আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হজরত শাহজালাল রা এর ইসলাম প্রচার এবং শানে আত্তাধিক মহত্ত

এখন থেকে প্রায় ৮০০ বছর পূর্বে আরবের বিখ্যাত ইয়েমেন প্রদেশে তিনি জন্ম গ্রহন করেন । মহিউদ্দিন সালামাত তার পিতা এবং উম্মে সালতা বিন ফাতেমা নাম্নি তার আম্মা । পিতার বংশ আবুবকর রা এর সিলসিলা এবং মাতার বংশ ইমাম হুসাইন রা এর শেষ ছইয়দ প্রদীপ কারবালা প্রান্তর হইতে একমাত্র বেচে যাওয়া পুত্র জয়নাল আবেদিন রা এর বংশধর । শাহ জালাল রা এর মামা সায়েক বাহাউদ্দিন রা তখন খার সময়ে একজন দরবেশ বুজুর্গ ছিলেন । অল্প বয়স থেকে তিনি তার মামার নিকট ইসলামী এবং আত্তাধিক শিক্ষায় সিদ্ধ লাভ করেন ।

শিক্ষা কত টুকু সিদ্ধ হল পরীক্ষা করার জন্য মামা শাহ জ্বালাল রা কে ডেকে পাশের জঙ্গলে অবস্থান করার জন্য তাগিদ দেন । শাহ জালাল রা নির্দেশিত স্থানে গমন করেন । একটি হরিন কান্না জড়িত কণ্ঠে মানুষের ভাষায় ফরিয়াদ করতে লাগলেন । হুজুর বিচার করুন , আমার সদ্য প্রসব দুই টি বাচ্ছা কে বনের লোভী বাঘ খেয়ে ফেলল । শাহ জালাল রা হুংকার ছেড়ে বনের বাঘ কে ডাক দিলেন ।

ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বাঘ এসে তার পায়ে হাজির । এই নির্দয় সদ্য জাত হরিণের বাচ্ছাকে গ্রাস করতে তোর হৃদয় কি একটু বিগলিত হলনা , জংগলে কি খাবারের অভাব ছিল । মাথা নিচু করে বলল হুজুর আমার এহেন বেয়াদবি মাফ দিন , আমি আজ থেকে মাসেক ক্ষন পর্যন্ত অসুস্থতায় ভুগছিলাম , পেটে ছিল ধারুন ক্ষুধার তাড়না , তাই সম্মুখে এদের পেয়ে গিলে ফেলেছি , রাগে শাহ জালাল রা বাঘের গালে কষে থাপ্পর লাগালেন , সাথে সাথে ভুমি করে হরিনের শাবক দুটি কে উগ্রে দিল এবং জংগলে চলে গেল । শাহ জালাল রা আল্লাহর নিকট মুনাজাত করলে হরিন দুটি জিবন্ত হয়ে গেল , মা হরিনি খুব খুশি হল । আর তার মামা আড়াল থেকে ঘটনা প্রত্যক্ষ করে বুঝলেন শাহ জালাল রা একজন কামেল আত্তাধিকতায় সিদ্ধ হয়েছেন , তখন তার বয়স মাত্র ১২ বছর ।

তার আশ্চয্য খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল সারা আরব ভুখণ্ডে । মামা একদিন তাকে ডেকে বললেন বাবা এবার তোমাকে অন্ধকার থেকে ইসলাম কে জিন্দা করার জন্য মানুষের মুক্তির হেদায়েতের বার্তা লয়ে দূর দেশ ভ্রমন কর । ইনশাল্লাহ আল্লাহই তোমার সাহায্যকারী । শাহ জালাল রা প্রয়োজনীয় রসদ নিয়ে উল্ল্যখ সংখ্যক লোক জুটায়ে আল্লাহর নামে বেড়িয়ে পড়লেন । মামা তার নিকট এক মুষ্টি মাটি দিয়ে বললেন পৃথিবী পরিভ্রমণ করে যেখানে এই মাটির সহিত মিল পাবে সেখানেই যেন হয় তোমার আস্তানা ।

