আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারের আরেকটি গুরত্বপূর্ণ উদ্যোগঃ১৫০ বিদেশীকে সম্মাননা জানানো হবে ২০শে অক্টোবর ও ১৭ই ডিসেম্বর

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বর্বর পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নিষ্ঠুরতার শিকার বাঙালিদের পক্ষে নিজ দেশে এবং বিশ্বব্যাপী বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সকলকেই পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা জানানো হবে। আগামী ২০শে অক্টোবর ও বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ই ডিসেম্বর এমন ১৫০ জনকে দেয়া হবে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা। এদের মধ্যে ৪৫ জন গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর সম্মাননা পদক নেয়ার জন্য আমন্ত্রিত ছিলেন। তারা সে সময় আসতে পারেননি। এবার তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপালসহ বারটি দেশের নতুন ১০৫ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নামের তালিকা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা হবে রৌপ্য নির্মিত ও দেড়ভরি স্বর্ণের প্রলেপ দেয়া সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধখচিত ক্রেস্ট। বিদেশী অতিথিদের যাতায়াতে বিমান ভাড়া, ঢাকায় আবাসিক ব্যবস্থা, খাবারসহ মোট বার কোটি টাকা ব্যয় হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ উপলক্ষে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে পদক তুলে দেবেন। বিদেশীর মধ্যে রয়েছেন বিদেশী রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, সমরনায়ক, কূটনীতিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব। প্রথম দফায় ৮২ জন বিদেশী, তাদের উত্তরাধিকার সম্মাননা পদক গ্রহণ করতে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এ বছর ২৭শে মার্চ সম্মাননা দেয়া হয় ৮ জনকে। একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনীর গণহত্যা, নির্মম নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলেছিলেন তারা।

বাংলাদেশের চরম বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন এমন ৬১৫ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা জানানোর মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা জানানোর কর্মসূচি বর্তমান সরকারই প্রথম নেয়। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা জানানোর মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। বাংলাদেশ ও বাঙালির পক্ষে অসামান্য বলিষ্ঠ ও সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। বিশ্বের বাইশটি দেশের ৬১৫ জন ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেয়ার জন্য তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এদেরকে সম্মাননা জানানো হবে।

এই তালিকায় রয়েছেন ভারতের ৩১৭ জন, সোভিয়েত ইউনিয়নের ৯০ জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ জন, যুক্তরাজ্যের ৪০ জন, পাকিস্তানের ২১ জন। অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, কানাডা, কিউবা, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, মালয়েশিয়া, জাপান, যুগোস্লাভিয়া, ভেনিজুয়েলা, সুইডেন, আর্জেন্টিনা, ডেনমার্ক, জাতিসংঘের সবগুলো সংস্থা, বিবিসি, আইসিআরসি, আকাশবাণী, অক্সফামসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক, মানবতাবাদী সংস্থা। ভারতের সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, জগজীবন রাম, নৃপেন চক্রবর্তী, ডিপি ধর, ফখরুদ্দিন আলী আহমদ, অটল বিহারী বাজপেয়ী, প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সী, পিএম হাসকার, ফিল্ড মার্শাল মানেকশ, জ্যোতি বসু, জয় প্রকাশ নারায়ণ, ড. ত্রিসুলা বেন, বৈদ্যনাথ মজুমদার, শচীন্দ্র লাল সিং, সরদার শরণ সিং, কৃষ্ণ মেনন, প্রণব মুখার্জী, সিং, ড. কিরণ সিং, আই কে গুজরাল, নন্দিনী সভাপতি, অজয় মুখার্জি, বিজয় সিং নাহার, ইন্দ্রজিত গুপ্ত, সমরগুহ, চিত্তবসু, কৃষ্ণপদ ঘোষ, ইলা মিত্র, নেপাল নাগ, নিখিল চক্রবর্তী, নিবেদিতা নাগ, মনসুর হাবিব, অজিত পাঁজা, প্রতুল লাহিড়ী, সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, পিএম ধর, ড. অশোক মিত্র, গায়ত্রী দেবী, মইনুল হক চৌধুরী, শফী কোরেশী, কল্পনা দত্ত, মঞ্জুরি ঠাকুর, রাজ নারায়ণ, রাজবাহাদুর, গুলজারি লাল নন্দ, কমরেড রাজেশ্বর রাও, লে. জে. জগজিত সিং অরোরা, ব্রিগেডিয়ার পান্ডে, জেনারেল ওবান, লে. জেনারেল জ্যাকব, লে. জে. থাপান, জেনারেল লছমনসিং, জেনারেল জগজিতসিং, জেনারেল নাগরা, জেনারেল গঞ্জেলভাস, জেনারেল রায়না, জেনারেল শঙ্কর রায় চৌধুরী, এয়ার মার্শাল দিওয়ান, শহীদ ল্যান্স নায়েক এলবার্ট এক্কা, পরম বীর চক্র, এন কে এস সিখন পরম বীর চক্র, ব্রিগেডিয়ার গোলক মজুমদার। সাংবাদিক অনিল ভট্টাচার্য, দিলীপ মুখার্জী, প্রীতম নন্দী, সুখ রঞ্জন দাসগুপ্ত, মানস ঘোষ, হিরন্ময় কর্মকার, বাসব সরকার, উপেন তরফদার, বরুণ সেনগুপ্ত, সুভাষ চক্রবর্তী, অভীক সরকার। কূটনীতিক সমর সেন, জে এন দীক্ষিত, টিএন কাউল, অশোক রায়, পণ্ডিত রবি শঙ্কর, গোবিন্দ হালদার, ভূপেন হাজারিকা, মকবুল ফিদা হুসেন, দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, চিন্তামণি কর, ঋত্বিক ঘটক, সত্যজিত রায়, গীতা মেহতা, লতা মঙ্গেশকর, সুচিত্রা মিত্র, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, ওয়াহিদা রেহমান, দেবব্রত বিশ্বাস, মান্না দে, সলিল চৌধুরী, অংশুমান রায় চৌধুরী, গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার, অন্নদা শঙ্কর রায়, কাহফি আজমী, শাবানা আজমী, বিষ্ণু দে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, মোহাম্মদ রফি, শামসাদ বেগম, পার্থ ঘোষ, সত্যেন সেন, মাদার তেরেসা, জন হেমটিংস, উতপলা মিত্র, রমেন চন্দ্র, এসআর কুলকারনি, মোহাম্মদ আইয়ুব, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, মৈত্রেয়ী দেবী, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি আবু সাদাত আবুল মাসুদ, অবনী মোহন লাহিড়ী, আলী আকবর খান এদের মধ্যে রয়েছেন।

