আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কমদামে জামদানির স্বপ্ন এবং বেগুনের ম্যাজিক [] শুচি সৈয়দ

øেহভাজন মীর মাসরুর জামান রনি ও সাহিদুলদের সংগঠন ‘সমষ্টি’র আয়োজনে একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসব ছিল ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে। ‘কৃষি সাংবাদিকতা’ নামক বইটির মোড়ক উšে§াচন করেন এক সময়ের অগ্নিকন্যা খ্যাত কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এ সভার সভাপতি তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বললেন, তার ইচ্ছা মতিয়া চৌধুরী আমাদের দেশের স্থায়ী কৃষিমন্ত্রী থাকুন। সভাপতির এই সরল ইচ্ছাটি আমারও অন্তরের ইচ্ছা বলেই মনে হল। হয়তো এককালের ‘অগ্নিকন্যা’কে অচিরেই আমরা ‘কৃষিকন্যা’ নামে অভিহিত করতে শুরু করবÑ তাঁর দুটি অভিধা-ই মানুষের অন্তর্জাত, চামচামিজাত নয়।

এগুলো তাঁর কাজেরই অর্জন, বাগাড়ম্বরের নয়। কেন কৃষিমন্ত্রীর একটি বইয়ের মোড়ক উšে§াচন অনুষ্ঠানের কথা আমি লিখছি? লিখছি এ জন্য যে, ইদানীং লেখা মানেই নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে লিপিবদ্ধ করা। ক্রমাগত নেতিবাচক শব্দাবলী এক ধরনের মানসিক বৈকল্য তৈরি করেÑ চেষ্টা করছি সেই বৈকল্যের ফাঁদ থেকে আমি এবং আমার পাঠককে কিছুটা মুক্তি দিতে। অনুষ্ঠানের কয়েকজন বক্তার বক্তব্য থেকে অনেক নতুন জানালার সন্ধান যেন পেলাম। প্রায়শই বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমরা যে কলাম লিখি, কলমচর্চা করি তার একই ধরনের অবস্থান সম্পর্কে যেন উপলব্ধি করলাম।

উপলব্ধি করলাম একই ঘটনার বাইরে থেকে দেখা, ভেতর থেকে দেখা এবং বিভিন্ন পাশ থেকে দেখার মধ্যে নানা পার্থক্যÑ যা প্রায়শই আমরা আমাদের লেখালেখিতে এড়িয়ে যাই। তাৎক্ষণিক তাৎপর্যকে প্রধান করে অন্য সব কিছুকে আমরা ব্ল্যাকহোলে ঠেলে দিই। ফলে একজন সৎ মানুষের সৎ ও সঠিক সিদ্ধান্তকেও চিৎকার-চেঁচামেচির ডামাডোলে বিতর্কিত করে তুলে বিপন্ন করে ফেলি। ‘কাজের মানুষের’ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ‘কথার মানুষের’ সিদ্ধান্তের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু পার্থক্যের কারণ উপলব্ধি না করে যে কোন ‘সিদ্ধান্তকেই’ সঠিক বলে অবস্থান নেয়ার যে ক্ষতি, তা অপূরণীয়। মন্ত্রী তাঁর নিজের উদাহরণ দিয়ে, কাউকে দোষী না করে তুলে ধরলেন নিজের অভিজ্ঞতা।

মন্ত্রী বললেন, কাজকে আমি ইবাদতের মতো মনে করি, ফলে কথা বলার অনুষ্ঠানে সচরাচর আসা হয় না। মন্ত্রণালয়ের কাজের পাশাপাশি অনেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দুটোকেই ম্যানেজ করার মতো বড় প্রতিভাবান তিনি নন, জানালেন অকপটে। পাঠক, আমি কৃষিমন্ত্রীর প্রশস্তি রচনা করতে বসিনি। আমি কেবল সাদামাটা একটা অনুভূতিকে ব্যক্ত করছি। আমার যে অনুভূতি ক্রমাগত নেতিবাচকতায় আক্রান্ত ও আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে আমি সেটাকে সেই আচ্ছন্নতা থেকে মুক্ত করার চেষ্টারত মাত্র।

