আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বনাম ক্রিকেটিয় চেতনা

নিজের বিষয়ে কিছুই বলিবার নাই আসসালামু আলাইকুম, ডিসেম্বর মাস মহান মুক্তিযুদ্ধের মাস। উহা আমাদের বিজয়ের মাস। কাহারো-কাহারো পরাজয়েরও মাস। একদিকে বিজয় অন্যদিকে পরাজয়। যাহার কারণে এই মাস আসিলেই বিজয়ী পক্ষ আর পরাজিত পক্ষ দুই দিক হইতেই সাজো সাজো রব শুনিতে পাওয়া যায়।

স্বাধীন দেশ পাওয়া একটি পরম সৌভাগ্যের বিষয়। তাহা আমরা পাইয়াছি। উহার জন্য পরম করুণাময়ের নিকট শুকরিয়া আদায় করি। যাহারা দেশের জন্য জীবন দিয়াছেন তাহাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আজিকাল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বড়ো বেশি শোনা যাইতেছে।

তাহা হউক উহাকে তো মন্দ বলিতে পারি না। পাকিস্তান তার কৃতকর্মের জন্য বাংলাদেশের জনগণের নিকট ক্ষমা চাহিয়া নিক সেই কথাও নানা পক্ষ হইতে উচ্চারিত হইতেছে। সেইসব উচ্চারণকেও শ্রদ্ধা জানাইতে হয়। যাহা যাহা বলিলাম তাহার একটি কথাও নতুন নহে। উহা সবই পুরাতন কথা।

তাহা হইলে জানিয়া শুনিয়া পুরাতন কথা কেন বলিতেছি? কেন শ্রদ্ধেয় ব্লগারগণের সময় নষ্ট করিতেছি? ২ পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির বর্তমান বেহাল অবস্থার কথা দুনিয়ার সকল মানুষই জানেন। উহা কোনো গোপন বিষয় নহে। সীমান্তে যখোন তখোন ন্যাটো বাহিনি আফগান যোদ্ধাগণকে বধ করিবার নামে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়া থাকে। যোদ্ধাগণের কথা না জানিলেও উহা জানা যায় যে বেসামরিক নিরীহ জনগণই তাহাতে হতাহত হয়। কিন্তু পাকিস্তানের সরকার নির্বিকার।

তাহাই হইবার কথা। কারণ দাস্যের খাতায় নাম লিখাইয়া প্রতিবাদ করিবার উপায় নাই। দেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিনই কোনো না কোনো পক্ষ বোমা ফাটাইতেছে শিয়া-সুন্নি কাটাকাটি করিতেছে মোহাজের-সিন্ধি কেহই কাহাকেও সামান্যতম ছাড় দিতে নারাজ। এমন একটা দিন যায় না যেদিন পাকিস্তানে বোমা গুলি ফাটে না। ৩. এইসব কারণে পাকিস্তান নানাভাবে ক্ষতির মুখোমুখি হইতেছে।

জনগণের দুর্দশা বৃদ্ধি পাইতেছে। কিন্তু ক্ষমতায় যাহারা বসিয়া রহিয়াছেন তাহারা শুধুই ক্ষমতার খেলায় মনোযোগ দিতেছেন। দেশের কথা জনগণের কথা ভাবিবার সময় তাহাদের হয়তো নাই। পাকিস্তানের কথা পাকিস্তানের সরকার ভাবিতে থাকুক পাকিস্তানের জনগণ ভাবিতে থাকুক। আমাদের ওইসব নিয়া না ভাবিলেও চলিবে।

এমনিতেই তো আমাদের নিজেদের সমস্যা অগণিত। ৪. পাকিস্তান আর ক্রিকেট একটি সময় সমার্থক ছিলো বলিলে খুব বড়ো রকমের ভুল হইবে না। সেইসব এখন অতীত। নিউজিল্যান্ড ক্রিকটে দল ভাগ্যের সহায় কোনোমতে বাঁচিয়া গেলেও আমরা দেখিয়াছি শ্রীলংকার ক্রিকেট দল বাচিতে পারে নাই। তাহারা প্রাণে বাঁচিলেও সেই ভয়াবহ আতঙ্কের হাত হইতে বাহির হইয়া আসিতে লংকান খেলোয়াড়গণকে অনেক যুদ্ধ করিতে হইয়াছিলো।

তাহার পর হইতে বিদেশি দলগুলি পাকিস্তানের মাটিতে গিয়া ক্রিকেট খেলিবার কথা ভুলিতে বসিলো। না ভুলিলে প্রাণের অনিশ্চয়তা। কাজেই উহাতে কোনো ভুল হয় নাই। ৫. এখন কথা হইতেছে দুনিয়ার অন্য অন্য ক্রিকেট দেশগুলি যখোন পাকিস্তানের দিক হইতে মুখ ফিরাইয়া নিয়াছে তখনো আমাদের দেশের কতিপয় কর্মকর্তা কেন পাকিস্তানের মৃত্যকূপে গিয়া ক্রিকেট খেলিবার জন্য মুখাইয়া রহিয়াছেন? তখন কেন ১৯৭১-এর বর্বরতার কথা তাহাদের মনে পড়িতে দেখা যায় না? কেন তখোন ক্ষমা চাইবার প্রশ্ন ওঠে না? বিজয়ের চেতনা কেন স্বার্থের চেতনার নিচে চাপা পড়িয়া যায়? ৬. অনেকেই কহিবেন, তুমি কেন রাজনীতির সহিত খেলাকে মিশাইয়া ফেলিতেছো? ঠিক আছে মিশাইলাম না। কিন্তু এইটা তো মানিবেন যে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি তাহার নিজের নাগরিকগণকেই সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হইতেছে।

যে দেশ নিজের জনগণকে সামান্যতম নিরাপত্তা দিতে বারেবারেই ব্যর্থ হইতেছে তখোন কিসের লোভে আমরা যেখানে গিয়া ক্রিকেট খেলিবার খোয়াব দেখিতেছি? পাকিস্তানে আমাদের ক্রিকেট খোলোয়াড়গণের জীবনের নিরাপত্তা নাই। শুধু এই একটি কারণেই আমি পাকিস্তানের মাটিতে গিয়া ক্রিকেট খেলিবার বিরোধী। এইখানে কোনো রাজনীতি নাই। সামরিক কূট-কৌশল নাই। আমি আমার দেশের জনগণের নিরাপত্তা লইয়া চিন্তিত।

আমাদের ক্রিকেটারগণও আমাদের দেশের একটি অংশ। আমার এই চিন্তা যে অমূলক তাহা যদি দেশের ক্রিকেটের কর্তাব্যক্তিগণ একটু শুধরাইয়া দিতেন! সকলে ছহি-ছালামতে থাকিবেন। পাকিস্তানের নিরাপত্তার সাম্প্রতিক একটি নমুনা Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.