আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভবঘুরে আর ক্ষেপাটে আর্টিস্ট ব্যাঙ্কসি

Shams রাস্তার পাশের দেয়ালে আঁকা তির্যক 'স্ট্রিট আর্ট' দিয়ে বিশ্বজুড়ে নানা অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন রহস্যময় এক গেরিলা আর্টিস্ট। যার ছদ্মনাম ব্যাঙ্কসি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অগ্রগতির এ যুগেও তিনি রয়েছেন সম্পূর্ণ লোকচক্ষুর আড়ালে। তাকে কেউ দেখেনি, কিছুই জানা যায় না তার সম্পর্কে; তবে অনুমান করা হয়, ১৯৭৪ সালে জন্ম নেওয়া এই আর্টিস্ট থাকেন ব্রিস্টলে। ব্রিটেন সরকারের কাছে তিনি একজন ভবঘুরে আর ক্ষেপাটে।

দেয়ালে আঁকাআঁকি দিয়ে শুরু করেন ব্যাঙ্কসি। তারপর স্টেনসিল পদ্ধতিতে অবলম্বন করেন তিনি। এর কারণ হচ্ছে, পুলিশ আসার আগেই এঁকে তড়িঘড়ি করে যেন কেটে পড়া যায়। ব্যাঙ্কসির দেয়ালে দেয়ালে আঁকা রাজনৈতিক ছবি ঘুণেধরা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বিরক্ত করে, ব্যঙ্গ করে, যা দেখে আমজনতা উজ্জীবিত হয়_ খুঁজে পায় প্রতিবাদের ভাষা। ব্যাঙ্কসির স্ট্রিট আর্টের বক্তব্য যেন দাবানলের মতো না ছড়িয়ে পড়ে তাই সাধারণ মানুষ দেখে ফেলার আগেই সরকার পক্ষ তা মুছে ফেলে।

আবার কয়েক দিন পর অন্য একটা দেয়ালে জেগে ওঠে প্রতিবাদী চিত্রকর্ম। রাষ্ট্র আবার মুছে দেয়, কিন্তু মুছতে পারে না বিপ্লবীকে। নিজ দেশের সীমা ছাড়িয়ে এঁকে এসেছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। ইসরায়েল আর ফিলিস্তিনের মাঝে যে ৪২৫ মাইল লম্বা সীমান্ত দেয়াল আছে, সেখানে সাধারণের যাওয়াই নিষিদ্ধ। সেখানেও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এঁকে এসেছে ব্যাঙ্কসি।

এঁকেছেন মই ও দেয়াল ফুটো করার চেষ্টা করছে এমন শিশুদের ছবি। ব্যাঙ্কসির শিল্পকর্মের আর্থিক মূল্য কম নয়, লাখ লাখ পাউন্ডে তা বিক্রি হয় বিভিন্ন নিলাম ও প্রদর্শনীতে। ব্যাঙ্কসির হয়ে তার সব আর্থিক লেনদেন করে তার প্রতিনিধিরা। একেকটা প্রদর্শনী দেখতে আসেন বিশ্বের বাঘা বাঘা তারকারা। কিন্তু দেখা মিলে না শিল্পীর।

এই বিপ্লবী এ পর্যন্ত ছয়টা বই লিখেনেছ তার স্ট্রিট আর্ট, দর্শন, টেকনিক এবং রাজনীতি নিয়ে। সবই পেয়েছে বেস্ট সেলারের তকমা। ২০১০ সালে ব্যাঙ্কসি ৮৭ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি করে। নাম 'এক্সিট থ্রু দ্য গিফট শপ। ' থিয়েরি গুয়েত্তা নামে এক ফরাসি শরণার্থী লস অ্যাঞ্জেলসে থাকে আর তার নেশা স্ট্রিট আর্ট।

এই ছবিটি অস্কার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। সম্প্রতি এই বিখ্যাত 'ব্যাঙ্কসি' নামে স্বত্ব নিলামে বিক্রি করা হয়েছে ১০ লাখ মার্কিন ডলারে। স্রোতের বিপরীতে চলা এই বিপ্লবীর নিজ খ্যাতি নিয়ে ঠোঁটকাটা মন্তব্য হলো_ 'নিজের নামে বিখ্যাত হওয়ার দিন শেষ। খ্যাতি পাওয়ার জন্য ছবি আঁকলে কখনোই খ্যাতি পাবে না। যে কোনো খ্যাতিই হলো একটি অর্থপূর্ণ কাজের শেষে উপরি পাওনা।

আমরা রেস্টুরেন্টে খেতে যাই খাবারটা উপভোগ করার জন্য, পরের দিন টয়লেটে যাব বলে নয়। '  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।