যে দেশে কাজের সঙ্গে কথার সমন্বয় নেই; কাজ এবং কথাকে একত্রে গুবলেট করে ‘হরিবোল’ অবস্থা তৈরি করার লোকে সয়লাব আমাদের চতুর্পার্শ্ব, সে দেশে এই নেতিবাচক অনুভূতি থেকে মুক্তি পাওয়া খুব কঠিন। কৃষিমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বললেন, ওপর থেকে দেখে নয়, ভেতর থেকে জেনে এবং বুঝে লিখুন। উদাহরণ দিলেন, একজন বক্তার আশংকারÑ কৃষি নিয়ে দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করছেন একজনের আশংকা দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে কৃষি দক্ষিণাঞ্চলে সরে যাচ্ছে। মন্ত্রী বললেন, হ্যাঁ। তার পেছনের কারণগুলো এবং সত্যটি তুলে ধরলেন তিনি।

খরার কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, আসন্ন ট্রান্সএশিয়ান রোড কানেকটিভিটিতে দেশের সংযুক্তি, শিল্পায়নÑ এসব কারণে দেশের উত্তরের চরিত্রই পাল্টে যাচ্ছে, অপর দিকে সাগরে জেগে উঠছে প্রায় আরেকটি বাংলাদেশ। দক্ষিণে লবণাক্ত পানির প্রাচুর্যকে কাজে লাগানোর এবং একই সঙ্গে পশুপালনের সুবিধার কারণে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে দক্ষিণাঞ্চল। বললেন, বিজ্ঞানীরা লবণাক্ত পানিসহিষ্ণু ধান উদ্ভাবন করে দক্ষিণের সম্ভাবনাকে অর্থবহ করে তুলছেন। এই হচ্ছে বিষয়টির প্রকৃত কারণ। আঞ্চলিকতার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা এবং আঞ্চলিক সম্ভাবনার বিবেচনায় দেখার মধ্যেকার পার্থক্য এখানেই।

আমরা এও জানি যে, আমাদের বিজ্ঞানীরা খরাসহিষ্ণু, বন্যাসহিষ্ণু ধানেরও উদ্ভাবনায় সাফল্য দেখিয়েছেন। আমি ভাবছিলাম মন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে আÍপ্রসাদ লাভের চেষ্টায় তার বিভিন্ন কৃতিত্ব বর্ণনায় মুখর হবেন, আপনবাদ্যি বাজাতে। পাটের জেনোম আবিষ্কার আর ক্ষতিকর ছত্রাকের (মাত্র কয়েক দিন আগের খবর) জেনোম আবিষ্কারের কথা বর্ণনা করেই শেষ করতে পারবেন না তার বক্তৃতার সময়। কিন্তু আশ্চর্য হলাম সেই প্রসঙ্গটির উল্লেখ সামান্যই করলেন। তার অর্থ এই নয়, বিষয়টি সামান্যÑ তিনি যা করলেন তা হচ্ছে একটি সাফল্য দিয়ে সব প্রশ্ন ঢেকে না দিয়ে উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর প্রকৃত উত্তর দেয়ার চেষ্টা।

মন্ত্রী জানালেন, পাট থেকে সুতা তৈরির কাজ করছেন আমাদের প্রতিভাবান বিজ্ঞানীরা, সেটি সার্থকভাবে সম্পন্ন হলে জামদানি শাড়িÑ যার দাম এখন ৬ থেকে ১০ হাজার টাকা সেটি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় কিনতে পারবেন আমাদের কর্মজীবী মেয়েরা। আমাদের বিজ্ঞানীরা যদি পাট থেকে উদ্ভাবিত এই সুতাকে তুলাজাত সুতার মতো নমনীয় করে তুলতে পারেন তাহলে ১২০০ টাকার জামদানি আর ১০ হাজার টাকার জামদানির পার্থক্যও থাকবে না। সে কাজ চলছে। আমি জানি না ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকরা কৃষিমন্ত্রীর এই কথার যথার্থ তাৎপর্য উপলব্ধি করেছেন কি না! আমি যখন এ লেখাটি লিখছি তখনও হকার পত্রিকা দেয়নি। পত্রিকা দেখলে বুঝব এবং লিখব আমার মন্তব্য।

