আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রামুর ঘটনা সাম্প্রদায়িক নয় রাজনৈতিক

my country creat me a ginipig রামুর ঘটনা সাম্প্রদায়িক নয় রাজনৈতিক মেহেদী হাসান পলাশ গত ২৯ নভেম্বর ফেসবুকে পবিত্র কুরআন ও রাসুল (সা.) কে অবমাননা করে ছবি ট্যাগ করার প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় পুলিশ, মুসলিম ও বৌদ্ধ ধর্মামলম্বীদের সৃষ্ট সংঘর্ষে উভয়পক্ষে পঁচিশ ব্যাক্তি আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশের গুলিতেও আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি বৌদ্ধ মন্দির ভাঙচুর ভস্মীভূত হয়েছে। ঘটনায় প্রকাশ উত্তম বড়ুয়া নামে এক তরুণের ফেসবুকে পবিত্র কুরআন ও রসুল (সা.) কে অবমাননাকর ছবি ট্যাগ করায় স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকেরা বৌদ্ধ বসতি ও উপাসনা কেন্দ্রে হামলা করে। একটি পত্রিকা জানিয়েছে, উত্তমের ফেসবুকের ফটো আলবামে প্রায় ৫০টি মতো ইসলাম অবমাননাকর ছবি পাওয়া গেছে।

হতে পারে উত্তম বড়ুয়া ইসলাম অবমাননাকারী গ্রুপের সাথে লিঙ্কড্ কিম্বা কেউ পরিকল্পিতভাবে তাকে এই কাজে জড়িত করেছে। উত্তম বড়ুয়াকে গ্রেফতার করলেই একমাত্র এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে উত্তম বড়ুয়া নিখোঁজ। পুলিশ কেবল তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। কাজেই গুম আতঙ্কে ঘুমহীন দেশে প্রকৃত সত্য প্রকাশে উত্তম বড়ুয়া আর কোনো দিন প্রকাশ্যে আসবে কিনা সে প্রশ্নের উত্তর কেবল ভবিষ্যতই দিতে পারবে।

ঘটনার পর থেকেই বাংলাদেশের অস্বাভাবিক রাজনৈতিক রেওয়াজ অনুযায়ী সরকার বিরোধী দলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছে এবং বিরোধী দল তার বিপরীত। কিন্তু সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিগণ ধারাবাহিকভাবে বলছেন এ ঘটনার পেছনে বিএনপি, জামায়াত, মৌলবাদী, জঙ্গী, রোহিঙ্গা জড়িত। দেশবাসীর প্রশ্ন সরকার যদি নিশ্চিত থাকে যে, এ ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তাহলে তাদের গ্রেফতার না করে মিডিয়া হাইপ সৃষ্টি করতে চাইছে কেন? সরকার ইতোমধ্যে প্রায় দুই শত সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার কারেছে কিন্তু তাদের কাউকেই বিএনপি, মৌলবাদী, জঙ্গী, রোহিঙ্গা প্রমাণ করতে পারেনি। কিন্তু গত ২ অক্টোবরের প্রথম আলোতে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, “স্থানীয় সূত্র জানয়িছে, মন্দিরে হামলার আগে আয়োজতি একটি সমাবেশে আওয়ামী লীগরে স্থানীয় নতোরা বক্তব্য দনে। তাঁদরে উপস্থতিতিইে উপাসনালয়ে হামলা হয়।

... আকবর আলী নামরে এক গ্রামবাসী জানান, এর( ফেসবুক ঘটনার ) প্রতবিাদে রাত সাড়ে নয়টার দিকে ছাত্রলীগরে নতো সাদ্দাম হোসনে ও মৌলভি হাসানরে নতেৃত্বে ৫০-৬০ জন লোক মছিলি বরে কর। মিছিল শেষে একটি সমাবশে হয়। এতে রামু নাগরকি উন্নয়ন কমটিরি সভাপতি ও ছাত্রলীগরে সাবকে নতো নুরুল ইসলাম ওরফে সলেমি ও মৎস্যজীবী লীগরে নতো আনসারুল হক বক্তব্য দনে। সমাবশেরে খবর পেয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা (ওসি)নজবিুল ইসলাম সেখানে যান। তিনি বক্তব্য দেন।

সমাবেশে দুই-আড়াই শ লোক জড়ো হয়। সমাবশেরে ব্যাপারে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলনে, সমাবশে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার জন্য বলছেনে। তবে রাত ১০টার দিকে তিনি লক্ষ করনে, হঠাৎ করে বভিন্নি যানবাহনে করে শত শত লোক রামুর দিকে আসছে। ওই বহরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও ছিলেন। এভাবে রাত ১২টা র্পযন্ত সেখানে শত শত লোক জড়ো হয়।

