আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মধ্যবিত্ত আমরা...



দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার আগেই যদি প্রতিরোধ করা হয়, তাইলে দেয়াল থেকে কিছুটা দূরত্ব পাওয়া যায়। কিন্ত এই ব্যাপারটা ইকোনোমিক্যালি এবং কালচারালি ধর্মভিরু মধ্যবিত্তদের বুঝের বাইরে। দীর্ঘিদিনের হেজেমনি থেকে বের হয়ার সাহস টা এক করে আমরা বিষ্ফোরণ ঘটাইতে পারি না। কারন আমরা মিডল ক্লাশ, সব সময়ে, সব ব্যাপারে।

প্রথমত, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারনে সবার আগে আমাদের চাওয়া থাকে একটুখানি সিকিউরিটি।

তিন বেলা খাওয়া পরার সিকিউরিটি থাকলে আমরা আন্দোলন নামক ঝামেলায় যাইতে চাই না। একদিন দুইদিন কিঞ্চিত জোস থাকলেও বাসায় ঢুকার সময় বাজার করে ঢুকতে হবে, এই চিন্তা মাথায় নিয়ে বিপ্লব হয় না। মিডল ক্লাস মেন্টালিটি আমাদের একটা কম্পিটিশনের মাঝে আটকায়া রাখে। যার কারনে সামগ্রিক ভাবে যে কোন কিছু দেখার বদলে বরং ব্যাক্তিগত ভাবে আমি কি পাইতেসি সেটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। বড়ই সুইং মেন্টালিটি ধারন করি আমরা।

আজকে গণজাগরন বলে মাথা কুটে ফেলছি, আবার কালকেই ইমরানের মায়েরে বাপ বলে দুই চারটা চড় থাপ্পড় লাগায়া দিচ্ছি। পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা, গান বাজনা করে ঘরে ফিরে পিস টিভি দেখে আবার গিলটি ফিল করছি, ইসলামের সাথে ব্যাপার টা সাঙ্ঘর্ষিক হয়ে গেলো নাতো ? আমরা আগে বাঙ্গালী নাকি আগে মুসলমান এই দ্বন্দ থেকে আমরা বের হতে পারি না।

আচ্ছা, আমাদের কোন ধারনা আছে রাষ্ট্র আমাদের কি দিতে পারে ? সরকার আমাদের কোন কোন চাওয়া গুলো পুরন করতে বাধ্য ? অশিক্ষা কুশিক্ষা তথা প্রশ্ন ফাঁস আর চাকুরির জন্য শিক্ষা পদ্ধতির কারনে আমাদের অধিকার নিয়ে আমরা একদমই সচেতন না। কতটুকু আমদের প্রাপ্য, আর কতটুকু আমরা পাইতেসি তা আমাদের মধ্যবিত্ত ব্রেনে খুব একটা ভালো ধরে না। যতক্ষন না পর্যন্ত সরাসরি আমি আক্রান্ত হচ্ছি, ততক্ষন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় চিন্তা আমাদের ভাবায় না।

৪২ বছর পরেও যুদ্ধপরাধীদের বিচার আর আওয়ামী বিএনপি অপরাজনীতির প্যারাডক্সের সম্পর্কটা আমাদের কাছে ক্লিয়ার না। ক্লিয়ার হবে কেমন করে ? আমরা শিক্ষিত না, আমরা ইতিহাস জানিনা, আমরা অধিকার সচেতন না। তিস্তায় পানি নাই তো আমার কি ? আমার চিন্তা বাড়িওয়ালা মাস শেষে ভাড়া বাড়ায় কিনা তাই নিয়ে। রামপাল বিদ্যুতকেন্দ্র হলে আমার কি ? আমার বাসার পরিবেশ তো আর নষ্ট হচ্ছে না। সর্বপরি আমি মধ্যবিত্ত।

কেমন করে আমাকে দিয়ে রেভ্যুলিউশন আশা করেন ?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।