* বাঙালি নারীর কাছে জামদানি একটি স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে তার সাধ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেয়ার কাজটিকে শুধু নারীর স্বপ্নসাধ বিবেচনা করলে এ ঘটনার তাৎপর্য বোঝা কিংবা উপলব্ধি করা যাবে নাÑ এ ঘটনার ভেতর একটা বিরাট অর্থনৈতিক আলোড়ন সুপ্তÑ এ কথা বুঝতে হবেÑ এ ঘটনা যেমন পাল্টে দেবে আমাদের তাঁতীদের, জোলাদের জীবন; তেমনি ঘুরিয়ে দেবে অর্থনীতির চাকাকেÑ সবলে। এ কাজ কৃষি মন্ত্রণালয়ের নাকি বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের নাকি অর্থ মন্ত্রণালয়েরÑ সে প্রশ্ন এখানে কূটতর্কÑ সেই তর্ক তুলে এখনই সম্ভব এই সম্ভাবনাকে কবরস্থ করা যেমনটি নিকট অতীতে এবং সচরাচর বাংলাদেশে করা হয়ে থাকে। যার একটি উদাহরণ কৃষিমন্ত্রী অত্যন্ত পরিশীলিত বাক সংযমের সঙ্গে কারও নাম উল্লেখ না করে জানালেন, তারা যখন বিরোধী দলে তখন একদিন সচিবালয়ে গিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে মনমরা দেখে প্রশ্ন করেন তারা মন খারাপের কারণ কি? সচিব তাঁকে জানিয়ে ছিলেন, পাট বিষয়ে একটি প্রকল্পপত্রের ধারণা নিয়ে গিয়েছিলেন সর্বোচ্চ নির্বাহীর কাছে। তিনি সব কথা শুনে তাকে বললেন, ‘আপনি তো খুব ভাল গান করেন, আপনার গানের একটি ক্যাসেট আমাকে পাঠিয়ে দেবেন।

’ এ কথা শুনে সচিব সাহেব যে তার চেয়ারে ফিরে টেবিলকে তবলা বানিয়ে গানের আসর জমাননি সেটাই আমাদের ভাগ্য! এমন ঘটনা ঘটেছিল সাবমেরিন কেবল লাইনে দেশকে সংযুক্ত করা হবে কি হবে না? এই বিতর্ক তুলে ১৯৯০ সালে। রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা বিপন্ন হবে এই আশঙ্কার কথা বলে বিতর্ক তুলে তখন দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয় প্রায় এক দশক। এক দশক একটা জাতির জীবনে বিরাট সময়। সে ক্ষতি আমরা এখনো পুশিয়ে নিতে পারিনি বলেই আমার ব্যক্তিগত ধারণা। এবং পাঠক! আজ সকালটি আমার বিস্ময়ে ভরে উঠল চারটি পত্রিকায় চোখ বুলিয়ে।