এরপর তারা হামলা শুরু করে। রাত সাড়ে তনিটা র্পযন্ত এ হামলা চলে। হামলায় আওয়ামী লীগের নেতারা ছিলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছলি না। তবে অনেক লোক জড়ো হয়ছেলি। তিনি বলনে, বএিনপরি সাংসদ লুৎফর রহমান কাজলও আসেন।

তিনি লোকজনকে শান্ত করার চষ্টো করেন। সূত্র জানায়, সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরোয়ার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুশরাত জাহান মুন্নী উপস্থতি ছিলেন। সমাবেশের ব্যাপারে জানতে চাইলে সোহেল বলেন, ‘আমি লোকজনকে ঠেকানোর চেষ্টা করছলিাম’। ” প্রথম আলো এই রিপোর্টে গোয়েন্দা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে রোহিঙ্গাদের দায়ী করেছে। এ অভিযোগটি সরকারের মৌলবাদীদের দায়ী করার অভিযোগের সাথে মিলে যায়।

কিন্তু একটি বড় এবং মৌলিক প্রশ্ন এখানে না করে পারছি না। কয়েকমাস আগে কক্সবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত সংলগ্ন বার্মার আরাকান রাজ্যে মুসলমানদের উপর যে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ও অত্যাচার চলেছে তার খুবই সামান্য অংশ বিশ্ব মিডিয়াতে ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু সোস্যাল মিডিয়া, ব্লগ, ইউটিউবের মাধ্যমে যেটুকু জানাগেছে, তাতে সেখানে শত শত মুসলিম নিহত, আহত, ধর্ষিতা হয়েছে। তাদের বাড়ী ঘর, ফসল, ক্ষেতখামার, মসজিদ ভস্মীভূত হয়েছে। আহত, নির্যাতিত পুরুষ, নারী ও শিশুরা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করেছে।

তাদের অনেকের আত্মীয় পরিজনের বাস রয়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন অঞ্চলে ও শরণার্থী ক্যাম্পে। আহত, নির্যাতিত, লাঞ্ছিত, সেই মুসলিম ভাই, বোন, স্বজনদের দেখে যারা সংহিস হয়নি তারা কেন কুআরআন অবমাননার অনলাইন ছবিতে এতোটা সহিংস হয়ে উঠবে? বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় না দিলেও চিকিৎসা, খাদ্য, বস্ত্র দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। তাতেও ঐ অঞ্চলের মুসলমানরা সহিংস না হয়ে সরকারী উদ্যোগে সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে। সেসময় সারা দেশে আরাকানের নির্যাতিত মুসলমানদের সমর্থনে অনেক কর্মসূচী পালিত হয়েছে। সেসময়ও ফেসবুকসহ সোস্যাল মিডিয়াগুলোতে এ নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে।

কিন্তু তাতে কোনো সংহিসতার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমনকি বাংলাদেশের কোনো নিভৃত প্রান্তেও একজন বৌদ্ধ বলেননি যে, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। রসুল (সা.) কে চরম অবমাননাকারী স্যাম নকৌলার চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে রাজধানীতে মাসব্যাপী লক্ষ লক্ষ মুসলমান বিক্ষোভ, মিছিল করেছে; এখনো করছে। কিন্তু একটি মিছিলও কোনো গির্জার দিকে যায়নি। ঢাকা শহরের কোনো খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বলেননি তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বাংলাদেশের এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিশ্বে নজিরবিহীন। প্যাস্টর টোরী জোন্স যখন গ্রাউন্ড জিরোতে কুরআন পুড়িয়েছে, ইরাকে টয়লেটে ফ্লাস করা হয়েছে কুরআন শরীফ, আফগানিস্তানে অবমাননা হয়েছে, এসব ঘটনার প্রতিবাদে সোস্যাল সাইটগুলোতে ইহুদী পণ্য বয়কটের জন্য বিপুল প্রচার চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মুসলমান কেএফসি রেস্টুরেন্টের সামনে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কিন্তু সে দিকে ফিরেও তাকায়নি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির এই বিরল দৃষ্টান্ত বিশ্বে আর কোথায় পাওয়া যাবে না। প্রশ্ন, তাহলে রামু ও পটিয়াতে কেন এমন জঘন্য ঘটনা ঘটতে পারলো? এরই মধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমান সরকার বিশ্বব্যাংক, ড. ইউনুস ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে পাশ্চাত্য শক্তির সাথে বিরোধে জড়িয়ে প্রায় বন্ধুত্বহীন হয়ে পড়েছে।

