আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামাই কত প্রকার ও কি কি (সবিস্তারে বর্ণনা)

ধুত্তোর ডাইনোসরের ডিম মোটামুটি সব ব্যাচেলরই ব্যাচেলর লাইফ কাটাতে কাটাতে বিয়ের জন্য মুখিয়ে থাকে। বিয়ের আগে তাদের অবস্থাটা হয় অনেকটা এরকম: আর তারাই বিয়ের পর হয়ে যায় ব্যাচেলর থেকে জামাই। শ্বশুরবাড়িতে আদরের মানুষ, বৌ এর কাছে তো বটেই। বিয়ের পর একজন ব্যাচেলর কেমন ধারার জামাই হতে পারে আসুন তা দেখে নেই একঝলক: বিসমিল্লাহ হোক খাওয়া-দাওয়া দিয়ে। ১/ খাদক জামাইঃ কিছু জামাই আছে, কারনে অকারনে বৌ এর রান্না'র প্রশংসা করে থাকে।

সকলের সামনেও করে, ঘরে বসে এমনি এমনিও করে, যাতে বৌ খুশী হয়ে আরো বেশী করে ভাল ভাল রান্না করে তাকে খাওয়ায়। এই ধরণের জামাইদের বাজার করতেও আলসেমি লাগে না। যেকোন জায়গায় দাওয়াত-নেমন্তন্ন থাকলে তো কথাই নাই। কব্জি ডুবিয়ে উদর পূর্তি করে খাওয়া চলে। এ ধরণের জামাইরা বেশী খাওয়ার জন্য প্রায়ই বৌ এর কাছে এক্সট্রা খাবার 'বকা' খেয়ে থাকেন।

আর যদি ভাগ্য ভাল হয়, কিংবা বৌও খাদ্যরসিক হয়ে থাকে, তবে বৌ এর হাতের বানানো দারুন দারুন খাবারের সন্ধান কিছুদিন পর পর পাওয়া যায়। আবার কিছু মানুষ আছে যাদের কিছু কিছু খাবার খাওয়া নিষেধ থাকে। তারা বাড়ির লোকের চোখের আড়ালে বসে ঠিক সেই নিষেধ করা খাবারই খেতে পছন্দ করেন বেশী। বয়স একটু বেশী হয়ে যাওয়ার পর সাধারণত এই সমস্যা হয়। কিংবা যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে তাহলে তো কথাই নেই।

চুরি করে নিষেধ করা খাবার খেয়ে কোন সময় বাড়ির মানুষের কাছে ধরা পড়ে বকা খেতেও তাদের কোন আপত্তি নেই। মোট কথা খাবার হলেই হয়। মনের-পেটের সুখ করে খাওয়া চাই। ২/ আঁচলে বাধা জামাইঃ আঁচলে বাধা জামাই বলে আসলে কিছু নেই। এটি বিশেষ মহলে একটি গালি বিশেষ।

আর এই মহল হচ্ছে দুই কিসিমের। প্রথমত; বন্ধুমহল। তুমুল আড্ডাবাজী চলছে, তার মধ্যে থেকে কেউ যদি একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার কথা বলে, ব্যস শুরু হয়ে যাবে 'বৌ এর আঁচলে বাধা' বলে বন্ধুদের খোঁচানো। যদিও কথা তারা পুরোটাই ঠাট্টার ছলেই বলে। কিন্তু আরেক মহল, আত্মীয়-স্বজন; তারা যখন বলেন বৌয়ের আঁচলে বাধা, তখন সেটাকে ব্যঙ্গ করেই বলেন।

যে কথার আসল উদ্দেশ্য থাকে বৌ কে সুযোগে কথা শোনানো বা খানিক ব্যঙ্গ করা। আর এই মহলে যাকে আঁচলে বাধা জামাই বলা হয়, তার ইমেজটা চিন্তা করা হয় অনেকটা এইভাবে; ৩/ সন্দেহবাতিক জামাইঃ সব কিছুতেই তার সন্দেহ। বৌ কে কে ফোন করছে, বৌ কার সাথে কথা বলছে, কি নিয়ে কথা বলছে, বৌ কোথায় গেল সবকিছুতেই খালি খালি সন্দেহ। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এই ধরণের সন্দেহবাতিকের ফলে সংসারে সারাক্ষণ কিছু না কিছু নিয়ে খিটিমিটি লেগে থাকে। জামাই-বৌ দুই জনের মনেই অশান্তি বিরাজ করে।