৩৮ পৃষ্ঠা; ২৮ পৃষ্ঠা; ২০ পৃষ্ঠা এবং ১৬ পৃষ্ঠার পত্রিকা চারটির একটিতেও ছাপা হয়নি কৃষিমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের খবরটি। অনুষ্ঠান স্থলে আমরা ক্যামেরার সমাবেশে তার নিচে জড়োসরো হয়ে বসতে বাধ্য হয়েছিলামÑ রাতে কোনও চ্যানেলেই নিউজটি দেখিনি। চাষাভুষার খবর যে খুব অপাংক্তেয় একথা অনুষ্ঠানে একটি চ্যানেলের অন্যতম মালিক শাইখ সিরাজ তার বক্তৃতায় জানিয়েও দিয়েছিলেন। তবু যে পত্রিকাটি পাটের জেনোম আবিষ্কারের খবরটি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছিল তারাও কৃষিমন্ত্রীর ১২শ’ টাকায় জামদানি শাড়ি পাওয়া যাবার সম্ভাবনা জানানোর খবরটি তাদের ৩৮ পৃষ্ঠার দীর্ঘ পরিসরে স্থান দিতে পারল না যে এ থেকেই প্রমাণিত হয় আমাদের সমাজে কাজের চেয়ে কথা, কথার চেয়ে বাগাড়ম্বরের ফেনার বুদবুদের মূল্য বেশি। আমি জানি সংবাদপত্রে কৃষিমন্ত্রীর খবরটি স্থান না পাওয়ায় আমার যে আক্ষেপ তার বিন্দুমাত্রও কৃষিমন্ত্রীর মনে জাগবে নাÑ কারণ কাজ তো তার কাছে উপাসনা, পাবলিসিটির মূর্খতা নয়Ñযা চলছে বর্তমানে এই দেশে।

আমার এই আক্ষেপ অর্থহীন কারণ গতকালকে চ্যানেলগুলোয় খবরটি না দেখে আমি ভেবেই নিয়েছিলাম প্রিন্ট মিডিয়ায়ও থাকবে না খবরটিÑ তাই ঘটল। আক্ষেপের বদলে বরং আমি কৃষিকন্যা মন্ত্রীর কথাই বলি। মতিয়া চৌধুরী বললেন, বিদেশের উষর মরুভূমিকে আমাদের তরুণরা সবুজের সমারোহে ভরে তুলছে, কুয়েত, শারজাহ, আরব আমিরাত গিয়ে এসব দৃশ্য তিনি দেখেছেন, তাহলে সেই তরুণদের কেন আমরা দেশেই কাজের সুযোগ করে দেব না? জীবনের সবচাইতে মূল্যবান সময় তারুণ্যকে বলি দিয়ে তারা যে রেমিটেন্স রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করছেন তার বিনিময়ে রাষ্ট্র হারাচ্ছে দেশগড়ার তারুণ্য। কৃষিতে তাই তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরি জরুরি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, উন্নত প্রযুক্তি আর বিকল্প শ্রম সংস্থান ভবিষ্যতে যদি আমাদের এক কোটি প্রবাসীর কর্মসংস্থান বিপন্ন করে তার জন্য ভবিষ্যতের সে সংকট সামাল দেবার চিন্তা এখনই করতে হবে।

সম্ভবত অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান ক্ষীণ স্বরে বললেন, আমরা যদি কৃষিতে উন্নতি করতে পারি তাহলে এখন যেমন মানুষ শিল্পোন্নত দেশে কাজের জন্যে ছোটে তেমনই কাজের জন্য মানুষ আমাদের এদেশে আসার জন্য লাইন দেবে। তার কথাটা একেবারেই মিথ্যা নয় বরং সত্য। গত ফেব্র“য়ারি মাসে আমেরিকা থেকে দেশে এসেছিলেন সরকারের সাবেক এক উচ্চপদস্থ আমলা, আমাদের লেখক-স্বজন আতাউল করিম শফিক। তিনি দেশে এসে তাঁর লেখক বন্ধু কবি আবু হাসান শাহরিয়ারকে বলেছেন, পারলে গ্রামের কৃষি জমি কিনতে বলো বন্ধু-বান্ধবদের কারণ উন্নত বিশ্বের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এখন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কৃষি ফার্ম করার প্রকল্পে ঝুঁকছে। আগামী দশকেই বাংলাদেশের উর্বর কৃষি জমি সোনার দামে বিকোবে।

