আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পোড়া কপাল হয়েছে আমার!

"মনের ভেতর মনের ছায়া রেখো আড়াল করে" আজকে ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠেই হন্তদন্ত করে ইউনি গেলাম ক্লাস করবো বলে। প্রথমে গেলাম হলে। রুমের অবস্থা দেখে মেজাজটা খারাপ হলো। বেশি কিছু করিনি, শুধুমাত্র বিছানার চাদরটা পাল্টালাম। আর আরেকটা কাজ করেছিলাম, সেটা হলো হাত মুখ ধুয়েছিলাম! ঘড়ি দেখেই চমকে উঠলাম।

এইটুকু কাজ করতেই ৩০ মিনিট লেগে গেল বুঝলাম-ও না! এরপর তাড়াহুড়া করে বের হলাম। দেখি একটা রিকশা নাই! এরপর ক্লাসে গিয়ে দেখি দরজা লক করা! এর মানে ম্যাম ঢুকে গিয়েছেন আর আমি ক্লাস মিস করেছি! এরপর দেখলাম ক্লাসমেট অনেকগুলোই ঘুরঘুর করছে, মানে ওরাও ক্লাস মিস করেছে! কিন্তু যা-ই হোক না কেন, আমার অনেক কষ্ট লেগেছে। আমি তো আমার দোষেই ক্লাসটা মিস করলাম! এটা নিয়ে এ্র্ই কোর্সের চারটা ক্লাস আমি মিস করেছি! পরশুদিন এই কোর্সের মিড টার্ম। এর আগেরদিন আমি একটা ক্লাস মিস করেছি মানে পরপর যেহেতু দুইটা ক্লাস করিনি এজন্য আমাকে ৬ তারিখের পরীক্ষায় ম্যাম ফাপড় দিবে শিওর! এটা মনে করেই রাগে দু:খে মরে যেতে ইচ্ছা করছিল তখন। এরপর দুই ক্লাসমেটকে নিয়ে ক্যান্টিনে চা খেতে গেলাম।

ওরাও আমার মতো ক্লাস মিস করে অনেক কষ্টে ছিল। ঐ সময় বাইরে কয়েকটা বড় ভাইয়া ঘুরঘুর করছিল যাদেরকে আমরা চিনিনা। বড়জোর ১০ মিনিটের মতো ওখানে ছিলাম। তারপর বের হওয়ার সাখে সাথেই ঐ ভাইয়ারা ডাকলো আমাকে। কাছে যেতেই এক ভাইয়া ঝাড়ি দিয়ে বললেন, কোন ব্যাচ? কোন ডিপার্টমেন্ট? আমি সব বললাম।

শুনে ভাইয়া বললেন, ঠিক আছে যাও! আমি বললাম, কেন ভাইয়া কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি? তিনজনই তিনটা মুখ ঝামটা দিলেন। এরপর এক ভাইয়া বললেন, তোমাকে কৈফত দিতে হবে নাকি??? আমি আর আমার সহপাঠীরা হতবাক! তবে বেশি খারাপ লেগেছে আমার কারণ ঝাড়িটা আমিই খেয়েছি কারণ আলা ঝাড়ি খেলে তাও অতটা খারাপ লাগে না। কিন্তু কারণ ছাড়া হুট করে ঝাড়ি খেলে অনেক খারাপ লাগে এরপর ভাইয়ারা ক্যান্টিনে ঢুকলেন আর রাগে গজগজ করতে করতে বললো, দু্‌ই ঘণ্টা ধরে বসে আছে! বের হওয়ার নামই নাই! আমরা আবার অবাক হলাম! আমরা ওখানে দুই ঘণ্টা ছিলাম না। ছিলাম সর্বোচ্চ দশ মিনিট! উনারা বললেই তো পারতেন বের হয়ে যেতে! আমরা চলে আসতাম কিন্তু এরকম ঝাড়ি দেওয়ার মানে কি! আর এরকম তো নিয়ম-ও নাই যে কেউ ঢুকলে আর অন্য কেউ ঢুকতে পারবে না! পরে মনে হলো ওখানে ১০ মিনিট থেকেই কি পাপ করেছি? নাকি অন্য কোনো পাপে এই আমাদেরকে ঝাড়ি খাওয়া লাগলো!! আমার একটা ফ্রেন্ড আছে, যার আমার কথা মনে হলে আমাকে মাঝেমাঝে গভীররাতে মিসকল দেয়। মিসকল দেয় কিন্তু কল দিয়ে বিরক্ত করেনা।

