আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুগল্পঃ মতিন মিয়ার ইবাদত-বন্দেগী

জীবন কবিতার মত। আর কবিতাগুলো দুর্বোধ্য। রাত দশটা। মতিন মিয়া এশার নামায পড়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পেটে ক্ষুধা নেই।

রাত দুইটা তিনটার দিকে ক্ষুধা হলে উঠে খাবেন। খাটের পাশে খাবার ঢেকে রাখা আছে। রাতে উঠে খেয়ে দেয়ে তাহাজ্জুতের নামায আদায় করবেন। গভীর রাতের ইবাদত আল্লাহপাক খুব পছন্দ করেন। সারাজীবন তিনি যেসব কর্মকান্ড করেছেন তাতে আল্লাহপাক তার উপর অত্যন্ত রেগে থাকার কথা।

আল্লাহপাককে আর রাগতে দেয়া যাবেনা। এমন কিছু করতে হবে যাতে আল্লাহপাক রাগ কমিয়ে ফেলেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘুমের দোয়াটা পড়া দরকার। মতিন মিয়ার কিছুতেই দোয়াটা মুখস্থ হচ্ছে না। ঘুমের দোয়ার সাথে প্রসাবের দোয়া একাকার হয়ে যাচ্ছে।

বয়স বেড়ে গেছে। কোন জিনিস সহজে মুখস্থ হতে চাচ্ছে না। মেমরী নতুন ডাটা গ্রীপ করতে পারছেনা। তিনি বালিশের কাছে একটা নামায শিক্ষা বই রেখেছেন। বইটাতে অনেক গুরুত্বপূর্ন দোয়াকালাম আছে।

ঘুমের দোয়াটা পড়ার জন্য বইটা হাতে নিতেই মোবাইল বেজে উঠল। মতিন মিয়া মেজাজ খারাপ করে ফোনটা রিসিভ করলেন। কি? আবার ফোন করছো কেন? আমার জামাই কি করে? ঘুমামু। ঘুমানোর দোয়া পড়ি। তুমি চোখ বন্ধ কর।

আমি গান শুনায়ে তোমার ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি। গান শুনানোর দরকার নাই। বিরক্তি লাগছে। ফোন রাখ। বিরক্তির দেখছো কি? কেবল তো শুরু।

বকুল ফোনটা কেটে দিল। মতিন মিয়া কিছুক্ষণ হ্যালো হ্যালো করে ফোনটা রাখলেন। বকুল মেয়েটাকে নিয়ে তিনি বেশ ঝামেলার মধ্যে আছেন। বকুল তার দ্বিতীয় স্ত্রী। গোপন বিবাহ।

মাস ছয়েক আগে ঝোঁকের মাথায় তিনি কাজটা করে ফেলেছেন। তার প্রথম স্ত্রী এবং দুই ছেলে মেয়ে এ বিষয়ে কিছু জানেনা। জানলে মতিন মিয়াকে পিস পিস করে কেটে কীর্তনখোলা নদীর ইলিশ মাছকে দিয়ে খা্ওয়ানোর কথা। সেই অনাগত দিনটির কথা ভেবে ভেবে মতিন মিয়া মাঝে মাঝে শিউরে ওঠেন। চোখে শর্সের ফুল দেখেন।

এই বিপদ থেকে একমাত্র আল্লাহপাকের একান্ত ইচ্ছা ছাড়া উদ্ধার পা্ওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। মতিন মিয়া আল্লাহর রহমতের দিকেই তাকিয়ে আছেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।