অগ্নিকন্যা কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী যার যৌবন অতিবাহিত হয়েছে সমাজতন্ত্রের স্বপ্নে; জানি না সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসীদের যৌথ খামারের স্বপ্নটির কথা তাঁর মনে আছে কিনা, তাঁদের স্বপ্নের সেই যৌথ খামার চলে যাচ্ছে কর্পোরেট পুঁজির পুঁজিবাদীদের গ্রাসে শুধুই খামার হিসেবে। কৃষির এমন ধারার বিকাশ অবশ্য কারোরই কাম্য নয়। যদিও প্রয়োজনের তাগিদ সেদিকেই ঠেলছে আমাদের কৃষিকে। সেটি যে স্বাস্থ্য সম্মত নয় সেকথা তুলে ধরেছেন শাইখ সিরাজ। শাইখ সিরাজ সম্ভাবনাময় কৃষির কথা তুলে ধরে একটি বেগুনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন তাঁর বক্তব্যে।

ময়মনসিংহের হাটে ভাল জাতের ৫টি বেগুন তিনি ৩৫ টাকায় কিনে ‘ফলো’ করলেন সেই বেগুনকে ঢাকা পর্যন্ত। ঢাকায় এসে সেই পাঁচটি বেগুনই ১০০ টাকায় বিক্রি হল আর এই ১শ’ টাকার বেগুন যখন একটি হোটেলে প্রবেশ করল তখন তা থেকে ১০ পিস বেগুনি তৈরি হল যার একটি ১০ টাকা হিসেবে ৭টি বেগুনের দাম ৭শ’ টাকায় দাঁড়াল। উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত বেগুনের দামের এই ম্যাজিক দেশের সমস্ত কৃষিপণ্যে চলছে। সমস্ত মুনাফা ঢুকছে মধ্যস্বত্ব ভোগীদের পকেটেÑ জমছে কালো টাকা, যা সমাজে জš§ দিচ্ছে সন্ত্রাসের, বঞ্চিত হচ্ছেÑ আক্ষরিক অর্থে বলি হচ্ছে উৎপাদক এবং ভোক্তাÑ কৃষক দাম পাচ্ছে না কৃষিপণ্যের। অথচ উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে ক্রেতাকে।

মধ্যস্বত্বভোগীর পকেটে জমছে কালোটাকার পাহাড়। ক্রমাগত পেশির শক্তি বাড়ছে তার যার ফলে সমাজ শিকারে পরিণত হচ্ছে অব্যাহত অরাজকতার! শাইখ সিরাজের এই বেগুনের গল্পের ভেতর যে প্রশ্ন রয়েছে সে প্রশ্নের জবাব কিংবা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীÑ সেটি তাঁর বিষয়ও নয়। একটি বুর্জোয়া দলের কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী যৌথ খামারের স্বপ্নের কথা স্মরণ করলে তাঁকে উপদেশের অস্ত্র নিয়ে তেড়ে আসবেন দাতা সংস্থার সুতীক্ষœ বর্বর তীরন্দাজরা কন্সালটেন্টরা সে কথা আমাদের জানা। জানালেন মন্ত্রীও। সম্প্রতি আইএমএফ প্রতিনিধি তার সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন তাদের দাবিÑ কৃষিতে সরকারি ভর্তুকি তুলে নিতে হবে।

দাতা সংস্থার দাঁতালরা এমন অনেক আবদারই করেÑআমরা অনেকেই বুঝে, না-বুঝে তাদের সঙ্গে গলা মেলাইÑসেটাই দুঃখজনক। মতিয়া চৌধুরী সে কথাই বললেন। দেশটা আমাদের, সমস্যা আমাদের, সমাধানও আমাদেরই বের করতে হবে। দাতাদের সমাধানে আমাদের সমস্যার সমাধান হবে না। মিডিয়ায় কৃষিমন্ত্রীর প্রায় ব্লাক আউট অনুষ্ঠান থেকে সস্তা জামদানির স্বপ্ন আর সস্তা বেগুনের ম্যাজিক-এর গল্প দুটি থেকে পাঠক আমার মত আপনি যদি আশাবাদী হন, তাহলে এই লেখার সামান্য মূল্য আছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।