আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গুগলের বাড়ি : ব্লগার রাগিব হাসান এর অভিজ্ঞতা

প্রথম আলো র 'ঈদ উপহার '- প্রকাশিত ২৫অক্টোবর এ ব্লগার রাগিব হাসান গুগলে কাজ করার সময় তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। হয়তো অনেকেই পরেছেন । তারপরও কয়েকটি অংশ রিভিউ দিতে ইচ্ছে করছে ---- টেস্টিং অন দ্য টয়লেট গুগলের অনেক কিছুই বেশ ইন্টারেস্টিং, সাধারণ কোম্পানি যেভাবে কাজ করে, তার পুরা উল্টো দিকে অনেক কাজ করতে তাদের আগ্রহ বেশি। তারই একটা উদাহরণ হলো টেস্টিং অন দ্য টয়লেট। গুগলের বিভিন্ন প্রোগ্রামের কোড প্রতিনিয়তই পরীক্ষা করে চলতে হয়, যাতে করে কোনো বাগ ঢুকে না পড়ে।

সেই টেস্টিংয়ের ব্যাপারে কর্মীদের সচেতন করার জন্যই গুগলের টেস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপের আইডিয়া—টয়লেটে টেস্ট করা। আইডিয়াটা এই রকম, টয়লেটে প্রত্যেকেই যায় এবং কম-বেশি সময় ব্যয় করে। টয়লেটে মূল কাজ ছাড়া করার বেশি কিছু থাকে না, তাই বন্ধ দরজা বা দেয়ালের দিকে তাকিয়ে সময় নষ্ট করার বদলে সেই সময়টাতেও মাথা ঘামানো, কিংবা বুদ্ধিতে শান দেওয়া ভালো। তাই গুগলের প্রতিটি টয়লেটের সামনে, দরজার পেছনে প্রতি সপ্তাহে কিছু টিউটোরিয়াল থাকত। মাটির মানুষ ব্রিন আর পেইজ ব্রিন আর পেইজকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে তারা গুগলের প্রতিষ্ঠাতা।

এখনো দুজনে মাটির মানুষ, ভাবভঙ্গিতে সেই পিএইচডি করতে থাকা গ্র্যাজুয়েট স্কুলের ছাত্রের মতো। গুগলে ইন্টার্নশিপ পাওয়ার সময় ভেবেছিলাম, পুরা গুগলের সবার বস ব্রিন, পেইজ এবং গুগলের সিইও এরিক স্মিড্টকে আদৌ চোখে দেখতে পাব কি না। বাংলাদেশে অন্য কারও কথা বাদ থাক, বুয়েটে শিক্ষকতা করার সময়েও বুয়েটের ভিসির সঙ্গে দেখা করতে এক দিন ঘণ্টা পাঁচেক বসে থাকতে হয়েছিল। প্রথম দিনেই ধারণাটা পাল্টে গেল ব্রিন আর পেইজকে দেখে। প্রতি শুক্রবার গুগলে এক বিশাল পার্টি হয়।

টিজিআইএফ, অর্থাৎ থ্যাংক গড ইটস ফ্রাইডে হলো এই পার্টির নাম। আসলে সোমবার থেকে কাজ শুরু হয়ে শুক্রবার আসতে আসতে মানুষের মেজাজ বিগড়ে যায়, কাজের চাপে মাথা গরম হয়ে থাকে। শুক্রবার আসলে আসন্ন দুই দিনের উইকেন্ড বা সপ্তাহান্তের ছুটির আনন্দে শুকরিয়া করে। সেই থেকেই এই মিটিংটার নাম হয়েছে। ওখানে হাজির হয়ে তো অবাক।

দেশে থাকতে দেখতাম, কোনো কোম্পানির বড়সাহেব, এমনকি সরকারি কোনো অফিসের জিএম সাহেবের বিশাল ভাব, আর আশপাশে চামচার দল, অনেক সময় সিকিউরিটির লোকজনের হুমকি-ধমকি। সে তুলনায় বিলিয়নিয়ারদের তালিকার শুরুর দিকে থাকা ব্রিন ও পেইজকে দেখে বোঝারই উপায় নেই, ওরাই এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং অধিকাংশ শেয়ারের মালিক। মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রতি শুক্রবার ওরা প্রথমে এই সপ্তাহে কী কী প্রডাক্ট গুগল ছাড়ছে, তার কথা বলে খানিকক্ষণ। এর ফাঁকে ফাঁকে ব্রিন ও পেইজের ভাঁড়ামি চলতে থাকে। দুজন নানা রকমের রসিকতা করার চেষ্টা করে।

মজার ব্যাপার হলো, আমি সেদিন গিয়েছি বিল্ডিং ৪৩-এর নো-নেইম ক্যাফেতে। খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, হঠাৎ মনে হলো, সামনের লোকটাকে চেনা চেনা লাগছে। কোথায় দেখেছি ভাবতে ভাবতেই টের পেলাম, এটা সের্গেই ব্রিন। মনে হলো, ভলিবল কোর্টে অন্য কর্মীদের সঙ্গে খেলে এসে এখন খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে, অন্য সব সাধারণ গুগল কর্মীর সঙ্গে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।