আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজয়ের চেতনায় আমাদের বাঙালিত্ব!

অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল ক্ষান্ত বর্ষণ কাক ডাকা বিকেলের সেই লাজুক রোদ্দুর- অমলকান্তির মত আমারও ইচ্ছে ছিল বিকেলের রোদ্দুর হওয়ার তাই একসময় মনের সাথে কলমের ঠুকাঠুকি শুরু করলাম আর রক্ত ঝরালাম আমার প্রিয় ডায়েরীতে । এভাবেই শুরু হল আমার রোদ্দুর হওয়ার প্রত্যেক বিজয় দিবসেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারনে শহীদ মিনারই বেশিক্ষণ থাকা হয়। সকাল থেকে আনন্দ বিজয়ের কেতন উড়ে সেখানে। বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে আসে সম্মান জানাতে। কোনো একজন শিক্ষকের শৃঙ্খলায় বিশাল দীর্ঘ সারি।

প্রায়ই দেখি ছাত্রীদের সারির উভয়দিকে কিছু তরুণের পায়চারি। এখানে আমাদের থেমে থাকার কথা। এখানে আমাদের মন পবিত্র হওয়ার কথা। সেখানেই শুনতে হয় কুরুচিপূর্ণ কথা-বার্তা। আমি চুপ মেরে যাই চুপ মারতে বাধ্য হই।

সামাজিকভাবে এদেশ নারীর তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে সবসময় এগিয়ে। কিন্তু বিজয় মাসে শহীদ মিনারেও দেখা যায় লালসার জিহ্বা বের করে আছে কিছু পশু। তাদের কাছে মাংস পিণ্ডটাই বড় বিষয়, বিজয় না, শহীদ মিনারও না। এই পশুশ্রেণির উদ্ভব হয় সাধারণত ছাগু প্রেম থেকে। নিশ্চয়ই সে দেশকে ভালোবাসার কোনো শিক্ষা পায়নি।

নিশ্চয়ই তাকে বলা হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধ ভুল ছিল। নিশ্চয়ই বলা হয়েছে কাফের বানানোর জন্য এই দেশ বিজয় এনেছে। নিশ্চয়ই তাকে বুঝানো হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধ একটি ধর্ম যুদ্ধ ছিল। অনেক কিছু এখন সয়ে নিতে হয় অনেক কিছুই আমাদের ধরা ছুঁয়ার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপরও বলতে হয়, গত কয়েক বছর ধরে ছাগু জামাত-শিবির বিশাল বিজয় র‍্যালি বের করে।

সিলেটে সেই র‍্যালিগুলো দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে আমার। ছোট্ট ছেলে-মেয়ে, তরুণ-তরুণি সেই র‍্যালিতে অংশ নেয়। র‍্যালির মধ্যেখানে রিক্সায় জাতীয় সংগীত বাঁজে। মহান সেই সংগীতের প্রতি বাংলার মানুষের যে শ্রদ্ধা, সেই শ্রদ্ধা সেই গর্ব এখানে পাওয়া দুর্লভ। আমি দেখেছি, ছেলে মেয়েরা হেঁটে যায় সেই জাতীয় সংগীতের সুরে সুরে কিন্তু সে হাঁটায় থাকে হাসি ঠাট্টা আর বিদ্রুপ।

যে গোষ্ঠি স্বাধীনতা যুদ্ধকে অস্বীকার করে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেছে বাংলায়। জাতীয় সংগীতের প্রতি তাদের দেশপ্রেম কুমিরের কান্নার চেয়েও বড় মিথ্যা। শহীদ মিনার মেঁকি কান্নার জায়গা বা মেঁকি আনন্দের নয়। লাখো লাখো তাজা প্রাণের রক্তে হাজারো মা-বোনের সম্ভ্রমের শ্রদ্ধায় নত শিরে দাঁড়িয়ে থাকার জায়গা। এখান থেকে যদি রিচার্জ না হয়ে ফিরে যান তাহলে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি মাথা তুলে দাঁড়াতে কষ্ট করবে খুব।

প্রিয় বাঙালি একবার চিন্তা করুণ একবার হাত তুলুন আর উচ্ছস্বরে বলুন- শহীদ মিনারে আপনে যে ফুলের তোড়া নিয়ে যাচ্ছেন তা কোনো দলের নয়, গোষ্ঠীর নয়, কোনো একক ব্যাক্তির কিংবা আনন্দের জন্য নয়। যাচ্ছেন মাকে ভালোবাসার জন্য, যাচ্ছেন মায়ের শ্রেষ্ট সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে। প্রিয় দেশের কথা চিন্তা করুণ পুষ্প স্তবক বানাতে, কিনতে কিংবা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে। শুধু বলুন, এদেশ আমাদের অনেক দিয়েছে আমরা এবার তাকে দেবো। হোক আপনার দেশের প্রতি ভালোবাসার এইটুকু পথচলা।

বদলানোর স্লোগান দিতে হবে না এমনিতেই বদলে যাবে দেশ। ফটোজনিক চেহারা দেখানোর জন্য নয় দেশকে ভালোবাসার জন্য, অসাম্প্রদায়িক বাঙালির জন্য, রাজাকার মুক্ত শহীদ মিনারের জন্য এইটুকু চাওয়া খুব কি বেশি? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।