সন্দেহের মাত্রা চুড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেলে জামাই বৌ এর কোন কথাই বিশ্বাস করে না আর বৌ জামাইকে কোন কথা বলেও স্বস্তি পায় না। ৪/ মুরুব্বি জামাইঃ সারাক্ষণ সব কিছু তে মুরুব্বিগিরী করা চাই। এটা এইভাবে করো না, ওইভাবে করো। এটা এমন না ওমন..... এই না সেই.. ইত্যাদি ইত্যাদি। মোদ্দাকথা, সবকিছুতেই তার মাতব্বরি করা চাই-ই চাই।

তা সে যত তুচ্ছ ঘটনাই হোক না কেন। মুরুব্বিওয়ানা আরো প্রকট হয় যখন জামাইয়ের বয়স বৌ এর থেকে ৮-১০+ বছরের বেশী হয়। ৫/ স্বেচ্ছাচারী জামাইঃ এ ধরণের জামাইরা বৌদের জন্য খানিক অভিশাপ স্বরূপ। এরা নিজেরা যখন যা মনে করবে, সেটা সে নিজে করবে এবং অন্যকেও সেই কাজ করতে বাধ্য করবে। কোন ব্যাপারে অন্য কারো মতামতের ধার ধারবে না।

অন্য কারো কিছু বলার থাকতে পারে সেটা নিয়ে মাথাও ঘামাবে না। ৬/ (বদ) রাগী জামাইঃ কারণে অকারণে রাগ হয়ে যাওয়া এই জামাইদের ধর্ম। এরা সারাক্ষণ সামনে যাকে পান তার সাথে খিটখিট-পিটপিট করতেই থাকেন। অনেক সময়ই এক জায়গার রাগ অন্য জায়গায় ঝাড়েন। বসের বকা খেয়ে রাগ ঝাড়েন বাড়ি ফিরে মা, বৌ কিংবা ছেলেমেয়ের উপরে।

আবার বৌয়ের কাছে বকা খেলে অফিসে গিয়ে সেই রাগ ঝাড়েন নিম্নপদস্থ লোকজনের উপরে। অনেক সময় এদের রাগ এতই বেশী হয়ে যায় যে মারধরও করতে থাকে। আর এধরণের রাগের পর মারের শিকার হয় বেশিরভাগ সময় বাচ্চারা। ৭/ রোমান্টিক জামাইঃ বৌ কে টেক কেয়ার করা, বৌ এর প্রতি সুযোগ পেলেই রোমান্টিক দৃষ্টি দিয়ে তাকানো, অন্যের চোখ এড়িয়ে বৌ কে টুক করে আদর করে দেওয়া এই ধরণের জামাইদের ধর্ম। এরা সর্বদা মুখে একটা ছোট্ট হাসি নিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজে থাকেন।

মোট কথা রোমান্টিক কাজ যতকিছু করা সম্ভর তার সব কিছুই এরা করে থাকেন। তবে তাতে ওভারডোজ থাকে না অবশ্যই। দাম্পত্য জীবনে এমন ছোটখাটো রোমান্টিসিজমের দরকার আছে বৈ কি! জামাই রোমান্টিক হতে পারে কয়েকটি কারণে; - নিজের পছন্দে বিয়ে করলে - বৌ বেশ সুন্দরী আর স্মার্ট হলে - বৌয়ের প্রতি বিশেষ যত্নবান হলে রোমান্টিক জামাই মোটামুটি সব মেয়েরই কাম্য থাকে। ৮/ লুতুপুতু জামাইঃ সর্বদা রোমান্টিক থাকতে গিয়ে অতি মাত্রায় লুতুপুতু স্বভাব হয়ে যায় এ ধরনের জামাইদের। এটাকে বলা যায় রোমান্টিসিজমের ওভার ডোজ।

এদের রোমান্টিসিজমে অনেক ক্ষেত্রেই বউরা বিরক্ত হয়ে যায়। তখন একটা অন্য ধারার ঝগড়া লেগে যেতে পারে। তবে বৌ ও যদি হয় লুতুপুতু টাইপের, তাহলে দুই জনে মিলে হয়ে যায় চরম লুতুপুতু লুতুপুতু। ৯/ চিরতরুণ জামাইঃ রোজকের রুটিন মাফিক চলতে চলতে এবং জীবন চালাতে চালাতে যেখানে তার বয়সি অনেকেই প্রায় বুড়িয়ে গেছেন, সেখানে এই ধরনের জামাইরা এখন অবধি একদম ফিট। জিম করা আর নিয়মিত ডায়েট করার ফলে পেটানো সুঠাম দেহের অধিকারী।

