আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধোঁয়া নাকি কুয়াশা?

আধা পাগলের লেখা লেখি... হয়তো শুধুই মস্তিস্ক বিকৃতি... আকাশ বিশ্ববিদ্যালয়য়ের খুব মেধাবী একজন ছাত্র, বয়স ২৩। আকাশ একজনকে ভালবাসত কিন্তু সে মেয়েটি তাকে ছেড়ে চলে গেছে, তারপর প্রায় ১মাস হল আকাশ সিগারেট খেতে শুরু করেছে। হাতে জ্বলন্ত সিগারেট, চুল উশকু খুশকু অবস্থায় আকাশ রিকশায় করে যাচ্ছে। আরমান রিকশার চালক, বয়স ১৪। আরমান ভাইবোন দের মধ্যে ৩য়, বাবা মায়ের আয়ে সংসার ঠিক মত চলে না।

আকাশের ঠোঁটে ধরে থাকা চক চকে কাগজ জ্বলছে তপ্ত আগুনে, বের হয়ে আসছে সাদা ধোয়া, ঠাই করে নিচ্ছে খোলা বাতাসে। একটু চকে চকে কাগজের আড়ালে পুড়ছে বাবা মার রক্ত পানি করা টাকা আর নিঃস্বার্থ ভালবাসা। আর চোখে ঝরছে কদিন আগে পরিচয় হওয়া একটা মানুষের জন্যে অশ্রু ! আর আরমানের মাথার ঘাম পায়ে করে, টাকা নিয়ে যাচ্ছে মা বাবার একটু শান্তির জন্যে। কি লাভ এই শিক্ষার?? কি দরকার এমন শিক্ষিত হবার? যে শিক্ষা বিবেক, বোধ কেড়ে নেয়, তাতে শিক্ষিত হয়ে টাকার স্বপ্ন বোনা কি খুব দরকার?? তনিমা এবার এ লেভেল দেবে, বাবা মা সারাদিন অফিসের কাজে বাইরে থাকে, তাদের মধ্যে ঠিকমত বনিবনা হয় না, প্রায়ই ঝগড়া হয়। তনিমার বাবা, তনিমার মাকে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে বরং মেয়ের খেয়াল রাখতে বলেন, তিনি বলেন এমন তো নয় আমার একার ইনকামে চলছে না, সংসার চালাতে কস্ট হয়।

তনিমার মায়ের এক কথা সে এতদূর পড়া লেখা করেছে কি ঘরে বসে থাকবার জন্যে। ছোটবেলা থেকে তনিমা বেড়ে উঠেছে কাজের মানুষের কাছে, বাবা মার সাথে সপ্তাহের একটা দিন কথা হয় বলা চলে। বাবা মায়ের এরূপ আচরন ভালো লাগে না তার, মন খারাপ করে থাকে, এক ছেলেকে ভালো লাগতো তার কিন্তু সে অন্য কারো। তনিমার এরূপ মন মরা আচরন দেখে একদিন নিলা আর সামিহা তাকে ঘুরতে নিয়ে যায়, নিয়ে আসে সীসা লাউঞ্জে। তাদের সাথে আস্তে আস্তে এই পথকে আঁকড়ে ধরে তনিমা।

আজ সীসা তো কাল অন্য কিছু, টুইস্ট চাই ! একসময় প্রবেশ করে মাদকের দুনিয়ায়। ধীরে ধীরে মাদকের সাম্রাজ্যে তার স্থায়ী পথচলা শুরু হয়। শিরিন, বয়স ৫, বাবা নেই, শুধু মাত্র মা আছে। বস্তির শেষ ঘরে থাকে তারা। মাস গেলে ৯০০টাকা ভাড়া, শিরিনের মা সারাদিন অন্যের বাসায় কাজ করে।

শিরিন সারাদিন মায়ের থেকে দূরে থাকে। শিরিনের মায়ের ইচ্ছা তার মেয়েকে স্কুলে পাঠাবে, তাই সে আপ্রাণ চেস্টা করে, মায়ের কস্ট দেখে শিরিন পাসের ঘরে অতসীর সাথে রাস্তায় ফুল বিক্রি শুরু করে। ট্র্যাফিক সিগন্যালে, উত্তপ্ত পিচের রাজপথে খালি পায়ে হাটে শিরিন, উদ্দ্যেশ্য ৫টাকা, একটা ফুল বিক্রি। ঘটনা ৪টা খুব পরিচিত তাই না? এ আর এমন কি? প্রতিদিন ই তো এসব ঘটে, এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় বা ফালতু সেন্টিমেন্ট আছে নাকি? ধুর মশাই, দরদ উতলে উঠছে নাকি? যান না, নিজে গিয়ে........................ কেউ যখন কিছু করার আহ্বান জানাবে পাল্টে প্রশ্ন করি আপনি কি করেছেন? আপনি করেন তো? হা হা ঠিক এভাবেই আমরা সব এড়িয়ে যাই, রাস্তার পাশে চলার সময় ময়লার দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চাপা দেই, অথচ ডাস্টবিনে ময়লা ফেলতে ভীষণ এলার্জি ! আমরা ভদ্র সমাজের ভদ্র বাসিন্দা ! আমরা আইন করি, আইন মানি, ভদ্রতা করি, হ্যাঁ, আমরা সব ই করি তবে কাগজে কলমে, বাস্তবে না। চাইলেই আমরা ভালো থাকতে পারি, আমাদের আশে পাশের মানুষ গুলোকে ও ভালো রাখতে পারি, কিন্তু কিছুই করি না কারন ভালো করতে বা ভাবতে ইচ্ছা হয় না।

জীবন সবসময় সুন্দর তবে রঙিন না, একটু কি রঙ ছড়িয়ে দেয়া যায় না আরমান কিংবা শিরিনদের জীবনে? আকাশ কিংবা তনিমার মত মাদকের জন্যে টাকা নস্ট না করে তা কি আরমান কিংবা শিরিনদের জন্যে খরচ করা যায় না। ভুল পথে চলা খুব সহজ, কিন্তু চাইলেই সে পথ থেকে বের হওয়া যায়। ছেলে বা মেয়ে উভয়ের জন্যেই বলি যে আপনাকে ছেড়ে গেছে সে আসলে আপনার ছিল না, থাকলে কখনোই যেত না, তার জন্যে কেন নিজের ক্ষতি করবে্ন? বিপথে চলবেন? জীবন একটাই, কেন এই অল্প সময়ের জীবন অন্য কারো জন্যে নস্ট করবেন? সিগারেট, সকল মাদক কিংবা নেশা জাতীয় দ্রব্য কে না বলুন, এর থেকে বিরত থাকুন। ধ্বংসের পথে চলে কেউ কখনো বিজয়ী হয় না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।