আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৈচিত্রময় এই পৃথিবীর অসংখ্য মানুষের ভীড়ে আজ আমি অবহেলিত এক ভবঘুরে পথিক...

জীবনটা কাঠের পেন্সিলে লেখা কোন গল্প বা কবিতা নয় ,একবার ভুল হলে আবার নতুন করে লেখা যাবে!!! পৃথিবীটা বড় বৈচিত্রময়; বড় নির্মম। বৈচিত্রময় এই পৃথিবীর অসংখ্য মানুষের ভীড়ে আজ আমি অবহেলিত এক ভবঘুরে পথিক। নির্মমতা আমার জীবনের সমস্ত স্বপ্নসুখ, আশা-আকাঙ্খা আর কামনা-বাসনা গুলোকে দীর্নবিদীর্ণ করে নিক্ষেপ করেছে শহরের ঐ নোংড়া ডাষ্টবিনে। হৃদয়ের লালিত কল্পিত প্রেম আজ আশাহীন অব্যক্ত বেদনায় বুক চিড়ে আর্তনাদ করে আর কান্না হয়ে বেড়িয়ে আসে বড় অস্থিরতায়। হৃদয়ের মনিকোঠায় ব্যাখ্যাহীন অবজ্ঞা ঘৃনা আর নির্মম কুঠারাঘাতে ঝরেছে অজস্র রক্ত; জমেছে বুকের ভেতর এক নিষ্ঠুর চাঁপা ব্যথা।

হঠাৎ মাঝরাতে স্বপ্নের বিভোরে ভেসে উঠে প্রেয়সীর সেই মায়াবী অবয়ব। সকালে হলে হারিয়ে যায় । যদি দুঃখগুলোকে ছুড়ে ফেলা যেত শহরের ঐ নোংড়া ডাষ্টবিনে; তবে হৃদয়ের সুখগুলোকে সুখ পাখি রূপে উড়িয়ে দিতাম অন্তহীন আকাশের নীল নীলিমায়, যেখানে বৃষ্টির সাথে নীলিমার গভীর মিতালী। আমি ছন্নছাড়া এক দুঃখী মানুষ, দুঃখই আমার আজন্ম সাথী। তিল তিল করে গড়া দুঃখগুলোকে একত্রিত করে আজ বুকের ভেতর গড়েছি এক দুঃখের পাহাড়।

দুঃখগুলো একান্তই আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি থেকে সঞ্চিত। তাই দুঃখকে আজ আমি ভয় করি না। তবে গভীর রাতে যখন দু’চোখের পাতাকে একত্রিত করি তখন কেবলই মনে হয় আমার চারিদিকে এক অজানা দুঃস্বপ্ন এসে ভীড় করছে আর সহসাই কর্ণকুহরে এসে প্রবেশ করে বৈচিত্র্যময় এই পৃথিবীর চারপাশের দারিদ্র্য পীড়িত; ক্ষুধার্ত মানুষের অন্তীম কষ্টের হাহাকার। তাদের কেউবা অন্নহীনতায়, কেউবা বস্ত্রহীনতায়-পৈত্রিক নিবাসহনিতায় রাস্তার ধারে, ফুটপাতে, বস্তিতে বস্তিতে আবার কেউবা পার্কের ধারে জীর্ন পোশাকে অযতেœ-অনাদওে রুদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অতি কষ্টে বেঁচে থাকার নির্মম তাগিদে দিনাতিপাত করছে। আবার কেউ কেউ জন্মসূত্রে পৃত পরিচয়হীনতায়-অভাবের তারনায়, অর্থের লালসায়, বাধ্য হয়ে বিপথে চালিত হয়ে পরিণামে খুনী আসামী হয়ে ফেরারী মন নিয়ে অপ্রত্যাশিত আর অনিশ্চয়তার মাঝে বেঁচে থাকে।

বেঁচে থাকে জীবনের তাগিদে; বেঁচে থাকে সময়ের তাগিদে অনন্ত দুঃখকে সাথী করে। তাদের দুঃখগুলো একান্তই তাদের নিজেস্ব। ভুলেও কেউ দয়াপরবশ হয়ে তাদের দুঃখের অংশীদার হতে চায় না। হৃদয়ের সমস্ত আশা-আকাঙ্খা আর চাওয়া-পাওয়ার সমন্বয়ে দুরাশাই তাদের একমাত্র সম্বল হয়ে উঠে, ভাললাগাহীন এই বৈচিত্র্যময় প্রতিমুহুর্তে। জীবনের পদে পদে ক্ষণে ক্ষণে তারা অবহেলীত-ঘৃনিত।

কোথাও পায় না একটুকরো সান্ত¡না; পায় না এতটুকু ভালবাসা, ঘৃনা-বিদ্বেষ আর অবহেলায় তারা- ছুড়ে ফেলা কাগজের মত নিতান্তই অচল মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এমনিভাবে দিন গড়িয়ে মাস, মাস গড়িয়ে বছর, এক সময় বছর গড়িয়ে পার হয় যুগ, তাদের ভাগ্যেরও কোন পরিবর্তন হয় না। আর এভাবেই দারিদ্র্যতার সাথে সংগ্রাম করে; জীবনের সাথে যুদ্ধ করেই বেঁচে থাকে- বিধাতার আদেশিত অন্তীম মুহুর্ত পর্যন্ত। তখন ওদের দেখে মনে হয় আমার কষ্টের সাথে ওদের কষ্টগুলো গিয়ে মিশেছে অস্তগামী বেদনার নীল আকাশে। আর আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলি থোকা থোকা বেদনার গভীর আঁধারের কোন এক ক্ষুদ্র আরশিতে।

তাই সমস্ত বেদনার নীল যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে, রচনা করে যাই আশ্চর্য এক ¯প্নীল ভুবন। আর সেই ভুবনে আমি বড় একা, শুধুই একা। বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলো বার বার আমাকে নিয়ে যায় অন্তহীন আকাশের কষ্টের নীল নীলয়ে। বেদনার নীল নীলয়ে শাড়ীর আঁচলের মতই জীবন গ্রন্থের পুরোটাই আজ নীল বেদনায় আচ্ছাদিত। পরাজয়ের এইতো জীবন! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।