নেই কোন কুঁচকানো চামড়া। এরা মনে মনে বেশ সুখীও হয়ে থাকেন। কেননা অনেক খানি বয়স হয়ে যাওয়ার পরও মেয়েরা এখনও তার উপরে ক্রাশ খায়। কোন পার্টিতে গেলে এনারা হন মেয়েদের আলোচনার বিষয়বস্তু আর এনাদের বউরা করেন নিজেদের জামাই নিয়ে গর্ব। চির তরুন জামাইদের বাচ্চারাও তাদের বন্ধুদের সাথে বাবার পরিচয় করিয়ে দিতে গর্ব বোধ করে।

১০/ দায়িত্ববান জামাইঃ সবদিক বিবেচনা করে, সবাইকে খুশী করে যে কোন কাজের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে সেই কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদন করা দায়িত্ববান জামাইয়ের গুন। যে কেউ কোন একটা কাজ এ ধরনের জামাইয়ের উপরে ছেড়ে দিয়ে বেশ নিশ্চিন্তে থাকেন। দায়িত্ববান জামাইদের শ্বশুরবাড়িতে বেশ খ্যাতি থাকে। বাড়ির বড় কোন কাজে বা অনুষ্ঠানে এ ধরনের জামাইদের হাতে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজের ভারও দেওয়া হয়ে থাকে। ১১/ বৌ-পেটানো জামাইঃ কোন কারণ ছাড়া কিংবা তুচ্ছ কারণেই এ ধরণের মানুষেরা বৌ পিটিয়ে এক রকমের আনন্দ পায়।

বৌ পেটানো স্বভাব সাধারনত দুই শ্রেনীর জামাইদের নধ্যে দেখা যায়। এক, নিম্নবিত্তঃ বেশীরভাগ সময় এরা বৌ কে যৌতুক দেওয়া, ঠিকমত রান্না না হওয়া, বাড়ির কাজে গাফিলতি কিংবা বৌ কারো সাথে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছে এমন মনে হওয়া বা তুচ্ছ যেকোন বিষয় নিয়েই বৌ কে একপ্রস্থ পিটিয়ে দেয়। অনেকসময় বৌ পেটানো কারো কারো স্বভাবে পরিনত হয়ে যায়। তখন বড় কোন কারন ছাড়াই পেটানো শুরু করে। এদের উদাহন হতে পারে জহির রায়হানের কালজয়ী উপন্যাস 'হাজার বছর ধরে' এর 'আবুল'।

দুই, উচ্চবিত্তঃ উচ্চবিত্তদের বৌ পেটানোর কারন অনেকাংশে নিম্নবিত্তদের কারনের সাথে মিলে যায়। এছাড়াও এরা নিজেদের স্ট্যাটাস বজায় রাখতে গিয়ে বিভিন্ন উলটাপালটা কাজ করতে চাইলে বৌ সেকাজে বাধা দিলে তাতেও হয়ে যায় একপ্রস্থ মারধোর। ১২/ মা-ভক্ত জামাইঃ অন্যসব কিছু বাদ, আমার মা যখন বলেছে এটা, তখন এটাই ঠিক। মা যতই বানিয়ে বলুক না কেন, মা ভক্ত জামাই সেই কথাই বিশ্বাস করে। সঠিক বিচারজ্ঞান কিংবা একপক্ষীয় অন্ধ আচরনের কারনে অনেক সময়ই মা-ভক্ত জামাইদের বৌ এর সাথে এগুলো নিয়ে অশান্তি হতে থাকে।

১৩/ শাশুড়িভক্ত জামাইঃ এ ধরনের জামাইরা অনেক সময়ই নিজের বৌ এর থেকে শাশুড়ি ভক্ত হয় বেশী। তিনি শাশুড়ির জামাই নন, ছেলের মত। শাশুড়ি আম্মার কথা মন দিয়ে শোনেন এবং তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেন। এমনটা হয় তখনই যখন শাশুড়ি অনেক বেশী জামাইকে আদর করেন কিংবা শাশুড়ি ওস্তাদ রাঁধুনী এবং জামাই ছাড়া বাড়িতে ভাল কিছু তেমন একটা রান্না করেন না। ১৪/ লাট্টু জামাইঃ এ ধরনের জামাইরা সাধারনত বৌ এর তালে তাল মিলিয়ে, বৌ এর কথামত চলতে পছন্দ করে।