দুর্নীতি, সুশাসনে ব্যর্থতা, রাজনৈতিক সঙ্কট প্রভৃতিতে জড়িয়ে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ চরম অনিশ্চিয়তার মধ্যে আছে। সেই মুহুর্তে আন্তর্জাতিক বন্ধু বৃদ্ধি ও সমর্থন লাভের জন্য সরকারের ভেতরের কোনো অংশ এই ঘটনার ইন্ধনদাতা হতে পারে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্কে অবস্থান এবং মার্কিন বিশেষ দুতের বাংলাদেশে আগমনের ঘটনার সাথেও এর কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। বিশেষ করে ২০০১ সালের নির্বাচনের আগেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপক অভিযোগ ওঠানো হয়েছিল। ২০০১ সালের শেষাংশ ও ২০০২ সাল পুরোটা সময় জুড়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে চারদলীয় জোট সরকারকে একবারে কোণঠাসা করে ফেলেছিল।

দেশে বিদেশে বহু সেমিনার, কনভেনশন, অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে দুই তৃতীয়ংশ মেজরিটিতে নির্বাচিত সরকারের মধু চন্দ্রিমা সময়কাল নরক যন্ত্রনায় পরিণত করেছিল। কিন্তু প্রকৃত সত্য ছিলো সেসময় বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি। হয়েছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ পরায়ণতার ঘটনা। আমি সাংবাদিক হিসাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ১৩/১৪ টি জেলা সরেজমিন পরিদর্শন করে শতাধিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছি। ঘটনার শিকার বিভিন্ন ব্যাক্তির কথার অডিও, ভিডিও ধারণ করেছি।

এ নিয়ে আমার দুটি বই ‘সংখ্যালঘু রাজনীতি’ ও ‘দি মাইনোরিটি কার্ড’ প্রকাশিত হয়েছে। একটি ডকুমেন্টারী ফিল্ম ‘গ্লিমসেস অভ ট্রুথ’ তৈরী করেছি। তাতে এ কথা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী দুঃশাসনে অতিষ্ঠ মানুষ নির্বাচনের আগে ও পরে যখন তারা ক্ষমতা ফিরে পেয়েছে অত্যাচারীর উপর প্রতিশোধ নিয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক বিবেচনায় একমাত্র বিবেচ্য ছিল, সাম্প্রদায়িকতা নয়। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চাইনা।

তবে অকাট্য প্রমাণ হিসাবে এটা বলা যেতে পারে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ঘটনার বিষয়ে যে তদন্ত কমিশন করেছে তার একটি তদন্ত রিপোর্ট তারা সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। গণমাধ্যমে দেখেছি, সেই রিপোর্টেও বলা হয়েছে, ২০০১-২০০২ সালের ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের’ ঘটনা ছিল রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক নয়। দুর্ভাগ্য বিএনপি’র। তারা মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে কিন্তু সত্য প্রমাণের কোনো চেষ্টা করেনি। ক্ষমতায় বসে ক্ষমতার মৌতাঁত উপভোগে মত্ত হয়ে উঠেছিল।

পরিণতি চিন্তা করেনি। এখন সরকার একদিকে সেই ঘটনার বিচার করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন, অন্যদিকে পুরাতন অস্ত্র দিয়ে আবার তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর দামামা বাজানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারকে একটি অনুরোধ করা যেতে পারে, রাজনীতি অবশ্যই একটি সুপার গেইম। কিন্তু ফায়ার গেইম চুড়ান্ত পরিণতিতে কারো জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। পাকিস্তান যেমন জঙ্গী ইস্যু নিয়ে ফায়ার গেইম খেলতে গিয়ে আজ গৃহদাহে পুড়ছে নিজের শরীর।

বাংলাদেশের জন্যও এমন গেইম কারো কাম্য হতে পারে না। বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভাইদের কাছে সবিনয়ে একটি কথা বলা যায়, বাংলাদেশের মুসলিম-বৌদ্ধ সম্প্রীতির ইতিহাস সুপ্রাচীন। বৌদ্ধ অধ্যুষিত পাল রাজবংশের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদী শক্তি বৌদ্ধদের উপর যে চরম অত্যাচার চালিয়েছিল ইতিহাসে তা মাৎস্যনায় হিসাবে কুখ্যাত। সেই বিভিষীকা থেকে বৌদ্ধদের উদ্ধার করতেই বাংলায় মুসলিম শাসকদের আগমন। সেসময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা মুসলিম শাসনের আগমনকে স্বাগত জানিয়েছিল।

তারপর থেকে বাংলাদেশের আটশত বছর ধরে মুসলিম ও বৌদ্ধ ‘ভাই ভাই-এক ঠাই’ রূপে বসবাস করে আসছে। কোনো বিছিন্ন ঘটনা বা চক্রান্ত যেন সম্প্রীতির এই মেলবন্ধনে ফাটল ধরাতে না পারে সেদিকে মুসলিম-বৌদ্ধসহ বাংলাদেশের সকল নাগরিকের খেয়াল রাখা জরুরী। সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব; ৩ অক্টোবর, ২০১২ ইং  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.