আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেনিয়ায় সম্ভব হলে বাংলাদেশেও সম্ভব।

কঠিন সময় দীর্ঘস্থায়ী হয় না কঠিন মানুষেরাই দীর্ঘস্থায়ী হয় লন্ডনে হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছে কেনিয়ায় ৫০-এর দশকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় নির্যাতিত মাও মাও গোষ্ঠির তিনজন সদস্য ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারবে। বিচারক মিঃ জাস্টিস ম্যাককম্ব তাঁর রায়ে বলেছেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী যেহেতু সেসময় সব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নথিভুক্ত করে রেখেছিল তাই নির্যাতনের পক্ষে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। কেনিয়ার মাও মাওদের পক্ষের আইনজীবী অভিযোগ করেছেন বন্দী শিবিরে ওই ব্যক্তিদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল। কেনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় মাও মাও অভ্যুত্থান নামে পরিচিত বিদ্রোহের সময় বন্দীদের ওপর নির্যাতন চালানোর কথা ব্রিটিশ সরকার স্বীকার করেছেন। তবে ব্রিটিশ সরকার যুক্তি দেখিয়েছে যে ঘটনার এতদিন পরে ন্যায় বিচারের জন্য শুনানি গ্রহণ এখন অসম্ভব।

ন্ডনের হাইকোর্ট বলেছে ঘটনার পর দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও ১৯৫০-এর দশকের ওই অভ্যুত্থান সংক্রান্ত মামলা আদালতে নেওয়া যাবে। এই রায়ের ফলে মাও মাও নির্যাতিতদের পক্ষের মামলা পূর্ণ বিচারের জন্য আদালতে পেশ করা যাবে যেটাকে ওই তিন ব্যক্তির আইনজীবীরা একটা 'ঐতিহাসিক' রায় বলে স্বাগত জানিয়েছেন। ''এই ঐতিহাসিক রায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একটা অনুরণন তুলবে এবং আগামী বহু বছর ধরে এই রায়ের পরিণতিতে অন্য মামলার সম্ভাবনার দরজাও খুলে যাবে। '' মন্তব্য করেন একজন আইনজীবী মার্টিন ডে। ব্রিটিশ সরকার যদিও বন্দীদের ওপর নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে কিন্তু তারা দায়িত্ব স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং বলেছে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আবেদন করবে।

ব্রিটিশ সরকার প্রথমদিকে যুক্তি দেখিয়েছিল ১৯৬৩ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর এর দায়িত্ব বর্তায় কেনিয়া প্রজাতন্ত্রের ওপর এবং এর জন্য ব্রিটিশ সরকারের কোনো দায় থাকতে পারে না। কিন্তু ২০১১ সালে হাইকোর্ট রায় দেয় যে ক্ষতিপূরণের দাবিদার তিন কেনীয় - পাওলো মুকা এন্‌জিলি, ওয়াম্বুগা ওয়া নিইনগি এবং জেন মুথনি মারা-র অভিযোগ 'আইনগত দিক দিয়ে যুক্তি-সাপেক্ষ। ' তিনজন কেনিয় নাগরিকের পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন বিদ্রোহের সময় বন্দী শিবিরে নির্যাতনের অংশ হিসাবে মিঃ এন্‌জিলির পুরুষাঙ্গ নষ্ট করে দেওয়া হয়, মিঃ নিইনগিকে প্রচন্ডভাবে মারধোর করা হয় এবং মিসেস মারার ওপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতন চালানো হয়। চতুর্থ অভিযোগকারী এন্‌দিকু মুত্‌ওয়াইয়া মুতুয়া এবছরের গোড়ার দিকে মারা যান। ২০১১-য় হাইকোর্টের ওই রায়ের পর সরকার যুক্তি দেখায় আইনগত বিচারের জন্য অভিযোগ দায়ের করার সময় পার হয়ে গেছে এবং সেই যুক্তি নিয়ে ব্রিটিশ সরকার জুলাই মাসে হাইকোর্টে ফেরত যাবার পর আজ হাইকোর্ট সরকারের যুক্তি নাকচ করে এই রায় দিল।

সুত্রঃ বিবিসি বাংলা এই ঘটনাগুলো এটাই প্রমাণ করে যে যুদ্ধপরাধ কখনও তামাদি হয় না। ব্রিটেন আর পাকিস্তান এক নয়, তাই পাকিস্তানের আদালতের কাছ থেকে এ ধরণের বিচার আশা করাটাও বোকামি। তবে বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ যদি সত্যিই বিচারের ব্যাপারে আন্তরিক হয় তাহলে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি প্রদান করা সম্ভব হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।