একজন জামাই, লাট্টু হয় তখনই যখন বৌ তার জামাই কে লাটিমের মত করে ঘুরিয়ে নিজের মন মত চলতে বাধ্য করে। নিজের পার্সোনালিটির কমতি থাকলে জামাই এমনটাই হবে, এটাই স্বাভাবিক। ১৫/ গাধা জামাইঃ সারাদিন গাধার মত খেটে টাকা ইনকাম করে বাড়িতে আনেন আর বৌ-বাচ্চা সে টাকা উড়িয়ে উড়িয়ে খরচ করছে না ঠকঠাক খরচ করছে, তা জানতেও পারে না। বৌ যদি হয় বাপের বাড়ি প্রেমিকা, তাহলে তো কথাই নেই। টাকা পাচার হয়ে যাবে বাপের বাড়িতে।

এসব জামাইদের কপালে সুখ তেমন একটা জোটে না। বরং অনেক ক্ষেত্রে উলটো বৌ এর গঞ্জনা শুনতে হয়, -কি কাজ করো, কি বেতন পাও, ঠিকমত সংসার চলে না। ওমুকের দেখ এই সেই আছে, আমাদের তাও নেই....... ইত্যাদি ইত্যাদি। বৌ এর এসব কথার বান থেকে বাঁচতে জামাই আরো বেশী বেশী খাটতে থাকেন আর সংসারের বোঝা টানতে থাকেন। সুষ্ঠু সংসার যাপন তার আর হয় না।

১৬/ ভেড়া জামাইঃ একজন জামাই ভেড়ার মত প্রকৃতির হয়ে যায় তখনই যখন: ■ তার বৌ নিজের থেকে বেশি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হয় ■ নিজে দুর্বলচিত্তের অধিকারী ■ নিজের বাড়ির চেয়ে বউয়ের ফ্যামিলি বেশি অবস্থাসম্পন্ন হওয়া ইত্যাদি এ ধরণের জামাইরা সাধারণত বৌয়ের আদেশ মাফিকই চলাফেরা করে। ১৭/ খরুচে জামাইঃ খরুচে জামাইরা হচ্ছেন বৌদের নিকট অনেকটা শাপে বর পাওয়ার মত। কেননা এ জামাইরা বৌ না চাইতেই অনেক কিছু নিজেই কেনাকাটা করে নিয়ে আসেন। কোন কিছু পছন্দ হলেই হলো, কিনে নিয়ে বাড়ি চলে আসেন। এটাও খেয়াল করেন না যে সেটা বাড়িতে রাখার মত এনাফ জায়গাটুকু আছে কিনা! অনেক সময় নিজের আয় কতটুকু সে খেয়াল টুকুও থাকে না।

মানুষ কে খুশী করতেও এরা প্রচুর খরচ করে ফেলেন। অনেক সময় বেশী খরুচে স্বভাবের কারণে স্বল্প আয়ের সংসারে টানাটানিও শুরু হতে পারে। ১৮/ কিপ্টে জামাইঃ শুরু থেকে নিজেকে 'হিসেবি' উপস্থাপন করতে গিয়ে, টিপে টিপে খরচ করতে করতে কখন যে নিজেই কিপ্টে হয়ে যান তা আর তিনি টের পান না। কিন্তু তার সাথের মানুষটির এ নিয়ে সমস্যার আর অন্ত থাকে না। সমস্যা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায় তখন অনেক সময় কিপ্টে জামাইদের বৌ রা নিজেরা নিজেদের খরচ চালাতে নিজেই চাকরী করা শুরু করেন।

১৯/ ফূর্তিবাজ জামাইঃ সদা হাস্যোজ্জল, ফূর্তি করে বেড়ানো মানুষ জন যখন জামাই হয়ে যান, তখনও অনেক ক্ষেত্রে তাদের ফূর্তিতে ভাটা পড়ে না। অনেক সময় সিচুয়েশন কি সেটাও তাদের মাথায় থাকে না। আশেপাশের অবস্থা নিয়েও তাৎক্ষনিকভাবে ফূর্তির বিষয়বস্তু বানিয়ে দিতে পারেন। মোদ্দা কথা, অবস্থা যাই হোক না কেন, ফূর্তিবাজ জামাইরা সদা ফূর্তিতে থাকতেই পছন্দ করেন। ২০/ গম্ভীর জামাইঃ স্বভাবগত ভাবেই এরা বেশ গম্ভীর প্রকৃতির হয়।

