো,ঘুম। সন্ধ্যায় পড়তে বসো কিন্তু।
-দেখি।
-যাই।


-যাবে? ছবি পাঠিও।
-কিসের?
-পুকুর পাড়ের।
-আচ্ছা তবে।


...................................
চৈত্রমাসের রোদ আর ভোরের আরামটায় কেবল ঘুমাতে ইচ্ছে করে, ঘুম থেকে উঠে ছেলেটার ফোন।
-দেখলে, ঢাকায় কতো গরম? তোমার ওখানে কেমন?
-নাহ,এতো গরম না, আরামে আছি।


-তাই?
-বোধ হয় বৃষ্টি হবে।
-তাহলে পাঠিয়ে দিও।
মেয়েটা বোধ হয় থতমতো খায়, বৃষ্টি ভালো লাগেনা এমন মেয়ে নেই,তার ও লাগতো কিন্তু.......
কথা না বাড়ানোর জন্য বলে, আচ্ছা।
দুদিন পরে ফোন,
-এতো দেরি করলে যে পাঠাতে?
-ওহ,এমনি।
-কি করো?
-কিছুনা,পড়ছিলাম।

তুমি কি করো?
-আমি ব্যলকনিতে বসে আছি, বৃষ্টি দেখি। ইলেক্ট্রিসিটি নাই।
-আমি খাবো, রেখে দেই।
-আচ্ছা। তোমার ওখানে বৃষ্টি হচ্ছে?
-না।

অনেক গরম।
-আচ্ছা,তবে পাঠিয়ে দেবো।
একটু থেমে মেয়েটি বলে, আচ্ছা,দিও।


একটু পর মেঘ করলো, ঠান্ডা নেমে গেল, বৃষ্টি এখনই নামলো বলে। মেয়েটির টেক্সট, এত তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিলে?

রাতটা যায় অনেক কথায় কথায়।

তারপর সারাদিনের কাজের সাথে দুজনেরই একসাথে টেক্সট দেয়ানেয়া। মেয়েটা ভাবে, এখন তো কবেই টিন এজ পার করে এসেছে ,তবে এমন কেন করছে?

এরকম কেন করছে?

একদিন, রাতে ফোন ছেলেটির, ঘুমের ঘোরে ফোন ধরে মেয়েটি আধো ঘুম নিয়ে কথা বলে,একসময় ছেলেটি বলে, নীজল,তোমাকে নীজল বলে ডাকবো।
মেয়েটি অবাক হয় ভাবে। টিন এজ দের মতোন ব্যবহার করছে কেন? ছেলেটির সব টেক্সট এ ওই নামটি!

কদিন পর মেয়েটিও নাম দিলো, নীরদ।

মেঘ।



আশ্চর্য!
ভালো লাগেনা আজকাল, ছেলেটি ও আজকাল ভালোই কথা বলতে পারে,মেয়েটি তো পারেই। আজকের সবচেয়ে বড় খুশির খবরটিও মেয়েটি ফোন করে ছেলেটিকেই বললো!

খুশি অনেকদিন পর মেয়েটির কাছে ধরা দিলো।

আজ আবার ও মেঘ করেছে আকাশে, মেয়েটি ছেলেটিকে টেক্সট করতে যাচ্ছে, নীরদ, আকাশে মেঘ করেছে,কোথায় তুমি? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।