আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদেশী কোচদের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রস্থানঃ দেশের ক্রিকেটের জন্য অশনি সংকেত।

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড কিন্তু শিক্ষিত লোকই জাতির মেরুদণ্ড নহে ইএসপিএন ক্রিকইনফো-কে দেয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে রিচার্ড পাইবাস বাংলাদেশের ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তার পক্ষে আর কোচের দায়িত্ব পালনের কোন সুযোগ নেই। সাক্ষাৎকারে রিচার্ড পাইবাস বলেন, কোন চুক্তি ছাড়াই গত পাঁচ মাস ধরে তিনি সরল বিশ্বাসে তাঁর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সবার ধৈর্যেরই একটা সীমা আছে। বাংলাদেশের কোচ হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালন একবারে অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। রিচার্ড পাইবাস জানান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এ বছরের শুরু থেকে তাঁকে তিনবার হেড কোচ হওয়ার প্রস্তাব দেন।

তিনি দুবার এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। কারণ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁকে যতটা সময় দেয়ার জন্য বলছিলেন, ততটা সময় দেয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। কারণ তার নিজের পরিবারকে যদি সময় দিতে হয়, বাংলাদেশে তাঁর পক্ষে এতটা সময় কাটানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এরপর তৃতীয়বার যখন তাকে আবারও এই প্রস্তাব দেয়া হয়, তখন তিনি শর্ত দেন যে বাংলাদেশ দলের বিভিন্ন সফরের ফাঁকে ফাঁকে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চান। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাতে রাজী হয়।

কিন্তু তারা কখনোই এই বিষয়টি লিখিত চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেনি। ফলে তিনি এই চুক্তি সই করতে অস্বীকৃতি জানান। এর পর তিনি বিষয়টি সুরাহার জন্য ছয় দফা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। এ কারণেই তিনি বাংলাদেশে ফিরে যাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বোর্ডের হস্তক্ষেপ রিচার্ড পাইবাস বলেন, বাংলাদেশ দলকে যেন তিনি বোর্ডের পরিচালকদের হস্তক্ষেপ ছাড়া পরিচালনা করতে পারেন তার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। বোর্ডের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল তাঁকে সেই আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সেটা কখনোই ঘটেনি। ক্রিকেট বোর্ড বার বার তাঁর কাজে হস্তক্ষেপ করেছে। এদের কেউ কেউ শুধু তাঁর কাজে বাধাই সৃষ্টি করেনি, ক্রিকেট সম্পর্কে তারা ছিল একেবারে অজ্ঞ।

রিচার্ড পাইবাস বলেন, বাংলাদেশ দল যখন সফরে যায়, তখন বোর্ড সদস্যরা ট্যুর ডেলিগেশনের প্রধানের মত আচরণ করেন। অথচ এটা তো টিম ম্যানেজারের কাজ। তারা টিম মিটিং এ থাকতে চান, টিম বাসে চড়তে চান, এমনকি ড্রেসিং রুমেও নাক গলাতে চান। রিচার্ড পাইবাস বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রশংসা করে বলেন, বই তাদের আসলেই কিছু ভালো খেলোয়াড় আছে। মুশফিকুর রহিম, সাকিব, তামিম—এরা খুব ভালো খেলোয়াড়।

ক্রিকেট ভালোবাসেন এমন কিছু নিবেদিত ক্রিকেট কর্মকর্তাও আছেন। কিন্তু রাজনীতি সবকিছুকে গ্রাস করেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই ঘটনা নতুন কিছু নয়। বেশির ভাগ কোচই এর শিকার হচ্ছেন। কেউ মুখ খুলেছেন, কেউ খুলেননি।

গরডন গ্রিনিজ, ডেভ হোয়াটমোর এবং কিছুদিন আগে স্টুয়াট ল এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলার মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন। বাংলাদেশ দল বিগত কয়েক বছর ধরে তুলনামূলক ভালো খেলে আসছে। তাদের পারফরমেন্সের গ্রাফ দিনে দিনে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে টি-২০ এবং ১৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এখনি যদি এর ইতিবাচক সমাধান না হয় তাহলে দেশের ক্রিকেটেরই ক্ষতি হবে শুধু শুধু।

বোর্ড কর্তাগণ সভাপতির পদ আর ব্যাবসায়ের কথা চিন্তা করতে পারেন কিন্তু সাধারণ ক্রিকেট অনুরাগীরা তা মেনে নিতে পারি না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।