সহযে তেমন একটা কারো সাথে মেশেন না। নিজের মত নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বাড়িতে কারো সাথে তেমন একটা কথা না বলার জন্য সবার সাথেই একটা অদৃশ্য দূরত্ব চলে আসে। আবার অনেকে আছেন যারা অ্যা্রেঞ্জ ম্যারেজের পর বৌয়ের সাথে গাম্ভীর্য বজায় রাখতে গিয়ে পরবর্তীতে আর স্বাভাবিক হতে পারেন না। জামাই গম্ভীর প্রকৃতির হলে বৌ এর সাথে সম্পর্ক কখনোই বন্ধুত্বপূর্ণ হয় না।

ফলে তাদের মধ্যে সূক্ষ একটা দূরত্বের দেওয়াল থেকেই যায়। ২১/ রাজা জামাইঃ পরিবারের প্রধান, আমি পুরুষমানুষ, তুমি মেয়ে মানুষ কোথাকার কোন ছার! এমন মনোভাবের জামাই এখন আর সচারচর পাওয়া যায় না। আমাদের পূর্বপুরুষরা; যেমন আমাদের দাদী-নানী বা তাদেরও আগের জেনারেশনের এনাদের কপালে এমন মনোভাবের জামাই জুটেছিল। এধরনের জামাইরা নিজেদেরকে এক একজন রাজার থেকে কোন অংশে কম কিছু মনে করতেন না। এদের কাজ ছিল সারাক্ষণ হম্বি তম্বি আর হুকুমদারি।

আর কেউ যদি গ্রামের মাতব্বর গোছের কেউ হয়ে থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। ২২/ লোভী জামাইঃ লোভের ধরন দুই কিসিমের হতে পারে। এক ধরনের জামাই আছে যারা বিয়েই করে শ্বশুরবাড়ির জিনিসপত্রের লোভে। বিয়ের সময়ই তাদের দাবী থাকে এই দিতে হবে সেই দিতে হবে। এখানেই শেষ নয়, এগুলো পূরন হওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রে বিয়ের পরেও তার চাহিদার শেষ থাকে না।

ব্যাপারটা অনেকটা মিনা কার্টুনের সেই 'যৌতুক বন্ধ করো' এপিসোডের মত, 'প্রথমে সাইকেল, পরে মোটরসাইকেল। ' আরেক ধরনের জামাই আছেন, যারা বৌয়ের প্রতি লোভী থাকেন। এদের লোভ কে নিয়ে আসলে বলার তেমন কিছু নেই। এদের লোভকে এনাদের বৌদেরকেই সামলাতে দেওয়া হোক ২৩/ কম্পিটিটিভ মাইন্ডের জামাইঃ কাজের ক্ষেত্রে যেসব জামাইরা কম্পিটিটিভ মাইন্ডের হয়ে থাকেন তারা অনেকাংশেই কর্মক্ষেত্রে নিজ দক্ষতার সুনিপুন ব্যবহার করে নিজেকে একটা সুপ্রতিষ্ঠ স্থানে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু যদি তিনি হন অন্য ক্ষেত্রের কম্পিটিটিভ মাইন্ডের, তবে তা বেশ বিপত্তি জনক হতে পারে।

আর এই অন্য ক্ষেত্রটি হতে পারে বৌ এর বাপের বাড়ির সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারার ক্ষেত্রে। বৌ এর ওমুক ভাই বেশী পেল কিংবা ওই বোন ভাল অংশটা পেল, আমার বৌ এতটুকু কেন পেল ইত্যাদি ইত্যাদি। নিজের সম্পত্তি যতই থাকুক, বৌয়ের বাপের বাড়ির ভাগের দিকে তাদের নজর থাকবেই যেন বৌ ভালটা-বেশীটা পায়। শুধু এসব দিকেই নয়, যারা আসলে কম্পিটিটিভ মাইন্ডের তারা সবখানেই নিজের ভালটা পাওয়ার জন্য কম্পিটিশন দিয়েই যায়। ২৪/ প্রেমিক জামাইঃ বিয়ের পরও এ জামাইরা বৌদের সাথে প্রেমিকের মত আচরন করে।

