আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জোড়া ঝর্ণা

এক সময় বই ছিল আমার নিত্য সঙ্গী , অনেক রাত জেগে বালিশ নিয়ে উপুর হয়ে বই পড়তে পড়তে বুক ব্যাথা হয়ে যেত । পড়া শেষ হতো না । আজো বইয়ের কথা মনে হলে আমার বুকে ব্যাথা হয়, তাদের মলাটে ধুলোর আস্তর জমেছে বলে । বইয়ের পোকা থেকে এখন আমি ইন্টারনেটের পোকা । ঝর্ণা! ঝর্ণা! সুন্দরী ঝর্ণা! তরলিত চন্দ্রিকা! চন্দন-বর্ণা!-- জোড়া ঝর্ণা, যার স্থানীয় নাম ক্লাবং, ইহা ঠিক এমনি সুন্দরী ঝর্ণা ।

কেওকারাডাং এর চুড়া পেরিয়ে সামনে পরবে পাসিং পাড়া, পাসিং পাড়া থেকে আকাবাঁকা বিপদ জনক খাড়া পাহাড় বেয়ে প্রায় দুই ঘন্টার পথ হাটলে পাহাড়ীদের গ্রাম সুংসাং পাড়া । সুংসাং পাড়া থেকে জোড়া ঝর্ণা আরো ঘন্টা খানেকের দূর্গম পথ । এই দূর্গম পথকে আরো দূর্গম করে তুলেছে বৃষ্টি আর পাহাড়ি জোঁক । সুংসাং পাড়ার লোকারণ্যহীন গহীন সবুজ পাহাড়ের কোল বেয়ে চোখ ধাঁধাঁনো সৌন্দর্য্য নিয়ে পাশাপাশি নেমে এসেছে দু'টি ঝর্ণা । বর্ষাকাল বলে ওরা এখন পুরো যৌনবতী ।

পাহাড়, সবুজ আর ঝর্ণার অপূর্ব মিলন মেলা, এক কথায় নৈসর্গ । এখানে এসে পথ কষ্ট, জোঁকের কামড় আর শারীরিক অবসাদ মূহুর্তেই ভুলে গিয়ে আপনি হারিয়ে যাবেন অন্য এক ভুবনে । তবে হ্যাঁ বর্ষাকালের এই রূপ কিন্তু অন্য সময় পাবেন না । এটা পাসিং পাড়া, এখানেই আমরা একটা রাত্রী অবস্থান করেছিলাম । সকালে ঘুম থেকে উঠেই পাসিং পাড়া পাস হয়ে আমরা ছুটলাম জোড়া ঝর্ণার উদ্দেশ্যে ।

ওনারা ও সকালে উঠে লেফ-রাইটে ব্যস্ত হয়ে পড়ল, ওনাদের নিয়ে আর পাসিং পাড়া নিয়ে একটা মজার গল্প আছে সেটা অন্য কোনদিন বলব । পাসিং পাড়া থেকে বের হলেই সামনে পড়বে এমন অবারিত সবুজ আর সবুজ । এক সময় এমন ঝোপ জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যেতে হবে, যার কারণে আপনি জোঁকের কামড় থেকে বাঁচার কোন সুযোগই পাবেন না, দুই পাশের ধারালো পাতাগুলো আপনার শরীরে জ্বালা ধরিয়ে দেবে এমনকি রক্তাক্ত হতে পারেন । আর ঝিরি পথের এমন শ্যওলা জমা পিচ্ছিল পাথরগুলোতে সাবধানে যদি পা না ফেলেন তাহলে ঠ্যাং ভাঙ্গার সমূহ সম্ভাবনা ও রয়েছেই । একপাশে খাড়া ঢাল বিশিষ্ট বিপদ জনক সুড়ঙ্গ পথ বিশেষ ।

সামনে যারা ছিল তারা সুড়ঙ্গ পথে হারিয়ে গেছে, এবার আমাকে ও হারাতে হবে । সামন আবারো ঝোপ-ঝাড়ের সুরঙ্গ ধরে খাড়াভাবে নেমে যাওয়া শেষ পথটুকু, এটুকু পার হতে পারলেই আমাদের কাঙ্খিত লক্ষে পৌছে যাব । এখান থেকেই ঝর্ণার মধুর শব্দ আপনাকে শিহরিত করবে । ঐ তো আমাদের কাংখিত লক্ষ্য....... আপাত দৃষ্টিতে ঝর্ণাটার উচ্চতা কম মনে হয়, কিন্তু বাস্তবে তা না, ঝর্ণার একেবারে কোল ঘেষে দাড়ানো আমাদের তিনজন সঙ্গীকে দেখলেই তা বুঝতে পারবেন । সৌম্য ভাই আর আমি ।

আমাদের গাইড আর টিমের আরো কয়েকজন । এই ট্যুরটায় গিয়েছিলাম ভ্রমণ বাংলাদেশের সৌজন্যে ..........  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।