আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপরিচিতা

সকল সমস্যারই একটি নিজস্ব সমাধান আছে, আমাদের শুধু তা খুঁজে নিয়ে সমাধান করতে হয়। তাই কোন সমস্যাই সমস্যা নয়। উপল চাকুরীজীবি ২ বছর হল সে ঢাকা এসেছে। মূলত চাকুরীর জন্যই তার ঢাকায় থাকা। কয়েকজন মিলে ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকে।

কাজকে সে খুবই ভালবাসে, বলতে গেলে সে সবসময়ই কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। তাই তার বন্ধু, রুমমেটরা খুবই বিরক্ত। অবশ্য ছোটবেলা থেকেই সে এমনই, সবসময় বিভিন্ন ধরনের কাজ নিয়ে সে ব্যাস্ত। অনেক সময় কাজের জন্য রাতের পর রাত জেগে থাকে। ও! কাজ ছাড়া সে আরো একটা জিনিস সে পছন্দ করে তা হল ঘুরে বেড়ান, তাই ছুটির দিন সে আরো বেশী ব্যাস্ত।

সে একাই ছোট একটি ক্যামেরা নিয়ে ঢাকা এবং তার আশেপাশের এলাকা গুলোতে ঘুরে বেড়ায়। এভাবেই তার দিনগুলো কেটে যেতে থাকে। কিন্তু হঠাত একদিন ফেসবুকের একটি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট তার এই প্রাত্যহিক জীবনধারায় কেমন একটা পরিবর্তন নিয়ে এল। এখানে বলেরাখা ভাল উপল মোটামুটি ভালই ফেসবুক ব্যবহার করে, তবে খুব পরিচিত না হলে সে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করেনা, আর যদি ফেইক ছবি হয় তবে তো নাই। তাই তার একাউন্টে অনেক রিকোয়েস্ট পরে আছে।

সে একদিন রিকোয়েস্ট গুল দেখছে দেখতে দেখতে একটি নামে এসে চোখ আটকে গেল “উপমা”, অনেক চিন্তা করেও এই নামের পরিচিত কাউকে মেলাতে পেরলো না আবার ছবিটাও আসল নয়। উপলের হিসাব অনুসারে রিকোয়েস্টটি বাদ পরার কথা, কিন্তু সে রিকোয়েস্টটা বাদ না দিয়ে রেখেদিল। কিছু দিন পর দেখল মেয়েটি তার টাইমলাইন সাবস্ক্রাইভ করেছে, এতে উপলের কৌতূহল আরো বেড়ে যায়। এর পর কখন কিভাবে যে মেয়েটির ফ্র্যান্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করেছে সে নিজেও জানেনা। হঠাত একদিন উপমা ফেসবুকে মেসেজ দেয় কেমন আছ বন্ধু? এই মেসেজ পাওয়ার পর উপল আবার চিন্তায় পরল কি করা যায়।

অবশেষে সে রিপ্লইয় করে “আমি ভাল আছি কিন্তু আপনি কে? আমি মনেহয় আপনাকে চিনি না”। সাথে সাথে প্রতি উত্তর “আপনি চাইলেই আমাকে জানতে পারেন”। এভাবেই এক অপরিচিতার (উপমা) সাথে উপলের কথা বলা শুরু। মেয়েটি জানায় অন্যের ফ্র্যান্ড লিস্টে উপলের নাম দেখে পরিচিত মনে হয় আর সাথে সাথে মেয়েটির ফ্র্যান্ড রিকোয়েস্ট করে। এভাবে দুজনের মধ্যে চ্যাট কথা শুরু হয়।

যত দিন যায় তত কথার পরিমান বারতে থাকে, এটা বারতে বারতে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে কখন রাত গিয়ে ভোর হয় তাওসে বলতে পারেনা। মাঝে মাঝে সে ভাবে কার সাথে কথা বলছে এবং কেন কথা বলছে উপল তা নিজেও বুঝতে পারেনা। তবে প্রতিদিন সে একি সময় চেট করার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ধীরে ধীরে উপমার সাথে কথা বলাটা তার রুটিন এ পরিনিত হতে থাকে। এভাবে কথা বলতে বলতে তারা একজন আরেক জনের সম্পর্কে জানতে থাকে।

প্রতিদিন রাতে কথা বলতে বলতে এমন হয় কখন যে মাঝ রাত পার হয়ে যায় কেউ বলতে পারেনা। রাতের পর রাত পার হতে থাকে, একদিন উপল পিছন ফিরে দেখতে চাইল কিভাবে শুরু করেছিল সে দেখল ১৫ রাত ২৯৫৬ টি মেসেজ তারা আদান প্রদান করেছে। সে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিল না, মাত্র ২৯৫৬টি মেসেজ আর একজন অন্যজনের ...। কিন্তু কেউ কাউকে কখন দেখেনি। ভবিষ্যতে কখনো দেখা হবে কিনা কেউ জানে না।

এভাবে আর কতদিন চলবে তাও কেউ জানে না। আজ উপল শুধু ভাবছে প্রথম দিন সে যা ভেবেছিল তাই কি সত্যি হতে চলল......? আর মনে মনে ভাবল চললে চলুক..। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।