বৌ তার কাছে তখনও একজন প্রেমিকা। সেইভাবেই সে প্রতিটা দিন শুরু করে। জামাইয়ের মধ্যে প্রেমিক প্রেমিক ভাব থাকলে সুবিধা অসুবিধা দু' টোই হতে পারে। সুবিধা এই যে, এই ধরনের জামাইদের কাছে বৌ রা কখনো পুরানো হয়ে যায় না। আর অসুবিধা হল জামাইরা প্রেমিক সুলভ থাকার কারনে জীবনের বাস্তবতার তাগিদটুকুর সঠিক উপলব্ধি করতে পারেন না, ফলে সংসারে একটা এলোমেলো অগোছালো চন্নছাড়া ভাব চলে আসে।

২৫/ বন্ধু জামাইঃ এরূপ জামাইদের আচার আচরন হয় বন্ধু সুলভ। বন্ধুর মত এ ধরনের জামাইদের সাথে তাদের বৌরা সহজেই সব কিছু শেয়ার করতে পারে, প্রয়োজনে একে অপরকে উপদেশ দিতে বা নিতে পারে। এরা বন্ধুর মত একে অন্যের সাথে মারামারি, ঝগড়াঝাটি, খুঁনসুটি করেন। জামাইয়ের আচরন বন্ধুভাবাপন্ন হলে একজন বৌ এর জন্য এর থেকে সুখকর আর কিছু হতে পারে না। ঘরে বাইরে সবখানেই হালকা সুখের একটা চিহ্ন থাকে।

জামাই যদি তার স্ত্রীর বন্ধু হতে পারেন, তবে তাদের ব্যাপারটা স্বামী-স্ত্রীর মত না হয়ে হয়ে যায় বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ডের মত। ২৬/ অলস জামাইঃ রোজকের রুটিন মাফিক ঠিক করা গৎ বাঁধা কিছু কাজ ছাড়া বাড়তি আর কোন ধরনের কাজই এ ধরনের জামাইরা করতে চান না। বাড়ির কিছু বাড়তি কাজ যা সহজেই তিনি করতে পারেন অথচ তিনি করেন না শুধুমাত্র তার আলসেমীর কারনে। কাজ ছাড়া তিনি বসে আছেন, চোখের সামনে দিয়ে বৌ বাজার করে আনছে, ইলেক্ট্রিক বিল দিতে যাচ্ছে তবুও তাদের কোন ভাবান্তর হয় না। অলস জামাইরা সাধারনত খানিক ভাবলেশহীন বা উদাসী প্রকৃতির হন।

২৭/ বিশ্বস্ত জামাইঃ বিশ্বস্ত জামাই বলতে বোঝায় যে তার স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত। পরকীয়া করা বা অন্য কোন ধরনের মিথ্যাচার তিনি করেন না। তাই বলে তিনি বৌ এর আঁচল ধরা টাইপ নন মোটেও। একে অন্যের প্রতি বিশ্বস্ত থাকাটা অনেকটা একটা কমিটমেন্টের মত। জামাই বিশ্বস্ত হলে বৌ তার সব ধরনের সমস্যার কথা সহজেই জামাইয়ের সাথে শেয়ার করে এবং সে নিজেও জামাইয়ের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে।

এতে একে অন্যের প্রতি ভালবাসাও বাড়ে। ২৮/ ঘরজামাইঃ এ প্রসঙ্গে আর কি বলবো। মোটামুটি সবাই-ই জানেন এ ব্যাপারে। তবে এখনকার যুগে ঘরজামাই তেমন একটা দেখা যায় না। খুঁজলে পুরান ঢাকার খুব আদুরে কন্যার ফ্যামিলিতে পাওয়া গেলেও যেতে পারে।

২৯/ চিটার জামাইঃ বৌ, বাচ্চা এমনকি মা বাবার সাথেও চীটিং এ ওস্তাদ এ জামাইরা। এরা সকল ক্ষেত্রে চিটিং করে নিজে জিতে থাকতে চায়। আদতে চিটিং করতে করতে এরা একটা সময়ে চূড়ান্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ে, যখন সকলের সামনে তার আসল চেহারা বেরিয়ে পড়ে। ৩০/ বউ এর কাছে নির্যাতিত জামাইঃ জামাই সে যেমনই হোক না কেন, কম বেশী সবাই-ই বৌ এর কাছে নির্যাতিত হয়েই থাকে। কেউ হয় কথায় নির্যাতিত, কেউ বা হয় সরাসরি মারপিটে নির্যাতিত।

