আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিঙ্গাপুর - মালেশিয়া - থাইল্যান্ড ঘুরে এলাম মাত্র ৭০,০০০ টাকায় ,১২ দিন নিজে নিজেই- পর্ব-২

আগের পর্ব সিটিহল ষ্টেশনে বহূ প্রিয় ম্যাকডোনাল্ড এর ইন্ডিকেশন দেখে সাতপাচ না ভেবে সোজা ঢুকে পড়লাম। আমার প্রিয় বিগম্যাক নিলাম সাথে ফ্রাইস , আর কোক। সবমিলে ৭ সিংডলার। চেটেপুটে খেতে আধঘন্টা লাগলো। একটা দানাও বাদ দিলামনা।

১ সিংডলারে ৬৮টাকা বলে কথা। এর ফাকে ম্যাপটা দেখে নিলাম ভালো করে। সিটিহল থেকে মেট্রোতে বুন লে তারপর ২৫১ নং বাস ধরলাম জুরন Bird Park । বাস পাকের সামনেই নামিয়ে দিলো। ড্রাইভার থেকে ফেরত যাওয়ার বিষয়টাও জেনে নিলাম।

যেখানে নেমেছি সেখান থেকেই একই বাসে বুন লে মেট্রো। এইবার ঢুকার পালা। টিকেট নিতে লাইনে দাড়ালাম। এর মধ্যে এক সেলসম্যান হাংকি পাংকি কত কিছু প্যাকেজ অফার করলো। একে তো টিকেট এর ১৮ সিংডলার দাম দেখে ষ্ট্রোক হয় অবস্থা আর এইবেটা কিনা আরো খরচের কথা বলে।

এক কথায় বললাম আমি শুধু ঢুকার টিকেট চাই। টিকেটের সাথে এক পাকের ম্যাপও দিলো ফ্রি। আহহা কত সুন্দর কি মনোরম পরিবেশ, নিরিবিলি। ডেটিং করতে মন চায়। পাখী দেখতে এসে এসব চিন্তাভাবনার কোন মানে হয়না, তাছাড়া ইয়েও পাশে নাই।

ম্যাপ দেখে এগুতে লাগলাম। হরেক রকম পাখি, নানা জাত, ভিন্ন রং, মন মুগ্ধকর। আমাদের ঢাকা চিডিয়াখানার কথা মনে পড়লো। গরিব দেশের পাখিদের থাকার ব্যাবস্থা দেখলে এই সিংগাপুরের পাকের পাখিগুলা কাদতে বসতো। প্রতিটি খাচা অনেক বড় আর পযাপ্ত সবুজ ঘেরা।

Bird Park এ প্রায় প্রতিদিনই কিছুনা কিছু শো হয়। আমিও বসে বসে এমনি একটা শো দেখলাম ফ্রি। যায়গাটা ঘুরতে এত ভালো লাগলো যে ঘন্টা দুয়েক কাটিয়ে দিলাম। বের হয়ে আসার সময় বড়ই আনন্ন্দ হলো টাকা ওশল হয়েছে ভেবে। এইবার হোটেল খুজতে হবে ফেরার পাক গিয়ে,জায়গাটা মুস্তফা নামে বাঙ্গালীদের কাছে পরিচিত।

বাসে বুনলে মেট্রো ষ্টেশন এসে ফেরার পাক রওনা দিলাম মেট্রোতে। ফেরার পাক নেমে সব গুলিয়ে গেলো। অনেকগুলো এক্সিট। কোনটা দিয়ে বের হই। কিছুক্ষন দাড়িয়ে রইলাম , পযবেক্ষন করলাম।

একটু পর খেয়াল করলাম এফ এক্সিট দিয়ে অনেকগুলো মানুষ বের হচ্ছে যাদের অনেকই বাংলা বলছে। আমারে আর পায় কে সোজা হাটা তাদের পিছে। বের হয়ে দেখলাম এটা একটা বাংলা কমিউনিটি। বাংলা খাবারের দোকানও অনেক। হোটেল খুজা শুরু করলাম, হোটেলের অভাব নাই কিন্তু ৭০ ডলার রুম ।

তাই আর একটু খুজতে লাগলাম। হঠাৎ চোখে পড়লো বাংলায় লেখা এড থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা আছে। লামিয়া রেষ্টুরেন্টের মালিক মামুন ,সে রেষ্টুরেন্টের উপরে রুম ভাড়া দেয়,২ জন শেয়ার ৩০ সিংডলার পার হেড। এখানে আর সস্থা কিছু না পেয়ে ভাবলাম উঠে যাই। রুমে ঢুকতেই পরিচয় হলো জলিল ভাইয়ের সাথে।

সিংগাপুর - মালেশিয়া ঘুরতে এসেছেন। কথায় কথায় নিজের ঢাকা শহরে ৫তলা বাড়ি আর বিভিন্ন ব্যাবসায়ে জডিত থাকার কথা বললেন। ভাবলাম এরকম বড়লোক যদি এই চিতকাইত মাকা হোটেলে শেয়ারে থাকে তাহলে আমি কি দোষ করলাম। যাই হোক ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়া যাক। গন্তব্য মেরিনা বে সেন্ডস।

জলিল ভাই আমার সাথে যেতে চাইলে আমি রাজি হয়ে যাই। এদিকে আমার সাধের বিগম্যাক হজম হয়ে গেছে,তাই ভাবলাম কিছু খেয়ে নেই। জলিল ভাই এক বাংগালী রেষ্টুরেন্ট এ নিয়ে গেলো। এক ফুল প্লেট ভাত ,এক সবজী, এক মাছ মাত্র ৪সিং ডলার। এটার উপর আর ভালো কিছু হয়না।

খেয়ে নিলাম পেট পুরে। জলিল ভাই বিল দেয়ার জন্য গো ধরলেন, আমার কাটা কাটা কথা যির যার বিল তার তার। খাওয়া শেষে মেট্রো ধরলাম মেরিনা বে সেন্ডস। শপিংমলের ভেতর দিয়ে কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে বের হলাম মেরিনা বে সেন্ডস ষ্টেশন থেকে। আমরা সিঙ্গাপুর বলতে যে ছবি দেখি এটা সেই জায়গা।

উচু উচু দালানের সারি একে অপরকে ছাড়িয়ে। ছবি তুললাম অনেকগুলো। পুরা এলাকাটাই চষে বেড়ালাম। সন্ধ্যার পরেই শুরু হলো বিখ্যাত ওয়াটার ডিসপ্লে। এককথায় অসাধারন ,মনেরাখার মতো।

প্রজেক্টরের আলো যে পানিতে ফেলে এত সুন্দর কিছু তৈরী করা যায় না দেখলে বিশ্বাস হয়না। ১৫ মিনিট ধরে চললো,শত শত মানুষ বিস্ময় ভরে দেখলো। এইরকম একটা জিনিস সিঙ্গাপুর সরকার কেমনে ফ্রি দিলো আমার মাথায় আসেনা। যাই হোক আমি খুশি ফ্রি পেয়ে। রুমে ফিরতে ফিরতে রাত ১০টা।

হালকা কিছু খেয়ে, গোসল করে বিছানায়। একটা দিন চলে গেলো সিঙ্গাপুরে............. পাঠক চাইলে চলবে......... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।