আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কার্ল মার্ক্স (১৮১৮ – ১৮৮৩)

ধর্মই মননশীলতা ও সৃষ্টিশীলতার সবচেয়ে বড় অন্তরায় অত্যন্ত প্রভাবশালী, বিপ্লবী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক কার্ল মার্ক্স তার জীবদ্দশায় তার চিন্তাধারার সফল্য দেখে যেতে পারেন নি, কিন্তু তার লেখাসমূহ আধুনিক আন্তর্জাতিক কম্যুনিজমের তাত্ত্বিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে। এক সফল ইহুদী আইনজীবীর সন্তান কার্ল হাইনরিখ মার্ক্স ৫ মে ১৮১৮ সালে পশ্চিম জার্মানির ট্রিয়ের শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মার্ক্স বন [বিশ্ববিদ্যালয়] এবং বার্লিনে [বিশ্ববিদ্যালয়] আইন বিষয়ে পড়াশোনা করলেও হেগেল (Hegel) ও ফয়েরবাখ (Feuerbach) এর দর্শনের সাথে পরিচিত হন। ১৮৪১ সালে তিনি জেনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। কিছুদিন তিনি কলউনের (Cologne) একটি উদারপন্থী সংবাদপত্রে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

পরে, ১৮৪১ সালে সস্ত্রীক প্রগতিশীলতার লালনভুমি প্যারিস গমন করেন । সেখানে তিনি একজন বিপ্লবী কম্যুনিস্ট হয়ে ওঠেন এবং তাঁর আজীবন সহযোগী ফ্রেডেরিক এঙ্গেলসের সাথে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হন। ফ্রান্স থেকে বহিষ্কৃত হয়ে তিনি দুই বছর ব্রাসেল্‌সে অবস্থান করেন। এখানে এঙ্গেলসের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব প্রগাঢ় হয়। তারা যৌথভাবে রচনা করেন 'কম্যুনিস্ট মেনিফেস্টো' যা প্রকাশিত হয় ১৮৪৮ সালে।

এতে দাবি করা হয় যে, আজ পর্যন্ত যত সমাজ দেখা গেছে তাদের সকলের ইতিহাসই শ্রেণী-সংগ্রামের ইতিহাস। * তবে প্রলেতারিয়েতের** বিজয়ের মধ্য দিয়েই এর চরম বিনাশ ঘটবে। ১৮৪৯ সালে মার্ক্স লন্ডনে যান যেখানে তিনি জীবনের বাকী সময় অতিবাহিত করেন। দীর্ঘ সময় তাঁর পারিবার দারিদ্র্যতার মধ্যে জীবন-যাপন করে কিন্তু বিত্তবান এঙ্গেলস তাঁর পরিবারকে ক্রমবর্ধমান সহায়তা প্রদান করতে সমর্থ হন। ধীরে ধীরে মার্ক্স তাঁর রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিচ্ছিন্নতা থেকে বেরিয়ে আসেন এবং সৃষ্টি করেন তাঁর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্ম ক্যাপিটাল (Das Kapital )।

বইটির প্রথম খন্ড ‘শ্রমিক শ্রেণীর বাইবেল’ তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশিত হয়। বাকী খন্ডগুলো বন্ধুর মৃত্যুর পর এঙ্গেলস কতৃক সম্পাদিত। [জীবনের] শেষ দিনগুলোতে মার্ক্সের স্বাস্থ ও সৃষ্টিশীলতা ক্ষীয়মাণ হতে থাকে। তিনি বিভিন্ন স্বাস্থোদ্ধার কেন্দ্রে (Health spa) সময় কাটান। ১৮৮১ সালে তাঁর স্ত্রী ও এক কন্যার মৃত্যু তাঁর চরম মর্মপীড়ার কারণ হয়।

তিনি ১৪ মার্চ ১৮৮৩ সালে মারা যান এবং তাকে লন্ডনের হাইগেট কবরস্থানে শায়িত করা হয়। (BBC History থেকে অনূদিত ) টীকা *অর্থাৎ সমগ্র লিখিত ইতিহাস। ১৮৪৭ সালে সমাজের প্রাক-ইতিহাসের পূর্ববর্তী কালের সামাজিক সংগঠনের বিবরন প্রায় অজ্ঞাতই ছিল। তারপরে হাক্‌স্টহাউজেন রাশিয়ায় জমির উপর যৌথ মালিকানা আবিষ্কার করেন, মাউরার প্রমাণ করেন যে, সকল টিউটনিক জাতীর ইতিহাস শুরু হয় এই সামাজিক ভিত্তি থেকে, ক্রমে ক্রমে দেখা গেলো যে ভারত থেকে আয়ারল্যান্ড পর্যন্ত সর্বত্র গ্রাম-গোষ্ঠীই (Village communities) সমাজের আদি রুপ ছিল কিংবা হয়েছে। গোত্রের (gens) আসল প্রকৃতি এবং উপজাতির (tribe)) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বিষয়ে মর্গানের চূড়ান্ত আবিষ্কার এই এই আদিম কম্যুনিস্ট ধরণের সমাজের ভিতরকার সংগঠনের বিশিষ্ট রূপটি খুলে ধরল।

এই আদিম গোষ্ঠীগুলো ভেঙ্গে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাজ ভিন্ন ভিন্ন এবং শেষ পর্যন্ত পরস্পরবিরোধী শ্রেণীতে বিভক্ত হতে শুরু করে। **প্রলেতারিয়েত হল আজকালকার মজুরি-শ্রমিকেরা, উৎপাদনের উপায় নিজেদের হাতে না থাকার দরুন যারা বেঁচে থাকার জন্য স্বীয় শ্রমশক্তি বেচতে বাধ্য হয়। বুর্জোয়া বলতে আধুনিক পুঁজিপতি শ্রেণীকে বোঝায়, যারা সামাজিক উৎপাদনের উপায়গুলির মালিক এবং মজুরি-শ্রমের নিয়োগকর্তা। (১৮৮৮ সালের ইংরেজি সংস্করণে এঙ্গেলসের টীকা) আরও পড়তে পারেনঃ http://www.marxists.org/ Capital, Karl Marx কম্যুনিস্ট মেনিফেস্টো কার্ল মার্ক্সের জীবনী দর্শন কোষ, সরদার ফজলুল করিম পূর্বে লিখেছিলামঃ চার্লস ডারউইন সিগমুন্ড ফ্রয়েড  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.