আর বউ যদি হয় দজ্জাল প্রকৃতির, তাহলে তো কথাই নেই। উঠতে বসতে শুনতে হয় 'কি পেলাম আমি তোমার সংসারে এসে!!!' বৌ এর কাছে নির্যাতিত হয়ে অনেক জামাইদেরই অবস্থা হয় অনেকটা এমন; ৩১/ সেলিব্রিটি জামাইঃ সেলিব্রিটি জামাইদের আচরন অনেক সময় থাকে এরূপ','মুই কি হনু রে'। এই মনোভাব থাকার ফলে জামাইয়ের আচরন অনেক ক্ষেত্রেই উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যায়। জীবন ধারা হয়ে যায় অবাধ ও লাগাম ছাড়া। আবার অনেকে আছেন যারা কাজ করার পাশাপাশি বৌ-সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে ঘর সংরার করেন।

৩২/ সেলিব্রিটি'র জামাইঃ এ ধরণের জামাইরা দুই প্রকৃতির হয়ে থাকেন। ক) জামাই নিজেও সেলিব্রিটিঃ জামাই-বৌ দুই জনই সেলিব্রিটি হলে দুই রকমের লাইফ হতে পারে। এক, কম্পিটিটেটিভ লাইফঃ বৌয়ের খ্যাতি বেশী হয়ে গেল কিনা, বৌ আমার থেকে আগে কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে গেল কিনা, আমাকে ওমুক অনুষ্ঠানে ডাকে নি, বৌ কে ডাকলো কিনা, বৌ পুরস্কার পেয়ে যাচ্ছে, আমি পাচ্ছি না- ইত্যাদি সকল বিষয়ে মনে মনে কম্পিটিশন করতে করতে একটা সময়ে টা প্রকট আআকার ধারণ করে এবং বৌ এর সাথে মতের মিল-অমিলের একটা ব্যাপার হয়ে শেষ পর্যন্ত ডিভোর্সও হয়ে যায়। দুই, আরেক ধরণ আছেন যারা বৌয়ের খ্যাতি, সম্মান সবকিছু কে ভালভাবে গ্রহণ করেন। কাজের ক্ষেত্র দু'জনের এক হলে পরষ্পর পরষ্পরকে সাহায্য প্রয়োজনে উপদেশও দিয়ে থাকেন।

দাম্পত্য জীবনে এরা সফল সেলিব্রিটি কাপল হিসেবে বেশ সুনামও করেন। খ) নরমালঃ এদেরও ধরণ দুই কিসিমের। এক, কিছু মানুষ, বৌ সেলিব্রিটি, এই ব্যাপারটা এনজয় করেন এবং এ সুবাদে যত ধরণের সুবিধা আছে তা উপভোগ করার চেষ্টা করে। বৌ কি করছে না করছে তা নিয়ে তেমন একটা মাথা ব্যাথা থাকে না। বৌ এর সুবাদে নিজেও খানিক খ্যাতি পাচ্ছেন এটাই তার জন্য বড় পাওনা স্বরুপ।

দুই, কিছু মানুষ আছেন, সেলিব্রিটি বৌ এর অবাধ চলাফেরা, বাড়ির বৌ সুলভ আচরন কম থাকায় খানিক বিরক্ত থাকেন। এসব নিয়েও টুকটাক কথা বার্তা একটা সময়ে বড় ধরণের ঝগড়ায় পরিনত হয়ে পরিশেষে চূড়ান্ত একটা কিছু হয়ে যায়। ৩৩/ প্রবাসী জামাইঃ দেশে বৌ-বাচ্চা, মা-বাবা রেখে যারা প্রবাসে বাস করেন তাদের নানা ধরনের কষ্টের কথা আমরা শুনে থাকি। দেশে পরিবার রেখে শুধুমাত্র কিছু অর্থ উপার্যন করে প্রিয় মানুষগুলোকে একটু সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দিতে যারা বিদেশে পড়ে থাকেন, তাদের আসলেই অনেক কষ্ট সহ্য ও করতে হয়। মন চাইলেই বৌ কে কাছে পান না, বাচ্চাকে কাছে টেনে নিয়ে আদর করতে পারেন না, আনন্দের কিছু হলে পারেন না আপনজন্দের সাথে ভাগাভাগি করে সেই সুখের মজা টুকু নিতে।

