আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজকের আর্টিকেল

ডায়াবেটিস ও গর্ভধারণ সাদিয়া ফাতেমা কবীর আমাদের দেশে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণের কারণগুলোর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, অধিক বয়সে সন্তান গ্রহণের মতোই একটি অন্যতম কারণ হলো ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীরা গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর গর্ভধারণের অন্তত তিন-ছয় মাস আগে থেকেই রক্তে গ্লুকোজ তথা চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করুন। চিকিত্সকের পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী রক্তে নিয়মিত গ্লুকোজ তথা চিনির পরিমাণ পরীক্ষা করুন। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের পরিচিত কিছু সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সমস্যা হলো রক্তে চিনির মাত্রার অকস্মাত্ হ্রাস; যাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয়ে থাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এটি খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

খাবারের পরিমাণ অল্প হলে, সময়মতো না খেলে, বেশি শারীরিক পরিশ্রম করলে বা ইনসুলিন গ্রহণকারীর ক্ষেত্রে ইনসুলিনের মাত্রা বেশি হলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। হাতের কাছে সবসময় কিছু চিনিযুক্ত খাবার যেমন মিষ্টি বিস্কুট, লজেন্স, জুস বা শরবত রাখুন। একইভাবে খাবারে অনিয়ম, অধিক খাদ্যগ্রহণ, কম শারীরিক পরিশ্রম ইত্যাদি কারণে রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। একে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় হাইপারগ্লাইসেমিয়া। এ ধরনের অবস্থায় সাধারণত কিছু শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয় যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব, অধিক তৃষ্ণা পাওয়া, ওজন দ্রুত কমে যাওয়া ইত্যাদি।

এমন উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হন। মনে রাখবেন রক্তে চিনির পরিমাণ বেশি থাকলে তা যেমন আপনার জন্য বিপজ্জনক, তেমনি গর্ভস্থ শিশুর অঙ্গহানি, জন্মগত শারীরিক ত্রুটি, অতিরিক্ত কম-বেশি ওজনের শিশু, প্রি-টার্ম শিশু, গর্ভপাতসহ নানা রকম জটিলতার কারণ হতে পারে এ বাড়তি চিনিটুকু। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন— চোখের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, হূদযন্ত্র ও রক্তনালীর সমস্যা, স্নায়ুুতন্ত্রের সমস্যা, কিডনিসংক্রান্ত জটিলতা, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা ইত্যাদি। লক্ষ্য রাখুন আপনার খাদ্যতালিকা তথা সর্বোপরি খাদ্যাভ্যাসের প্রতি। খাদ্যতালিকাটি সুপরিকল্পিত ও সুনিয়ন্ত্রিত হওয়া আবশ্যক, যা আপনার ও আপনার গর্ভস্থ শিশুর চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করবে এবং আপনার ডায়াবেটিসকেও নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

গ্রহণ করুন প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় ভিটামিন ও মিনারেল; যেমন— আয়রন, ফলিক এসিড, ক্যালসিয়াম প্রভৃতি। খাদ্যতালিকা যদি আপনার ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদাকে পূরণ করতে না পারে সে ক্ষেত্রে এদের সম্পূরক গ্রহণ করুন। তবে যেকোনো ধরনের সম্পূরক গ্রহণের আগে অবশ্যই যে চিকিত্সকের তত্ত্বাবধানে আছেন তার পরামর্শ নিন। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ও পরিমিত শারীরিক পরিশ্রম একদিকে যেমন আপনার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে তেমনি আপনার রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাকেও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এটি আপনার পেশী, অস্থি ও হূদযন্ত্রকেও সুস্থ রাখবে।

তবে শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস না থাকে, তবে অবশ্যই হঠাত্ করে অভ্যাসের চেষ্টায় যাবেন না। এতে করে আপনি হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। এমন ক্ষেত্রে অল্প শ্রমের কিছু দিয়ে, যেমন— হাঁটা দিয়ে শুরু করতে পারেন। গর্ভকালীন সময়টায় ওষুধ সেবনের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। আপনি যদি ডায়াবেটিসের জন্য কোনো ওষুধ বা ইনজেকশন গ্রহণ করে থাকেন তবে আপনার গর্ভকালীন সময়ে সেগুলোয় পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

তাই অবশ্যই এ ব্যাপারটিতে সচেতনভাবে অভিজ্ঞ পরামর্শ নিন। যথেচ্ছ ওষুধ গ্রহণ করবেন না। অ্যালকোহল, ধূমপান ইত্যাদির অভ্যাস থাকলে তা বাদ দেয়ার সঠিক সময় এখনই। যেকোনো ধরনের শারীরিক সমস্যায় অবহেলা না করে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হন। লিঙ্কঃ Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।