সেদিন গভীর রাতে একটা নাম্বার থেকে কল আসলো। আমি ভাবলাম ও-ই করেছে। মনে মনে বললাম, দীপুটা কি বেয়াক্কেল হচ্ছে দিনদিন! এতো রাতে কেউ কল দেয়! ফোন রিসিভ করতেই দেখি পুরুষ কণ্ঠ আর আমাকে শুরু করলো গালি দেওয়া! আমি সাথে সাথে কেটে দিয়েছি। এরপর আমাকে আরও কয়েকবার কল দিলো। আমি আর রিসিভ করিনি।

এর পরপরই দুইটা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ আলা এসেমেস আসলো! সাথে সাথেই আসলো। যেন রেডিই ছিল! খারাপই লাগলো! এইটাই বুঝলাম না আমি কার এমন কি করলাম যে এরকম গালি দিতে হলো!! দুইদিন অনেক আপসেট ছিলাম। দুইজন বন্ধুকে ব্যাপারটা জানিয়েছিলাম। একজন খুবই অবাক হলো। আর আরেকজন বললো, তুমি জিজ্ঞেস করোনি কেন তোমাকে এগুলো বলছে? একজন আমাকে সমানে গালি দিচ্ছে আর আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো, ভাই এরকম গালি কেন দিচ্ছেন?!! কি আশ্চর্য কথাবার্তা!! তবে পরে সে আমার কাছে ঐ গালিবাজের নাম্বার চেয়েছে, গালিবাজকে ঝাড়ি দিবে বলে।

পরে অবশ্য আর নাম্বারটা দিবো দিবো করে দেওয়া হয়নি। তবে দিতে হবে। কার এমন বাড়া ভাতে ছাই দিলাম জানা দরকার! আমি অবশ্য একে নিজেই সাইজ করতে পারবো। আমি জীবনে কখনোই ছাতা ব্যবহার করিনি। ছাতা জিনিসটাই আমার কাছে সবসময় একটা বোঝা মনেহয়।

কখনো তেমন সমস্যা-ও হয়নি। অন্যের ছত্রছায়ায় ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু আজকে সারাদিনে কতবার যে ভিজলাম!! শুধুমাত্র একটা ছাতা না কেনার পাপে!! আমার এমনিতেই আজকে দিনটা খারাপ গেছে। ছাতা প্রসংগেই কি কি যেন বলেছিলাম এক গ্রুপমেটকে। তার মাথার স্ক্রু ভালো রকমের ঢিলা।

কিছুক্ষণ পর আমাকে সে একটা ছাতা এনে দিলো। আমি বললাম, এটা কোথায় পেলে? ও বললো, ওয়াশরুমে বেসিনের উপর এটা পেলাম, তাই ভাবলাম এটা আমাদের লাগতে পারে আমি বললাম, তার মানে তুমি জানো না ছাতাটা কার? পেয়েছো আর নিয়ে আসছো? সে খুব সুন্দর করে একটা হাসি দিয়ে বললো, হুমম আমি হতবাক হয়ে গেলাম!! এরপর আমি বললাম, যেখানে ছিল সেখানে রেখে আসো, যাও!! সে আরেকটা ছেলে গ্রুপমেটের হাতে ছাতাটা ধরিয়ে দিয়ে বললো রেখে আসতে! একটা ছেলে মেয়েদের ওয়াশরুমে যে যেতে পারবে না, এইটুকু সেন্স তার নাই!! রাগই লাগলো তাই দিলাম একটা ঝাড়ি। আজকে আমার আবার জ্বর আসছে। ছাতা না কেনার পাপে আজকে জ্বরটা বাঁধালাম। কিন্তু কোন পাপে ঝাড়ি আর গালি খেলাম সেটা এখনও বুঝতে পারলাম না! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।