তবে কিছু মানুষ আছেন, যারা বিয়ে করে বৌ দেশে রেখে প্রবাসে এসে খানিক ফুর্তিতেই থাকেন। ইচ্ছেমতন জীবন যাপন করেন। কেউ দেখার বা মানা করার তো নেই। এরূপ প্রবাসী জামাই হলে দেশে থাকা বৌয়েরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধোঁকার শিকার হয়। ৩৪/ ভুলোমনা জামাইঃ ডেইলি লাইফের কিছু গদবাঁধা কাজ ছাড়া বাড়তি কোন কাজের কথাই এধরণের জামাইদের মনে থাকে না।

এরা প্রায় সময়ই অফিসের জরুরী কাজের কথা ভুলে যায়। যার ফলে কপালে জোটে বসের ঝাড়ি। বিভিন্ন অকেশনের একটা ডেটও তাদের মনে থাকে না। বৌ-বাচ্চা কাচ্চার জন্মদিন, নিজেদের এনিভার্সেরি বেমালুম ভুলে যায় এবং বাড়িতে বৌ-বাচ্চার কাছে এ নিয়ে কথাও শুনতে হয়। পরবর্তীতে মাশুল হিসেবে তাদের রাগ ভাঙ্গাতে পকেটের কিছু খরচাপাতি করাই লাগে।

আসলে ভালমানুষ টাইপের মানুষগুলোই বেশীরভাগ ক্ষেত্রে হয়ে যায় ভুলোমনা টাইপের। তবে কিছু কুটিল টাইপের জামাই আছে, যারা ইচ্ছে করেই ভুলোমনা সেজে থাকে, কোন অকেশনের খরচাপাতির হাত থেকে বেঁচে যাবার জন্য। ৩৫/ লুল জামাইঃ এই ধরণের জামাই সারাক্ষণ আশেপাশের মেয়ে দেখাতে ব্যস্ত থাকে। পাশে যতই সুন্দরী বৌ থাকুক, অন্য কোন মেয়ে দেখতে পেলেই হয়, তার আদ্যপান্ত দেখা চাই-ই চাই। মূলত এটি কোন স্বভাব নয়, এটি একটি অভ্যাস।

যা গড়ে গেছে সেই কলেজ কিংবা ভার্সিটি লাইফ থেকে, বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বসে মেয়ে দেখতে দেখতে। অধিকাংশ সময় এ ধরণের জামাইরা এহেন কাজের জন্য পাবলিক প্লেসে বৌ এর চোখ গরম খায়, যার অর্থ, এখন কিছু বলতেসি না, আগে বাসায় চল, মজা দেখাবোনে। আর যদি জামাইয়ের ভাগ্য ভাল হয়, তাহলে এসকল ক্ষেত্রে অনেক সময়ই বৌ রা জামাইকে অন্য মেয়ে দেখতে সাহায্য করে থাকে। কেননা সে জানে, তার জামাই এটা নেহাতই দুষ্টামি করেই করছে। যদিও এই প্রকৃতির মনমানসিকতার বৌ তেমন একটা পাওয়া যায় না, তাই জামাইদের কপালে এরকম কাজের জন্য উপযুক্ত জবাবটাই জুটে যায়।

৩৬/ প্লেয়ার জামাই ( ): এই ধরণের জামাই কেমন এইটা বুঝাতে শুধুমাত্র একটি ছবিই যথেষ্ট। আর কোন কথা হবে না অবশ্য সব জামাই-ই প্লেয়ার থাকে, তবে অনেকের ক্ষেত্রে সেটা সারাজীবন স্থায়ী হয়। আর তখন তারা কেমন হয় সেটা জানতে পুনরায় দেখুন ৭ নং ও ২৪ নং পয়েন্টটি। ; তবে জামাই হিসেবে আপনি যেমনই হোন না কেন,ব্যাচেলর লাইফের পর বৌ এর পাল্লায় পড়লে আপনার নিজেকে এমনই লাগবে; শেষমেষ সকল জামাইরা হচ্ছে এরূপ; সুতরাং, এখন আসেন ভাই-বোনেরা, শীতের রাতে কফি খেতে খেতে চিন্তা করেন কে কেমন জামাই হবেন (অবিবাহিত ছেলেরা) কিংবা অলরেডি যারা জামাই হয়ে গেছে তারা কেমন জামাই এবং কার কেমন জামাই লাগবে (অবিবাহিত মেয়েরা) কিংবা কার জামাই কেমন! পোস্টের আইডিয়ার জন্য নাফিস ইফতেখার কে ধন্যবাদ এবং তার ব্লগে সবিস্তারে পড়ুন বৌ কত প্রকার ও কি কি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।