তালিকাভুক্তদের পর্যায়ক্রমে সম্মাননা জানানো হবে। পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক, তাদের হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন পাকিস্তানেরই মানবতাবাদী, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বন্ধু সিন্ধুর জাতীয়তাবাদী নেতা জি এম সাঈদ, ন্যাপ নেতা খান আবদুল ওয়ালী খান, গাউস বক্স বাজেঞ্জো, বিএম কাট্টি, পখতুন নেতা খান আবদুল গাফফার খান, এয়ার মার্শাল আসগর খান, আসমা জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক হামিদ আখতার, ফয়েজ আহমদ, কবি শেখ আয়াজ, মাস্টার খান গুল, ততকালীন বেলুচিস্তান আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি খান রাইসানী, শেখ মঞ্জুরুল হক, পাক সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগকারী ড. তারেক রহমান। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতন, হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা পালনকারী এই মানবতাবাদীরা সম্মাননা জানানোর তালিকায় রয়েছেন। এ দফায় তাদের কয়েকজনকে সম্মাননা জানানো হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এডওয়ার্ড কেনিডি, সিনেটর এডমন্ড মাল্কি, ফ্রাঙ্ক চার্চ, উইলিয়াম সেক্লাবি, ফ্রেড হ্যারিসন, চার্লস পাসী ও ক্লিয়োর্ড কেস, কংগ্রেসম্যান কর্নেলিয়াস গালানার, হেনরি হ্যালমান ও কংগ্রেসম্যান ওয়ালিভি গায়িকা জনবেজ, কবি অ্যালেন গিনবার্গ, চলচ্চিত্রকার লেখার শেভন, চিত্রশিল্পী ডেভিড বার্নেট, প্রফেসর রবার্ট এইচ রাইনস, প্রফেসর এডওয়ার্ড সি ডিমক, প্রফেসর রোনাল্ড ইনডেন, ডা. জোসেফ গাস্ট, ফাদার আর ডব্লিউ টিম, রবার্ট পেইন, উইলিয়াম মেইন মাইকেল গাটনার, জোন ডাইন, ডেল ডিহান এই তালিকায় রয়েছেন। অতএব এই থেকে প্রমাণিত যে সরকার মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় বিশ্বাসী। একমাত্র সরকার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণের জন্য আজীবন কাজ করে যাচ্ছেন অন্য কোন দল এদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখান নি তেমন একটা। অতএব, মুক্তিযোদ্ধা চেতনার মাধ্যমে আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.