শাহজালাল রা ধিরে ধিরে বহু দেশ পরিভ্রমণ করে বহু জমিদার এবং রাজা বাদশাহের সমাদর লাভ করেন , এবং তার আশ্চয্য কোরআন পাঠে , আল্লাহর মহত্তে হেদায়েতের বারি দ্বারায় সিক্ত হয়ে ইসলাম গ্রহন করেন , এবং কেউ কেউ ইসলামের জন্য , আল্লাহর রাজি খুশি এবং শাহ জালাল রা এর সাথে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে তিনি শেষ তক অনুমতি দেন । ক্রমান্বয়ে তার সাথি বাড়তে বাড়তে ৩৬০ জন হয় , উল্লেখ্য এদের মধ্য ভারতের বাদশা নাসির উদ্দিন , চিনের গভর্নর ফতেহ লহানি মিসরের জমিদার শাহ মখদুম রা ও সঙ্গি হয়েছিলেন । তখন বাংলা ভারতের কিছু অঞ্চলের প্রতাব শালি হিন্দু রাজা গউরগবিন্দের রাজধানী ছিল শ্রিহট্রয় বা বর্তমান সিলেট । এখানে একঘর খাটি মুসলমান বাস করত , তারা সম্ভবত আরব হতে এসে অনেক আগেই বসতি স্থাপন করেছিল । তার নাম ছিল বুরহান উদ্দিন , তিনি বার বছর যাবত সন্তান লাভের আশায় আল্লাহর নিকট কানা কাটি করলে তার সুন্দর একটি ফুট ফুটে সন্তান লাভ করে ।

আনন্দে আত্তহারা হয়ে ছেলের ৭ দিনের দিন লুকিয়ে আকিকা দেয় গরু কুরবানি , কিছু মাংস রেখে বাদ বাকি মাংস মাটিতে পুতে রাখলে । এক টুকরা মাংস পাখি কর্তৃক হিন্দু রাজার মন্দিরে চলে যায় । রাজা সংবাদ পেয়ে বুরহান উদ্দিনের পরিবার কে ধরে নিয়ে যায় এবং মা বাবার সামনেই কচি সদ্য জাত সন্তান কে হত্তা করে , এবং বুরহানুদ্দিন কে অত্যাচার করে শিকল দেন । বুরহান উদ্দিন সেখান থেকে পালিয়ে যান এবং সেই সময়ে ভারতের নদিয়ায় শাহ জালাল রা এর নিকট সাক্ষাৎ সমস্ত জানিয়ে বিচার দেন । আউলিয়া সর্দার সঙ্গী সাথি সহ দ্রুত বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ।

এবং সুরমা নদীর দক্ষিন সিমান্তে আস্তানা নেয় । খবর পেয়ে রাজা বহু গুপ্তচর নিয়োগ করে , এবং নদী যেন না পাড়ি দিতে পারে সব নৌকা যান চলাচল বন্ধ করে দেন । আল্লাহর সাহায্য কামনা চাইলে আল্লাহর ক্ষুত্রতে জায়নামাজ বিচিয়ে তার মধ্য ভেসে সুরমা নদী পাড়ি জমান । অপর প্রান্ত থেকে তির ছুঁড়তে থাকে রাজার লোকেরা , আল্লাহর ক্ষুত্রতে যারা বিষের তীর ছুঁড়েছিল তাদের বুকেই উলটো বিধতে লাগল । পাড়ে ভিড়বে পাহাড়ের উপর থেকে ভারি পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে , শিল হট উচ্ছারন করেন শাহ জালাল রা শিল অর্থ পাথর হট অর্থ উপরে যাও ।

আল্লাহর ক্ষুত্রতে তাও উলটু ভাবে গড়াল । রাজা সন্য সামন্ত হারিয়ে প্রাসাদে লুকালেন । আল্লাহর প্রতিনিধিরা প্রাসাদ অভিমুখে রওয়ানা দিলেন । রাজা সন্ধি প্রস্তাব দিল , আমার প্রাসাদে ২৮ মন ওজন একটা ধনুক আছে তোমাদের মধ্য যদি কেহ এই ধনুকে তির যোজনা করতে পার তাহলে আমি রাজা ইসলাম গ্রহন করব । শাহ জ্বালাল রা সঙ্গিদের মধ্য বললেন কেহ এমন আছ কি যে কোন সময় তার আছরের নামায কাযা হয়নাই ।

নাসির উদ্দিন বললেন , সেই লোক সম্ভবত আমি । বেশ তাহলে যাও আল্লাহর নামে প্রাসাদে গিয়ে ধনুকে তীর যোজনা কর । নাসির উদ্দিন একটানে তা করে বসলেন । রাজা তাদের ঐশী শক্তি প্রত্যক্ষ করে গুপ্ত পথে পালিয়ে গেল । মাটির সাথে মাটি মিলিয়ে শাহ জালাল রা সেথা আস্তানা বা বসতি গড়ে তুললেন ।

এবং প্রকাশ্য আযান দিলেন । সাথে সাথে গৌড় গোবিন্দের সাত তালা মনোরম প্রাসাদ ভেঙ্গে ধুলিস্যাত হয়ে গিয়েছিল । রাজার বোন ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিল । এবং সারা ভারত বাংলায় আল্লাহর অলিগন ছড়িয়ে পড়েন এবং ইসলামের নিশান উড়িয়ে দেন । সেই হেদায়েতে বর্তমান মুসলিম সংখ্যা হবে সারা দক্ষিন এশিয়ায় ৭০ কোটির উপরে ।

চলবে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.