আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির নির্বাহী পরিচালক যা বললেন।ফায়ার সার্ভিস ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির চুকতি

No peace among the nations, without peace among the religions; no peace among the religions without dialogue between the religions; no dialogue between the religions without investigation of the foundations of the religions. আমি তখন আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত। এক সপ্তাহ আগে তাজরিন ফ্যাশনে আগুন লেগে সারা বিশ্বে হৈচৈ সৃষ্টি হয়েছিল। ফ্যাক্টরিতে ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে ফ্যাক্টরির অগ্নি নিরাপত্তা পরিদর্শনের জন্য ইন্সপেক্টর ও সহকারী পরিচালক এলেন। ওনাদেরকে সসম্মানে বসতে দেয়া হল। ওনারা একটি কাগজ ধরিয়ে দিলেন।

এই কাগজে বিল্ডিং এ আগুন সংক্রান্ত কিছু তথ্য দেয়া আছে যা মানলে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুব কম। যদি আগুন লেগেই যায় তাহলে হতাহতের ঘটনা খুব কম হবে। একটা ফরম ফিলাপ করতে হল- ফ্যাক্টরির কোন তলায় কতজন লোক কাজ করেন, কয়টি সিঁড়ি, হোস পাইপ কয়টি, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র কয়টি ইত্যাদি। হিসাব করে দেখলাম আমাদের ফ্যাক্টরিতে যতগুলো ফায়ার ইশটিংগুইশার প্রয়োজন তার চেয়ে অনেক কম আছে। নির্দিষ্ট সময় পর পর এসব অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রিফিল করতে হয়।

রিফিল করা মানে মেশিনের ভেতরে যে গ্যাস আছে তা বের করে নতুন গ্যাস ভরতে হয়। পুরানো গ্যাস দিয়ে আগুন নিভে না। ফায়ার ইন্সপেক্টর আধাঘন্টা কথা বলে যে রেজাল্ট বের হল তা নিম্নরূপঃ কষ্ট করে রিফিল করার দরকার কী? অনেক টাকা লাগবে। বরং মেশিনের উপরের রিফিলের তারিখ নতুন করে লিখে দিন। যেখানে মেশিন প্রয়োজন ২০টা সেখানে ছিল ১২টা, বাকীটা আমরা দেখিয়ে দেব।

উল্লেখ্য ২০টা মেশিন না দেখালে সরকার ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেবে। ভবনের নীচতলায় পানির ট্যাংকি থাকতে হবে। যেহেতু পানির ট্যাংকি করা ব্যায়বহুল ব্যপার তাই ওখানে শুধু শুধু টাকা খরচ না করে ফায়ার ইন্সপেক্টরের পেছনে খচর করাই ভাল! এভাবে শেষ পর্যন্ত ফায়ারের লোকজন দশ হাজার টাকার বিনিময়ে এতগুলো শ্রমিকের জীবন রিস্কে ফেলে দিল। এখন প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে মালিকেরা করছে কী? ওনাদের কি দায়িত্ব নেই? ফায়ার ইকুয়েপমেন্ট কোন ফ্যাক্টরিতে কতটুকু দরকার তা নির্ধারণ করে দেয় ঐ এলাকার ফায়ার অফিস। ফায়ার ইকুয়েপমেন্ট এর সাথে আরো অনেক কিছু জড়িত।

রাজউক, বিজিএমইএ সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের ইন্সপেকশনের পরে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি রপ্তানীর সুযোগ পায়। ২২টি সার্টিফিকেট হাতে না পেলে সরকার কোন প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয় না। এই ২২টি সার্টিফিকেট বৈধ উপায়ে এই পর্যন্ত কেউ পায়নি। প্রত্যেকটা সার্টিফিকেট প্রচুর টাকা দিয়ে কিনতে হয়। আপনার ফ্যাক্টরি যদি শতভাগ আইন মেনে চালু করেন অথবা আইন না মেনে চালু করেন সার্টিফিকেট দেনেওয়ালারা মোটা অঙ্কের টাকা না পেলে সার্টিফিকেট দেয় না।

কাউকে এই পর্যন্ত দেয় নাই। তখন কোন কোণ ফ্যাক্টরির মালিকেরা মনে করেন –টাকা দিয়েই যখন সার্টিফিকেট কিনতে হচ্ছে তাহলে শ্রমিকদের সুবিধা দিয়েই বা লাভ কী? আর সার্টিফিকেট দেনেওলারা মনে করেন –টাকা যখন পেয়েই গেছি তখন আর ফ্যাক্টরি দেখে লাভ কী? এভাবে টাকার ফাঁদে গরীব মানুষ গুলো বিক্রি হয়ে যায়। from Facebook ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.